সংক্ষিপ্ত
কন্যা সন্তানের জন্ম দেওয়ার অপরাধে স্ত্রীকে তিন তালাক দেবার অভিযোগ উঠলো রাজস্থান জয়পুরের বাসিন্দা আমানুল্লাহর বিরুদ্ধে। সাহানাহাজ নামের ওই মহিলা এখন দ্বারস্থ আইনি ব্যবস্থার
কন্যা সন্তানের জন্ম দেওয়ার অপরাধে স্ত্রীকে তিন তালাক দেবার অভিযোগ উঠলো রাজস্থান জয়পুরের বাসিন্দা আমানুল্লাহর বিরুদ্ধে। সাহানাহাজ নামের ওই মহিলা জানান যে ২০২০ সালে আমানুল্লাহর সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল তার। বিয়ের পর থেকেই সন্তান নেওয়ার জন্য প্রায়ই শ্বশুরবাড়ি থেকে চাপ সৃষ্টি করা হতো তার উপর।২০২১ এর ডিসেম্বরে তিনি প্রথম জানতে পারেন যে তিনি সন্তানসম্ভবা। এই খুশির খবরে আনন্দের জোয়ার বয়ে যায় তার পরিবারে। কিন্তু সেই জোয়ার মলিন হয়ে গেলো সন্তান জন্ম হবার দিন। কন্যা সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য তাকে তৎক্ষণাৎ তিন তালাক দেয় তার স্বামী।
সাহানাহাজ বলেন , " সন্তান জন্ম নেওয়ার পর যখন আমার স্বামী জানতে পারলেন যে আমি কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছি , তৎক্ষণাৎ তিনি আমাকে তালাক দেন। তিনি বলেন মেয়েরা বংশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেনা বরং ছেলেরা পারে। তাই কন্যা সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য এটাই আমার উপহার। "
এর আগেও নির্যাতনের অভিযোগে সাহানাহাজ তার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর দায়ের করেছিল । পুলিশের মধ্যস্ততায় সেবার সব অশান্তি ভুলে তিনি তার স্বামীর বাড়িতে ফিরে যাবার সিদ্ধান্ত নেন। শ্বশুরবাড়ির লোকজনও তার প্রতি সঠিক আচরণের প্রতিশ্রুতি দেয় পুলিশের সামনে। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি তারা পালন করেননি।
সাহানাহাজ বলেন ,“অত্যাচারের কারণে এর আগেও আমি আমার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলাম থানায় , কিন্তু সেই অভিযোগের প্রতিক্রিয়াস্বরূপ তারা জানায় যে ভবিষ্যতে তারা আর কোনোদিন আমাকে নির্যাতন করবে না। কিন্তু তারপরও আমার উপর চলে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। এমনকি মেয়ে হবার পর পরিবারের সকল সদস্যদের সামনেই আমার স্বামী আমায় তিন তালাক দেয়। এবং সবার সামনে জানায় যে মেয়ে হবার কারণে তিনি তালাক দিলেন আমায়। "
অবশেষে আইনি ব্যবস্থার দ্বারস্থ হন ওই মহিলা। জয়পুর পুলিশের এএসপি সুনীল কুমার শর্মা বলেছেন, গত ২৯ সে অক্টোবর ওই মহিলা এসে থানায় অভিযোগ দায়ের করে তার স্বামীর নামে। কন্যা সন্তান হওয়ার কারণে ওই মহিলার উপর অমানবিক আচরণ শুরু করে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এমনকি তাকে মারধরও করা হয়। তদন্ত চলছে। আমরা অবিলম্বে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। "
একজন সমাজকর্মীও দাবি করেছেন যে মহিলাটি তার পারিবারিক সমস্যা নিয়ে তার সাথে যোগাযোগ করেছিলেন।নিশাদ হোসেন নামে ওই সমাজসেবী বলেন , " সেহেনাহাজ আগেও আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। আমি ওর স্বামীকে বোঝানোর চেষ্টা করি কিন্তু মনে হয় তা খুব একটা ফলদায়ক হয়নি। দেশে আইনব্যবস্থা আছে এবং আইনি মতেই এইরকম অন্যায়ের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। "
তাত্ক্ষণিক তিন তালাক বা তালাক-ই-বিদাত প্রথা ২০১৯ সাল থেকেই নিষিদ্ধ হয়ে গেছিলো ভারতে। তারপরও এমন ঘটনা কোথাও কোথাও ভাবতে বাধ্য করে আমাদের। " তাহলে কি তিন তালাক হ্রদ হলো শুধু কাগজে কলমেই ? বাস্তবের চিত্রটা থেকে গেলো একইরকম। "