সংক্ষিপ্ত
তালিবানরা আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পরই কান্দাহারে গিয়েছিল মৌলানা মাসুদ আজহার। এর আগেও জইশ-ই-মহম্মদ'কে সহায়তা করেছে তালিবানরা।
অগাস্টের তৃতীয় সপ্তাহে, তালিবানরা আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পরই কান্দাহারে গিয়েছিল পাকিস্তানি সন্ত্রাসবাদী সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদ প্রধান মৌলানা মাসুদ আজহার। ইন্ডিয়া টুডে-তে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমনটাই দাবি করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কান্দাহারে মাসুদ আজহার, তালিবানদের রাজনৈতিক প্রধান মোল্লা আবদুল ঘানি বরাদর-সহ তালিবান নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা করেন। কাশ্মীর উপত্যকায় জইশ-এর সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে তালিবানদের সাহায্য চেয়েছে সে, এমনটাই দাবি করেছে এক সূত্র।
অবশ্য এর আগে, গত ১৫ অগাস্ট তালিবানরা কাবুল দখল করার পর খোলাখুলিই আনন্দ প্রকাশ করেছিল মাসুদ আজহার। পরের দিনই 'মঞ্জিল কি তরফ' নামে একটি নিবন্ধ লিখেছিল জেইএম প্রধান। সেখানে সে আফগানিস্তানে 'মুজাহিদিনদের সাফল্য'এর ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন। 'মার্কিন সমর্থিত আফগানিস্তান সরকারের পতন' কার্যকর করার জন্য তালিবানদের গুণগান করেছিল। এবার সরাসরি তাদের যোগ পাওয়া গেল।
সম্প্রতি তালিবানরা অবশ্য বলেছিল, তারা আফগান ভূখণ্ডকে অন্য কোনও দেশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য ব্যবহার করতে দেবে না। তবে, কাবুল বিমানবন্দরে হামলাই বুঝিয়ে দিয়েছে, তাদের সেই প্রতিশ্রুতি কতটা ঠুনকো। তাছাড়া, শরিয়তি আইন, ইসলামী চরমপন্থা, সুন্নি ইসলামের দেওবন্দি শাখা - বিভিন্ন দিক থেকেই আদর্শগত ভাবে তালিবান এবং জইশ-ই-মহম্মদকে ভাই-ভাই বলা যায়। এর আগে তালিবানদের জইশ-এর সহায়তায় এগিয়ে আসতেও দেখা গিয়েছে।
১৯৯৯ সালে মাসুদ আজহার-কে মুক্ত করার জন্য জইশ ভারতীয় বিমানের ফ্লাইট আইসি ৮১৪-কে অপহরণ করেছিল। যাত্রীদের পণবন্দি করে মাসুদ আজহারের মুক্তির দাবি করা হয়েছিল। কাঠমান্ডু থেকে লখনউ যাওয়ার পথে বিমানটি হাইজ্যাক করে আফগানিস্তানের কান্দাহারে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ক্ষমতায় থাকা তালিবান সরকার বিমানটি কান্দাহারে অবতরণের পরপরই, বিমানটির চারপাশে নিরাপত্তার ঘেরাটোপ তৈরি করে নিশ্চিত করেছিল, মাসুদ আজহারকে ভারত মুক্তি না দিলে যেন পণবন্দিদের কোনওভাবে মুক্ত না করা যায়।
সেই ভাইচারা যে আবার ফিরে আসবে না, তা ভাববার কোনও কারণ এখনও ঘটেনি। কাজেই যদি বরাদর এবং মাসুদ আজহার কথা সত্যিই হয়ে থাকে, তাহলে তা ভারতের জন্য বিপজ্জনক প্রবণতা হিসাবে গন্য করতেই হবে। আফগানিস্তানে তালিবানদের প্রত্যাবর্তনের 'সাইড এফেক্ট' যে জম্মু ও কাশ্মীরে পড়তে চলেছে, সেই সম্ভাবনার কথা সম্প্রতি উল্লেখ করেছেন সিডিএস জেনারেল বিপিন রাওয়াতও।