সংক্ষিপ্ত

সূত্রের খবর এই সুপারিশ অনুসারে কর্নাটকের সিলেবাস থেকে বাদ পড়তে পারে রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘ বা আরএসএসের প্রতিষ্ঠাতা কেশব বলিরাম হেডগেওয়ারের জীবনী।

এনসিইআরটি'র সিলেবাস থেকে বাদ পড়ছে ইতিহাস ও বিজ্ঞানের একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পর্যায় সারণি, ডারুইনবাদ থেকে শুরু করে ইতিহাসে মুঘল শাসন, গণতন্ত্রের ধারণার মতো অধ্যায় বাদ গিয়েছে পাঠক্রম থেকে। এই পরিবর্তিত পাঠক্রম ঘিরে বারবারই তরজা চলেছে রাজনৈতিক মহলে। এবার কর্ণাটক সরকারের সিদ্ধান্ত ঘিরে নতুন করে বিতর্ক দানা বাঁধছে জাতীয় রাজনীতিতে। কর্ণাটকের নব নির্বাচিত কংগ্রেস সরকার মন্ত্রীসভার প্রথম বৈঠকেই দুটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রথমত, নির্বাচনের আগে ঘোষিত সমস্ত পরিষেবামূলক প্রতিশ্রুতির দ্রুত বাস্তবায়ন। দ্বিতীয়ত, শিক্ষাক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন। রাজ্যের পাঠক্রমে বদল আনতে বিশেষ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিল সিদ্দারামাইয়ার সরকার।

সূত্রের খবর ইতিমধ্যে কাজও শুরু হয়েছে দক্ষিণী রাজ্যে। মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া রাজ্যের ৪০ জন বিশিষ্টদের সঙ্গে কথাও বলেছেন পাঠক্রম পরিবর্তনের বিষয়। পাঁচ জুনের মধ্যেই লিখিতভাবে তাঁদের পরামর্শ সরকারের ঘরে জমাও দিয়েছেন তাঁরা। জানা যাচ্ছে এই সুপারিশগুলি খতিয়ে দেখেই পাঠক্রম বদলের কাজ শুরু করবে কমিটি। সূত্রের খবর এই সুপারিশ অনুসারে কর্নাটকের সিলেবাস থেকে বাদ পড়তে পারে রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘ বা আরএসএসের প্রতিষ্ঠাতা কেশব বলিরাম হেডগেওয়ারের জীবনী। এছাড়া পূর্বেকার বিজেপি সরকারের সিলেবাসকে হিন্দুত্বমূখী করার সব রকমের চেষ্টাকেও শোধরানো হবে বলে জানা যাচ্ছে। এই খবর প্রকাশ্যে আসতে শোরগোল পড়ে যায় পদ্ম শিবিরে। ভারতীয় জনতা পার্টির সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সিটি রবি এই প্রসঙ্গে বলেছেন, কংগ্রেস শিবির অজ্ঞদের দলে পরিণত হয়েছে। তাই হেডগেওয়ারের মতো স্বাধীনতা সংগ্রামীর জীবনী তাঁরা বাদ দিতে চাইছে। অন্যদিকে কর্নাটকের বিশিষ্ট কংগ্রেস নেতা বিকে হরিপ্রসাদের পালটা দাবি, হেডগেওয়ারে কোনওদিনও নিষ্ঠাবান স্বাধীনতা সংগ্রামী ছিলেন না, বরং তাঁকে ছদ্ম সংগ্রামী বলেই উল্লেখ করেছেন তিনি। উল্লেখ্য গোটা সঙ্ঘ পরিবারকেই ব্রিটিশ বন্ধু হিসেবে অভিযোগ করে থাকে বাম ও কংগ্রেস শিবির। অন্যদিকে আরএসএস-এর শতবর্ষের ঠিক আগে কর্নাটক সরকারের এই সিদ্ধান্ত ঘিরে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে সঙ্ঘ পরিবার তথা বিজেপি শিবিরে। সিদ্দারামাইয়ার সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে পথে নামার ইঙ্গিতও দিয়েছে বিজেপি।

প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই পাঠক্রম থেকে পর্যায় সারণি, ইতিহাসে গণতন্ত্রের ধারণার মতো গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় বাদ দিয়েছে এনসিইআরটি। বরাবরের মতো এবারেরও একই যুক্তি দেখালো এনসিইআরটি। পড়ুয়াদের উপর চাপ কমাতে কমানো দরকার সিলেবাস। এই যুক্তিতেই একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বাদ পড়ছে পাঠ্যক্রম থেকে। এই নতুন পদক্ষেপের ব্যাখ্যায় এনসিইআরটি-র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে,'ছাত্রছাত্রীদের উপর চাপের বোঝা কমাতেই এই পদক্ষেপ।'

এনসিইআরটি-র সূত্রে জানা যাচ্ছে দশম শ্রেণীর বিজ্ঞানের নতুন পাঠ্যসূচি থেকে বাদ যাচ্ছে আরও বেশ কিছু অধ্যায়। ইতিহাসে মোঘল সাম্রাজ্য, বিজ্ঞানে ডারুইনবাদ আগেই বাদ দেওয়া হয়েছিল। এবার সেই জুড়ল বিজ্ঞানে পর্যায় সারণি, ইতিহাসে 'গণতন্ত্রের ধারণা'-এর মত অধ্যায়। অর্থাৎ দশম শ্রেণী থেকে বাদ যাচ্ছে দেশের জনপ্রিয় আন্দোলন, রাজনৈতিক দল এবং গণতন্ত্রের সঙ্কট সম্পর্কিত বিষয়গুলি। এত গেল ইতিহাসের কথা। বাদ যাচ্ছে বিজ্ঞানেরও একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এর মধ্য রয়েছে, পর্যায় সারণি, শক্তির উৎস এবং সুস্থায়ী সম্পদের ব্যবহার সম্পর্কিত বিষয়গুলি।