সংক্ষিপ্ত

বিজেপি সরকারের শাসন ছেড়ে কংগ্রেসি শাসন গ্রহণ করেছেন কর্ণাটকের মানুষ। তা সত্ত্বেও ভন্ড হিন্দুত্ববাদীদের পাশবিক অত্যাচারে মৃত্যুমুখে পড়তে হল মুসলমান বৃদ্ধকে।

আরাধ্য দেবতার নাম নিয়ে মাতলামো, মদ খেয়ে আসুরিক রূপে অবতীর্ণ হলেন ভন্ড হিন্দুত্ববাদীরা। কর্ণাটক রাজ্যের সাম্প্রতিক ঘটনা নাড়া দিয়ে সারা ভারতকে। এক গরিব অন্ধ মুসলমান বৃদ্ধকে রাতের অন্ধকারে পাকড়াও করে বেধড়ক মার মেরে তাঁর দাড়িতে লাগিয়ে দেওয়া হল আগুন! পিঠে দেখা গেল পাশবিক অত্যাচারের চিহ্ন। 

-

বিজেপি (BJP) সরকারের শাসন ছেড়ে কংগ্রেসি শাসন গ্রহণ করেছেন কর্ণাটকের মানুষ। তা সত্ত্বেও হিন্দুত্ববাদীদের অত্যাচারের দাপটে মৃত্যুমুখে পড়তে হল ৬২ বছর বয়সি মুসলমান বৃদ্ধকে। ঘটনাটি ঘটেছে কর্ণাটক রাজ্যের কাপ্পাল জেলার গঙ্গাবতী শহরে। রাত্রিবেলা বাড়ি ফেরার সময় তাঁর রাস্তা আটকে দাঁড়ায় ২ জন দুষ্কৃতী। তাঁর কাছে থাকা সমস্ত টাকাপয়সা কেড়ে নেওয়া হয়। এরপর তাঁকে ‘জয় শ্রী রাম’ (Jai Shree Ram) নামক হিন্দুধর্মীয় ধ্বনি তোলার জন্য জোর করা হতে থাকে। তিনি প্রথমে রাজি না হওয়ায় তাঁকে বেধড়ক মারধর করে ভাঙা মদের বোতল দিয়ে তাঁর দাড়ি কেটে দেওয়ার চেষ্টা করে তারা। তারপর তাঁর দাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। 

-

২৫ নভেম্বর রাতে এই মর্মান্তিক ঘটনায় প্রাণ হারিয়ে ফেলার আশঙ্কায় টানা ৩ দিন কার্যত মুখে কুলুপ এঁটে বসেছিলেন আক্রান্ত বৃদ্ধ। পরিবারের মানুষদের পরামর্শে অবশেষে তিনি থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন ঘটনার তিনদিন পর। হুসেন সাব নামে ওই ব্যক্তি মনে করেছিলেন যে, পুলিশে অভিযোগ দায়ের করলে তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলবে দুষ্কৃতীরা। কারণ, তাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে ভয় দেখানো হয়েছিল। পাড়া-প্রতিবেশীরা ঘটনাটি জানার পর তাঁকে নিয়ে থানায় যান।

-

কাপ্পালের পুলিশ সুপার যশোদা ভান্তাগড়ি জানিয়েছেন যে, দুষ্কৃতীদের এখনও পর্যন্ত ধরা যায়নি। পুলিশ তদন্ত চালাচ্ছে। তাঁর বক্তব্য, ঘটনাটি লুঠতরাজের উদ্দেশে করা হয়ে থাকতে পারে। যদিও আক্রান্ত ব্যক্তি মোটেই অর্থবান নন। টাকা-পয়সার জন্য এমন একজন দৃষ্টিহীন মানুষকে অপহরণ করার কথা নয়। পুলিশ সুপার জানান, সাম্প্রদায়িক উদ্দেশে হামলার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। ভোটের আগে কর্ণাটক রাজ্যে নবাগত কংগ্রেস (Congress) সরকার সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনায় জিরো টলারেন্সের কথা ঘোষণা করেছিল।  তবে, এই বিষয়ে আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তা নিয়ে এখনও মুখ খোলেনি রাহুল গান্ধীর (Rahul Gandhi) দল।