সংক্ষিপ্ত

সিনেমা তৈরির সঙ্গে কাশ্মীর জুড়ে থাকলেও, বড়ো পর্দায় বলিউডের সিনেমা উপভোগ করা থেকে এতদিন বঞ্চিত ছিল কাশ্মীরিরা।  অবশেষে মঙ্গলবার থেকে চালু হলো কাশ্মীরের প্রথম মাল্টিপ্লেক্স।

কাশ্মীর কি কালি থেকে মিশন কাশ্মীর,  রোজা থেকে রাজি - ভূস্বর্গের দেশে বলিউডের বিখ্যাত সিনেমাগুলির শুটিং হলেও ,কাশ্মীরে এতদিন মাল্টিপ্লেক্সের  ছিল বড়ো অভাব। তাই সিনেমাগুলো তৈরির সঙ্গে কাশ্মীর জুড়ে থাকলেও, বড়ো পর্দায় বলিউডের সিনেমা উপভোগ করা থেকে এতদিন বঞ্চিত ছিল কাশ্মীরিরা।  অবশেষে মঙ্গলবার তাদের সেই দুঃখ মোচন হলো।  মঙ্গলবার থেকে চালু হলো কাশ্মীরের প্রথম মাল্টিপ্লেক্স। আনন্দে আত্মহারা উপত্যকাবাসীরা। 

সূত্রের  খবর বিজয় ধর নামে এক ব্যবসায়ীর উদ্যোগে তৈরী হয়েছে  এই মাল্টিপ্লেক্স।  তার পরিকল্পনাতেই বাস্তবায়িত হয়েছে এই প্রজেক্ট।  অবশ্য তার সাথে কাঁধে কাঁধ লাগিয়ে কাজ করেছেন আকিব ভাট নামে  এক সিনেমাপ্রেমীও ।  শোনা যায়  ওই সিনেমাপ্রেমী একসময় নিয়মিত মাল্টিপ্লেক্সের  খোঁজে উপত্যকার বাইরে যেতেন।  কিন্তু এখন কাশ্মীরে মাল্টিপ্লেক্স হওয়ার সুবাদে তার সময়ও  বাঁচবে এবং বাঁচবে টাকাও। তাই  মাল্টিপ্লেক্স তৈরির কাজ যখন চলছিল  তখন তিনিই নিয়মিত এর উন্নয়নের দিকে নজর রাখতেন। 

৫২০ জনের বসার ক্ষমতা সম্পন্ন মোট তিনটি থিয়েটার আছে এই মাল্টিপ্লেক্সে।  সাথে আছে একটি বিরাট ফুট কোর্টও যেখানে স্থানীয় সব  দুর্দান্ত কাশ্মীরি খাবার পাওয়া যাবে।  আমির খান অভিনীত 'লাল সিং চাড্ডা'-এর বিশেষ স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে মঙ্গলবার মাল্টিপ্লেক্সটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হযেছে ।আগামী ৩০শে  সেপ্টেম্বর থেকে হৃতিক রোশন এবং সাইফ আলি খান অভিনীত বিক্রম ভেধা-এর স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে এখানে নিয়মিত সিনেমা দেখানো শুরু হবে  


জম্মু ও কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা বলেন পুলওয়ামা এবং শোপিয়ানের প্রতিটি জেলায় আগে একটি করে  বহুমুখী সিনেমা থিয়েটার ছিল ।কিন্তু  আইনক্স -চালিত এই  মাল্টিপ্লেক্সটি খোলার পর থেকে ওই থিয়েটারগুলি জৌলুস কোথাও ম্লান হয়ে যাবে   । ১৯৮৯- ১৯৯০ সালে উপত্যকায় জঙ্গি- হামলার কারণে ত্রিশ বছর বন্ধ ছিল কাশ্মীরের  বিভিন্ন সিনেমা হল।  কিন্তু তারপর   এই মাল্টিপ্লেক্সের উদ্বোধন নিঃসন্দেহে কাশ্মীরিদের আবেগে ভাসাবে।  

জম্মু ও কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা ঘটনাটিকে "ঐতিহাসিক" বলে বর্ণনা করে বলেছেন, "আমরা শীঘ্রই জম্মু ও কাশ্মীরের প্রতিটি অঞ্চলে একই রকম বহুমুখী সিনেমা থিয়েটার তৈরি করব।" তাঁর মতে, শীঘ্রই অনন্তনাগ, শ্রীনগর, বান্দিপোরা, গান্ডারবাল, ডোডা, রাজৌরি, পুঞ্চ, কিশতওয়ার এবং রিয়াসিতে সিনেমা হল  খোলা হবে।

১৯৮০ এর দশকের শেষ দিকেও  উপত্যকায় প্রায় এক ডজন স্বাধীন সিনেমা হল ছিল।   কিন্তু জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির হিংসাত্মক কার্যকলাপের পর একসময়  তাদের দরজা বন্ধ করতে বাধ্য হয় হল-কর্তৃপক্ষ । ১৯৯০ এর  শেষের দিকে বেশ কয়েকটি থিয়েটার পুনরুদ্ধার চেষ্টাও হয় কিন্তু  সন্ত্রাসবাদীরা  ১৯৯৯ সালের সেপ্টেম্বরে  সিনেমা হলে গ্রেনেড-আক্রমণের যে নজির গড়েন তাতে সিনেমা হল তৈরির উৎসাহ কোথাও দমে যায় কাশ্মীরিদের। মঙ্গলবার মাল্টিপ্লাক্সের উদ্বোধন নিঃসন্দেহে কাশ্মীরিদের সেই উৎসাহকে পুনরুদ্ধার করেছে।