সংক্ষিপ্ত
লাকডাউনের কারণে এপ্রিল মাসেই কাজ হারিয়েছেন ১২ কোটি ভারতীয়
অর্থনৈতিক সংকটের মুখে পড়েছে দিনমজুর প্রবাসী শ্রমিকরা
অনাহারে মৃত্যু হয়েছে ১০০ জনের
করোনা আর্থিক সংকটে ঠেলে দিচ্ছে ৪৯কোটি বিশ্ববাসীকে
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে গত দুমাস ধরে লকডাউন চলছে দেশে। বিশ্বের সবথেকে বড় লকডাউন এটাই। লকডাউনের কারণে লক্ষাধিক মানুষকে করোনা সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করা গেছে। মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচানো গেছে কয়েক হাজার মানুষকে। এমনটাই দাবি করছে কেন্দ্র। ইতিমধ্যেই এই লকডাউনের খেসারত দিতে শুরু করেছে দেশের নিম্মবিত্ত বা আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষ। সেন্ট্রাল ফর মনিটারিং ইন্ডিয়ার ইকোনমি বা সিএমআইই বলছে লকডউনের প্রথম মাস আর্থাৎ শুধু মাত্র এপ্রিল মাসেই কাজ হারিয়েছেন ১২ কোটি ভারতীয়।
লকডাউনের কারণে তুমুলভাবে আর্থিক সংকটের মুখোমুখি হতে হয়েছে দেশের দরিদ্র মানুষকে। সরাসরি প্রভাব পড়েছে দেশের প্রবাসী শ্রমিক, ক্ষুদ্র ও ছোট ব্যবসায়ী, দিনমজুরদের ওপর। লকডাউনের কারণে নিম্ন বেতনের কর্মীরাও রীতিমত সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন। বলেও দাবি করেছে সিএমআইই।
আগামী ৩১ মের পরবর্তী সময় লকডাউন আরও শিথিল করার চিন্তাভাবনা করছে কেন্দ্রীয় সরকার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন তাতেও ১০ কোটি ভারতীয়কে চরম দরিদ্রে ঠেলে দেওয়া থেকে রক্ষা করা যাবে না। যাদের আয় হবে বিশ্ব ব্যাঙ্ক নির্ধারিত ২৪০ টাকার কিছুটা বেশি। আইপিই গ্লোবালের পরিচালক অশ্বজিৎ সিংয়ের মতে দরিদ্র পীড়িত মানুষের সংখ্যা ৬০ শতাংশ থেকে বেড়ে ৬৮ শতাংশে পৌঁছে যেতে পারে। তিনি আরও বলেছেন এক দশকেরও বেশি সময় ধরে দেশের মানুষের মধ্যে এই জাতীয় দরিদ্র দেখা যায়নি।
পাব্লিক ইস্টারেট টেকনোলজিস্ট তেজস জিএন সহ অনেকেই মনে করেন করোনা সংক্রমণের থেকে লকডাউনের কারণেই দেশে এই হাহাকার। একটি তথ্য তুলে তাঁরা দেখিয়েছেন লকডাউনের সময় থেকে এপর্যন্ত অনাহারে প্রায় ১০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর কাজ, আশ্রয় আর সঞ্চয় হারিয়ে জীবনের ঝঁকি নিয়ে বাড়ি ফিরতে গিয়ে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ২০০ জনের। বর্তমানে করোনা সংক্রমণ কিছুটা হলেও বৃদ্ধি পেয়েছে। এই পরিস্থিতি লকডাউন শিথিল করার থেকে বাড়ানো জল্পনা শুরু হয়েছে। কিন্তু তা যদি হয় তাহলে আরও অনেক মানুষই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ বর্তমান পরিস্থিতিতে বহু মানুষের হাতেই কাজ নেই। টাকা না থাকায় পরিবারে পাশে দাঁড়াতে অক্ষম প্রবাসী শ্রমিক দিনমজুররা। তাই তাদের হাতে নগদ টাকা দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। যেকথা নোবলেজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়, রঘুরাম রাজন বলেছেন।
একটি সার্ভে অনুয়াযী ৩১ মে থেকে যদি লকডাউন শিথিল করা হয় তাহলে দেশের এই অর্থনৈতিক সংকট চলবে আগামী ১৮ মাস। দিনে দিনে সংকট আরও বাড়বে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
তবে এই সংকট শুধু ভারতেই নয়। করোনাভাইরাসের সংক্রমণে কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিশ্বের ১২০টি দেশ। সংক্রমণ রুখতে অধিকাংশ দেশই লকডাউনের পথেই হেঁটেছে। যার ফলে ইতিমধ্যেই দরিদ্রের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে বিশ্বের ৪৯ কোটি মানুষকে। যাদের দৈনিক আয় দাঁড়িয়ে রয়েছে মাত্র ২ মার্কিন ডরালের নিচে।