সংক্ষিপ্ত

এই পরাজয় শুধু দিল্লি পুরনিগমের নয়, এর প্রভাব পড়তে চলেছে গোটা দেশে। বিজেপি এটা ভালো করেই বুঝতে পারছে। এই কারণেই গেরুয়া শিবির তার সমস্ত শক্তি দিয়েছিল এই নির্বাচনে। তবে কোথায় খামতি রয়ে গেল, কোন পথে হেঁটে ভুল করল বিজেপি।

দিল্লির এমসিডি নির্বাচনের ফলাফল প্রায় প্রকাশিত। সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি। ভারতীয় জনতা পার্টি বা ১৫ বছর ধরে MCD শাসন করছে, প্রায় ১০৫ টি আসনে সীমাবদ্ধ বলে মনে হচ্ছে। দেশের প্রাচীনতম দল কংগ্রেস দুই অঙ্কের আসনের জন্য লড়াই জারি রেখেছে। এই নির্বাচনে বিজেপি পূর্ণ শক্তি দিয়েছিল। কোনও পরিস্থিতিতেই হারতে চায়নি এমসিডি নির্বাচন। কিন্তু, সমস্ত কৌশলগত প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, বিজেপি এমসিডিতে হেরে গিয়েছে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আপের কাছে।

এই পরাজয় শুধু দিল্লি পুরনিগমের নয়, এর প্রভাব পড়তে চলেছে গোটা দেশে। বিজেপি এটা ভালো করেই বুঝতে পারছে। এই কারণেই গেরুয়া শিবির তার সমস্ত শক্তি দিয়েছিল এই নির্বাচনে। তবে কোথায় খামতি রয়ে গেল, কোন পথে হেঁটে ভুল করল বিজেপি। নির্বাচনী কৌশলেই বা কি ভুল ছিল, জেনে নিন।

পরাজয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায় নেগেটিভ প্রচার

দিল্লি পুরনিগমের নির্বাচন হল প্রাথমিকভাবে স্থানীয় সংস্থার নির্বাচন। কিন্তু, দেশের রাজধানী হওয়ায় এর ব্যাপক প্রভাব পড়ে। এই নির্বাচনের রাজনৈতিক বার্তা যায় সর্বত্র। প্রথম থেকেই, বিজেপিকে এমসিডির নির্বাচনী কৌশল থেকে সরে আসতে দেখা গিয়েছে। জনগণের সাধারণ সমস্যাকে ইস্যু না করে, বিজেপি দুর্নীতির ইস্যুতে কেজরিওয়ালের দিল্লি সরকারকে ঘেরাও করতে মগ্ন। আম আদমি পার্টি এরপর এলাকার ময়লাকে বড় ইস্যু বানিয়েছে। এই নির্বাচনে আবর্জনার পাহাড় একটি বড় ইস্যু হয়ে উঠেছে এবং কেজরিওয়ালের দল এর সুবিধা তুলে নেয়।

রাজ্য স্তরে মুখের অভাব

দিল্লির রাজনীতিতে বিজেপির মধ্যে মুখ/নেতৃত্বের অভাব। আজ পর্যন্ত, সারা দেশে বিজেপির একটাই মুখ, সেটা হল নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদী। মানে দেশের প্রধানমন্ত্রী। দলটি প্রতিটি নির্বাচনে কমবেশি এই মুখে ভোট চায়। এমসিডি নির্বাচনেও একই অবস্থা দেখা গেছে। সব কাউন্সিলর মোদীর নামে ভোট চাইছিলেন। বিজেপির স্থানীয় পর্যায়ে নেতৃত্ব প্রচারের সময়েও বারবার উঠে আসে মোদীর নাম। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি আর কতদিন এই এক নাম নিয়ে ভোট চাইবে বিজেপি। কবে পর্যন্ত তিনি মোদীর নামে ভোট চাইবেন। যাইহোক, মোদী ৭৩ বছর বয়সী। বিজেপি নিজেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে ৭৫ বছরের উপরে নেতাদের সক্রিয় রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়া উচিত।

বিজেপি তার কৃতিত্ব তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছে

আরেকটা ভুল করেছে বিজেপি। এ নির্বাচনে তার প্রচার ছিল তার কাজের ওপর কম, অন্যের ত্রুটি তুলে ধরতে বেশি। এই কৌশলটি তাকে অত্যন্ত কম নম্বর দিয়েছে। অন্যদিকে, আম আদমি পার্টি স্থানীয় ইস্যুগুলিকে প্রধানত তুলে ধরেছে। তারা জনগণের সমস্যার সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করেছে এবং কৌশলে সফলও হয়েছে।

টিকিট বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ

টিকিট বণ্টন নিয়েও অনেক ধরনের খবর সামনে এসেছে। কর্মীদের উপেক্ষা করে বহিরাগতদের গুরুত্ব দেওয়ার অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। কিছু পুরনো কর্মীও বিজেপির বিরুদ্ধে কংগ্রেসীকরণের অভিযোগ তুলেছেন। এর জেরে বিপুল সংখ্যক বিজেপি বিদ্রোহী মাঠে নামে এবং অনেক কর্মী ঘরে বসে পড়েন।