সংক্ষিপ্ত
- মধ্যপ্রদেশে সঙ্কটে কংগ্রেস সরকার
- বিজেপির বিরুদ্ধে বিধায়ক কেনার অভিযোগ
- তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে কংগ্রেস বিধয়াকরা
- পাল্টা দাবি বিজেপি নেতার
সাম্প্রতিক সমস্ত বিধানসভা নির্বাচনে মুখ থুবড়ে পড়েছে বিজেপি। দেড় বছরের মধ্যে ৫টি রাজ্য হারাতে হয়েছে। একটি রাজ্য ছাড়া ৯টি রাজ্যে ক্ষমতা দখল করতে পারেনি। এই অবস্থায় মধ্যপ্রদেশে কর্ণাটক মডেল প্রয়োগের অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। কংগ্রেসের অভিযোগ মধ্যপ্রদেশে কমলনাথ সরকারে পতনের ষড়যন্ত্র করছে বিজেপি। অসদুপায় অবলম্বনে ক্ষমতায় ফিরতে চাইছে। সেই জন্যই আট বিধায়ককে হিরয়ানার একটি হোটেলে নিয়ে রেখেছে বিজেপি।
সরকার ভাঙার এই খেলায় মধ্যপ্রদেশের বিজেপি নেতা নরোত্তম মিশ্রার দিকেই উঠছে অভিযোগের আঙ্গুল। টাকা দিয়ে নরোত্তম কংগ্রেস বিধায়কদের আটকে রেখেছেন বলে অভিযোগ তুলছে কংগ্রেস। সেই প্রসঙ্গ উড়িয়ে নরোত্তমের পাল্টা যুক্তি কংগ্রেস নিবধায়করা নিজেরাই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথের আমলে কংগ্রেস বিধায়করা উন্নয়বনের কাজ করতে পারছেন না। ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে অসন্তোষ। সেই কারণেই কংগ্রেসের ১৫ থেকে ২০ জন বিধায়ক বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে।
হঠাৎ করেই সঙ্কটে পড়ল মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেসের সরকার। আচমকাই মধ্যপ্রদেশ থেকে উধাও হয়ে গিয়েছেন কংগ্রেস ও তার সহযোগী দলের ১০ বিধায়ক। মধ্যপ্রদেশে কমলনাথের নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সরকারকে ফেলে দেবার জন্য বিধায়ক কেনা বেচার চেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপি। মঙ্গলবার চাঞ্চল্যকর এই অভিযোগ করেছিলেন কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা ও মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দিগ্বিজয় সিং। তাঁর অভিযোগ ছিল, কংগ্রেস বিধায়কদের দল ভাঙার জন্য ২৫ থেকে ৩০ কোটি টাকা দেওয়া হচ্ছে। আর তারপরেই মধ্যরাতে সঙ্কটে পড়ে কংগ্রেস সরকার।
এদিকে বিধায়ক উধাওয়ের খবর পেয়ে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী জিতু পাটোয়ারি সহ কমলনাথ সরকারের দুই মন্ত্রীকে গুরগ্রামের ওই হোটেলে পাঠায় কংগ্রেস। কিন্তু মধ্যপ্রদেশের কং মন্ত্রিদের অভিযোগ, পুলিশ তাঁদের হোটেলে ঢুকতে দেয়নি। হরিয়ানায় রয়েছে বিজেপি সরকার। ফলে হিরয়ানা পুলিশের উপর প্রভাব খাটাচ্ছে গেরুয়া শিবির। তবে শেষপর্যন্ত মধ্যপ্রদেশের দুই মন্ত্রী অপহৃত কয়েকজনকে বের করে আনতে পেরেছেন বলেই খবর।
এদিকে অপহৃত ১০ বিধায়কের মধ্যে ইতিমধ্যে ৬ বিধায়ক বুধবার সকালে ফিরে এসেছেন বলে দাবি করছেন দিগ্বিজয় সিং। ফলে মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেস সরকারের পতনের কোনো আশঙ্কা নেই বলেই জানাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথ। সূত্রের খবর, উধাও হওয়া ১০ বিধায়কের মধ্যে ২ বিএসপি, এক এসপি ও ৩ নির্দল বিধায়ক ফিরে এসেছেন। এদিকে ৪ বিক্ষুব্ধ কংগ্রেস বিধায়ককে হরিয়ানা থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বিজেপি শাসিত কর্ণাটকে।
এদিকে বিজেপির বিরুদ্ধে কংগ্রেস বিধায়ক কেনার অভিযোগ তুললেও মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহ্বান সেই দাবি খারিজ করে দিয়েছেন। ২৩০ আসন বিশিষ্ট মধ্যপ্রদেশ বিধানসভায় ২ জন বিধায়কের মৃত্যু হওয়ায় বর্তমানে সদস্য সংখ্যা ২২৮। বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে গেলে প্রয়োজন ১১৪ জন বিধায়কের সমর্থন। কংগ্রেসের হাতে রয়েছে ১১৪ জন বিধায়ক। ২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর বাকি ৪ নির্দল, ২ বিএসপি ও ১ সমাজবাদী বিধায়কের সমর্থনও ছিল কংগ্রেসের তরফে। বিজেপির হাতে বর্তমানে রয়েছে ১০৭ জন বিধায়ক। এই অবস্থায় বিজেপি আট জন বিধায়কের সমর্থন যোগাড় করে ফেলতে পারলেই মধ্যপ্রদেশের ছবিটা বদলে যেতে পারে।