সংক্ষিপ্ত

একবার নয় বারবারই চেষ্টা করে গেছে মায়ের ঘুম ভাঙাতে
বারবারই ব্যর্থ হয়েছে ছোট্ট শিশুটি
বিহারের মুজাফফপুর স্টেশনের মর্মান্তিক ছবি
জল আর খাবারের অভাবে ট্রেনেই মৃত্যু প্রবাসী শ্রমিকের 
 

লকডাউনের প্রথম দিন থেকেই তীব্র সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়েছিল অভিবাসী শ্রমিক ও দিনমজুরদের। কাজ হারানোর পাশাপাশি মাথাগোঁজার স্থানটাও তাঁরা হারিয়েছেন। দীর্ঘ ২ মাস পরেও ছবিটা তেমন বদল হয়নি। যতদিন যাচ্ছে ততই অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছে। আর সেই ভয়ঙ্কর পরিণতির ছবি উঠে এল বিহারের মজাফ্ফরপুর স্টেশনে। যেখানে এক মৃত মহিলা প্রবাসী শ্রমিকের দেহ নিয়ে খেলা করতে দেখা গেল তাঁরই দুধের শিশুকে। 

লকডাউনের প্রায় এক মাস পরে অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই ট্রেনের চড়েই সুদূর গুজরাত থেকে বিহারের কাটিহারের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছিলেন এই প্রবাসী মহিলা শ্রমিক। সঙ্গে ছিল তাঁর বোন, বোনের স্বামী ও তাঁর দুই ছোট্ট সন্তান।  মৃতের পরিবারের জানিয়েছে, খাবার ও জল না পাওয়ায় রাস্তাই অসুস্থ হয়ে পড়েন মহিলা। রবিবার তাঁরা ট্রেনে উঠেছিলেন। সোমবার ট্রেনটি মুজাফ্ফরপুর পৌঁছায়।  সেই সময় মৃত্যু হয় ২৩ বছরের মহিলার। 

রেল মন্ত্রকের তরফ থেকে জানান হয়েছে, ট্রেনের মধ্যেই মহিলা অসুস্থ হয়ে পড়েন। ট্রেনেতেই তাঁর মৃত্যু হয়। তারপর পুরো পরিবারকে মুজাফ্ফরপুর স্টেশনে নেমে যেতে বলা হয়। 

মৃত মহিলার দেহ পড়েছিল মুজাফফরপুর প্ল্যাটফর্মে। সেখানেই তাঁর ছোট্ট শিশু বারবার তাঁকে জাগানোর চেষ্টা করছিল। খেলার ছলে টেনে নিচ্ছিল তার মায়ের কাপড়। কিন্তু কোনও সাড়া না পেয়ে আবারও একই কাজ করে চলেছিল। কারণ শিশু মন তখনও বুঝতে পারেনি তার মা আর জীবিত নেই। মৃত মায়ের সঙ্গেই খেলছিল সে। 

মুজাফ্ফরপুর স্টেনে খাবার আর জল না পেয়ে দাবদহ সহ্য করতে না পেরে একটি দুবছরের শিশুরও মৃত্যু হয়েছিল। মৃত শিশুটির পরিবার জানিয়েছে তাঁরা দিল্লি থেকে শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনে করেই ফিরছিলেন। 

সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, রাজ্যের অনুমতি ছাড়াই চালান হবে শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন। আর সেই মত একাধিক শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন চলছে দেশে। সেই ট্রেনে করেই প্রবাসী শ্রমিকরা ফিরছেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মনে করছে কেন্দ্র ও রাজ্যের সমন্বয় না থাকায় ট্রেন ও স্টেশনগুলিতে কোনও ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করা হয়নি। তাতেই  চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে পরিযায়ী শ্রমিকদের। 


পাশাপাশি দেশের অধিকাংশ এলাকার তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি। তীব্র গরম সহ্য় করে ট্রেনের টিকিট ও স্ক্রিনিং-এর জন্য় বসে থাকছে। প্রয়োজনী খাবার ও জল না পেয়ে অভিবাসী শ্রমিকদের একাংশ অসুস্থ হয়ে পড়ছে বলেও অভিযোগ।