সংক্ষিপ্ত

লক্ষ্য ছিল করোনা মহামারির সময়ে ছাত্রছাত্রীদের বোঝা কমানো

র তা করতে গিয়েই চরম বিতর্কে মোদী সরকার

সিবিএসই পাঠক্রম থেকে বাদ পড়ল গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতার মতো বিষয়

এতে বিপদের আশঙ্কা করছেন শিক্ষাবিদ থেকে বিরোধী রাজনীতিকরা

সিলেবাস সংশোধন নিয়ে দেশ জুড়ে বিতর্কে জড়ালো সিবিএসই বোর্ড। করোনাভাইরাস জনিত কারণে দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ। তাই শিক্ষার্থীদের উপর সিলেবাসের বোঝা কমাতে উদ্যোগী হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্ক টুইট করে জানিয়েছিলেন প্রত্যেক বিষয়ের মূল ধারণাগুলি রেখেই ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমানো হয়েছে পাঠক্রম। কিন্তু, বাদ পড়া সেই অংশের তালিকা দেখেই বিপদের আশঙ্কা করছেন শিক্ষাবিদ থেকে বিরোধী রাজনীতিবিদরা।

সিবিএসই বোর্ডের পাঠক্রম সংক্রান্ত যে নয়া নির্দেশিকা বিদ্যালয়গুলিতে পাঠানো হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে একাদশ শ্রেনির পলিটিকাল সায়েন্স পাঠক্রম থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা, নাগরিকত্ব, গণতন্ত্র, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর মতো অংশ। আবার দ্বাদশ শ্রেনির ওই বিষয়ের পাঠক্রম থেকে বাদ গিয়েছে পাকিস্তান, বাংলাদেশ, নেপাল, শ্রীলঙ্কার মতো প্রতিবেশি দেশ-গুলি সহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে ভারতের বিদেশনীতির প্রসঙ্গ। আবার নবম শ্রেনির সমাজ বিজ্ঞান বিষয়ের পাঠক্রম থেকে বাদ পড়েছে গণতান্ত্রিক অধিকার, খাদ্য নিরাপত্তার মতো বিষয়।

এরপরই এই নিয়ে দেশ জুড়ে শোরগোল তৈরি হয়েছে। মমতা বন্দ্যাোপাধ্যায়, রণদীপ সুরজওয়ালা-র মতো বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের থেকে শুরু করে শিক্ষাবিদ - সকলেই এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি বাদ দেওয়ার প্রতিবাদ জানিয়েছেন। ধর্মনিরপেক্ষতা, জাতীয়তাবাদ, নাগরিকত্ব, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো, ভারতের বিদেশনীতি - এগুলির থেকে পড়ানোর জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কী হতে পারে তাঁরা ভেবে পাচ্ছেন না। এর পিছনে কেন্দ্রীয় সরকার তথা শাসক দল বিজেপির রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে বলে মনে করছেন তাঁরা।

এই অবস্থায় সিবিএসই বোর্ড তথা কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের সাফাই এই ব্যবস্থা একেবারেই সাময়িক। চলতি মহামারির প্রেক্ষিতে সাময়িকভাবে এই অংশ বাদ দেওয়া হচ্ছে। পাঠক্রম থেকে বাদ দেওয়া মানে সেই বিষয় পড়ানো হবে না তা নয়। বিষয়গুলি সম্বন্ধে শিক্ষার্থীদের ধারণা দেওয়া হবে, তবে এই বিষয়গুলির উপর কোনও পরীক্ষা নেওয়া হবে না।

তবে তাদের এই সাফাই মানছেন না বিরোধীরা বা শিক্ষাবিদরা কেউই। বিরোধীরা বলছেন নোট  বাতিলের ঘোষণা থেকে কারোর সঙ্গে আলোচনা ছাড়া আচমকা লকডাউন ডারি - নরেন্দ্র মোদী সরকারের আচরণে বরাবরই স্বৈরাচারি গন্ধ পাওয়া যায়। এই ক্ষেত্রে সেটা আরও স্পষ্ট হল। আবার অনেকে বলছেন, সাময়িকভাবে বাদ দেওয়া হলেও এই বাদ দেওয়ার মধ্য দিয়ে বোঝা যাচ্ছে জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতার মতো বিষয়গুলির সেরকম গুরুত্ব নেই এই সরকারে কাছে। নাহলে বাদ দেওয়ার মতো আরও অনেক বিষয় ছিল।