সংক্ষিপ্ত

  • ৩ নভেম্বর মধ্যপ্রদেশে উপনির্বাচন
  • ২৮টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ হবে 
  • কঠিন পরীক্ষার সামনে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া 
  • মধ্য প্রদেশে গিয়ে পরীক্ষা দিচ্ছেন শচীন পাইলট 
     

রাহুল গান্ধীর তরুণ ব্রিগেডের প্রথম সারির সদস্য ছিলেন দুজনে। কিন্তু বর্তমানে তাঁরা একে অপরের প্রতিপক্ষা। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথের আহ্বানে মধ্যপ্রদেশের প্রচারে সামনের সারিতে রয়েছেন রাজস্থান কংগ্রেসের নেতা শচীন পাইলট। আর তাঁর প্রাক্তন রাজনৈতিক সহযোগী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার মধ্য প্রদেশের বিজেপির গুরুদায়িত্বে রয়েছে। এই অবস্থায় দাঁড়িয়েও তাঁরা রাজনৈতিক শালীনতা  আর পুরনো বন্ধুত্বের নজির গড়লেন বলা যেতে পারে। কারণ কংগ্রেসের বিরুদ্ধে প্রচারে যাওয়ার আগেই মধ্য প্রদেশের একটি বিমান বন্দরে  কংগ্রেস নেতা শচীন পাইলটের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। তিনি তাঁকে  স্বাগত জানিয়েছেন। আর সেই কথা নিজে মুখেই স্বীকার করেছেন সিন্ধিয়া। 


আগামী ৩ নভেম্বর মধ্যপ্রদেশের ২৮টি কেন্দ্রে উপনির্বাচন। আর এই নির্বাচনই বিজেপি সাংসদ জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার কাছে অগ্নিপরীক্ষার সামিল। কারণ গত ২৩ নভেম্বর কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। তারপর এটাই তাঁর প্রথম ভোট-পরীক্ষা। ২৩০ আসনের মধ্যপ্রদেশ বিধানসভায়  ক্ষমতায় থাকতে গেলে বিজেপিকে কমপক্ষে ৮টি আসন জিততে হবে।  অধিকাংশ আসনেই তাঁর প্রধান প্রতিপক্ষ কংগ্রেস। মধ্যপ্রদেশের উপনির্বাচনে ২৮টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৬টি কেন্দ্রই গোয়ালিয়র, চম্বল এলাকায়। একটা সময় এগুলি সিন্ধিয়াদের গড় হিসেবে পরিচত ছিল। তাই পরীক্ষায় সাফল হওয়ার জন্য জোরদার প্রচার চালাচ্ছে জোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। 

পিছিয়ে নেই কংগ্রেস। কংগ্রেস যদি ২৮টি আসনয়ই জিততে পারে তাহলে আবারও ক্ষমতা দখল করবে শতাব্দী প্রাচিন দলটি। আর মধ্য প্রদেশ উপনির্বাচনে কংগ্রেস দায়িত্ব দিয়েছে সদ্যোই দলে ফিরে আসা শচীন পাইলটকে। মাস খানেক আগেই কংগ্রেসে থেকে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন শচীন পাইলট। অশোক গেহলটের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন। সেই সময় কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে গুঞ্জন ছিল তিনিও জ্যোতিরাদিত্যের মত কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে নাম লেখাবেন। কিন্তু প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢ়রা আর রাহুল গান্ধীর উদ্যোগে রণে ভঙ্গ দেন শচীন পাইলট। তারপর থেকে শান্ত হয়ে কংগ্রেসেরই অবস্থান করছেন তিনি। 

রাহুল ব্রিগেডের প্রধান দুই সদস্য জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া ও শচীন পাইলটের মধ্যে বেশ কয়েকটি মিল রয়েছে। দুজনেই উচ্চ শিক্ষিত। দুজনেই কংগ্রেসের মন্ত্রিসভার সদস্যছিলেন। আর দুজনের মধ্যে ঘনিষ্টতাই ছিল। কিন্তু বর্তমানে একজন কংগ্রেসে অন্যজন বিজেপির নেতা।  আর প্রাক্তন রাজনৈতিক সহযোগী বর্তমানে একে অপরের প্রতিপক্ষ। কিন্তু প্রাক্তন দুই রাজনৈতিক সহযোগী একে অপরকে আক্রমণ করা থেকে বিরত থাকছেন। সচিন পাইলট মত জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াও রাজনৈতিক দলকে আক্রমণ করার পক্ষপাতি। জনসভাতে শচীন পাইল মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস সরকার ফেলে দেওয়ার জন্য জ্যোতিরাদিত্যকে দায়ি করেননি। তিনি সরাসরি দায়ি করেছেন শিবরাজ সিং চৌহান ও বিজেপি নেতৃত্বকে। সিন্ধিয়ার দলত্যাগ প্রসঙ্গে বলতে গিয়েও সংযত থাকলেন পাইলট। তিনি বলেন গণতন্ত্রে শেষ কথা বলবে জনগণ। অন্যদিকে সিদ্ধিয়াকে মধ্যপ্রদেশের বিধানসভা প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন এটি প্রত্যেক বিজেপি কর্মীর আত্মসম্মানের লড়াই। 

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে শচীন পাইলটকে মধ্যপ্রদেশে প্রচারে ডেকে আনার মূল উদ্দেশ্যই ছিল তাঁকে দিয়ে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াকে তিরষ্কার করা। কিন্তু কমল নাথের সেই উদ্দেশ্য সফল হয়নি। কারই পাইল রীতিমত ভারসাম্য ও রাজনৈতিক শালীনতা বজায় রেখেই মধ্যপ্রদেশে প্রচার করে যাচ্ছেন। পাশাপাশি কংগ্রেসকে গুর্জর সম্প্রদায়ের ভোট পেতেও সাহায্য করছেন।