সংক্ষিপ্ত

পাকিস্তানের রাজনৈতিক বিশ্লেষক কামার চিমা বলেছেন, 'আফগানিস্তান ইস্যুতে আঞ্চলিক দেশগুলোর এনএসএ-র বৈঠকে পাকিস্তানকে সুন্দরভাবে কোণঠাসা করা হয়েছে।

ভারতের জাতীয় উপদেষ্টা অজিত ডোভাল এনএসএ বৈঠকে অংশ নিতে রাশিয়ায় দুই দিনের সফরে গেছেন। যেখানে তিনি আফগানিস্তানের নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের বৈঠকে অংশ নেন। এ সময় ডোভাল রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গেও দেখা করেন। পাকিস্তানের গণমাধ্যমে এই বৈঠক নিয়ে তুমুল আলোচনা হচ্ছে। আফগানিস্তান ইস্যুতে নিজেদের শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে বর্ণনা করা পাকিস্তান এই বৈঠকে অনুপস্থিত ছিল। পাকিস্তানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারত চতুরতার সঙ্গে আফগানিস্তানে পাকিস্তানের অবস্থান দুর্বল করার চেষ্টা করছে।

পাকিস্তানের রাজনৈতিক বিশ্লেষক কামার চিমা বলেছেন, 'আফগানিস্তান ইস্যুতে আঞ্চলিক দেশগুলোর এনএসএ-র বৈঠকে পাকিস্তানকে সুন্দরভাবে কোণঠাসা করা হয়েছে। আজ পাকিস্তান এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি করেছে যে সব দেশ আফগানিস্তান ইস্যু নিয়ে কথা বলছে কিন্তু আমরা তা করছি না। আমরা আফগানিস্তানের প্রধান স্টেকহোল্ডার ছিলাম, কিন্তু এখন পরিস্থিতি বদলে গেছে।

এই দেশগুলি বৈঠকে অংশ নেয়

আফগানিস্তানে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের পঞ্চম বৈঠক ডাকা হয়েছিল। ভারত, চিন, ইরান, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান, কিরগিজস্তান ও তুর্কমেনিস্তানসহ অনেক দেশের জাতীয় নিরাপত্তা এই বৈঠকে অংশ নেয়। কিন্তু পাকিস্তানের পক্ষ থেকে কেউ এতে অংশ নেয়নি। যদিও এই প্রথম নয়। এর আগে যখন ভারতে আঞ্চলিক দেশগুলোর NSA-এর বৈঠক ডাকা হয়েছিল, তখনও পাকিস্তান তাতে অংশ নেয়নি।

'ভারত কখনই আফগানিস্তান ছাড়বে না'

মস্কোতে নিরাপত্তা আলোচনার পর এনএসএ অজিত ডোভাল বলেছিলেন যে ভারত সবসময় আফগানিস্তানের জনগণের পাশে থাকবে। রাশিয়ায় ভারতীয় দূতাবাস টুইট করে এই তথ্য জানিয়েছে। দূতাবাস টুইট করেছে, 'এনএসএ অজিত ডোভাল আফগানিস্তানের নিরাপত্তা সংলাপের পঞ্চম সংস্করণে অংশ নিয়েছিলেন। বৈঠকে তিনি জোর দিয়েছিলেন যে ভারত কখনই আফগানিস্তানের জনগণের পাশে থাকবে না। এবারের বাজেটে বিশেষ অর্থনৈতিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছে ভারত। আফগানিস্তানে উন্নয়ন কাজের জন্য আড়াই কোটি ডলার দেবে ভারত।

এর আগে, অজিত ডোভাল আফগানিস্তান নিরাপত্তা পরিষদের সেক্রটারিদের সঙ্গে পঞ্চম বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন। যা আয়োজন করেছিল রাশিয়া। বৈঠকে ডোভাল বলেছিলেন কোনও দেশই যাতে সন্ত্রাসবাদকে ব্যবহার করার জন্য আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার না করে সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরি। বৈঠকে রাশিয়া ও ভারত ছাড়াও ইরান, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, চিন, তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান ও উজবেকিস্তানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

নয়াদিল্লিতে জি-২০ বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠকের কয়েক সপ্তাহ আগে ডোভালের মস্কো সফর। রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ ১ ও ২ মার্চ ভারতে আসতে পারেন বলেও আশা করা হচ্ছে। রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের পরেই ভারতের সঙ্গে মস্কোর সম্পর্ক যে দৃঢ়় রয়েছে তার প্রমাণ একাধিকবার দিতে চায় ভারত। তবে ভারত - রাশিয়ার এই সুসম্পর্ক কিন্তু এখনও আমেরিকা ভালভাবে নেয়নি। তবে রুশ- ইউক্রেন যুদ্ধে দুই দেশের কোনও দেশকেই ভারত এখনও পর্যন্ত সমর্থন করেনি। যুদ্ধ মিটিয়ে শান্তি স্থাপনের ওপরই জোর দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কথায় আলোচনার মাধ্যমেই শান্তিস্থাপন সম্ভব ।