সংক্ষিপ্ত
দিল্লির (Delhi) জনকপুরী এলাকার এক তরুণী একটি নতুন স্কুটি কিনেও, সেটি নিয়ে বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না। দিল্লি রিজিওনাল ট্রান্সপোর্ট অফিসে (Regional Transport Office, Delhi) অনেকেই এরকম অভিযোগ করেছেন।
দিল্লির (Delhi) এক তরুণি, সম্প্রতি একটি নতুন স্কুটি (Scooty) কিনেছিলেন। সেই স্কুটি নিয়ে কলেজে যাবেন ভেবে দারুণ আনন্দে ছিলেন তিনি। কিন্তু, দিল্লি রিজিওনাল ট্রান্সপোর্ট অফিস (Regional Transport Office, Delhi) থেকে স্কুটি'টি রেজিস্ট্রেশন করিয়ে আনার পর, নতুন স্কুটির নাম্বার প্লেট দেখেই লজ্জায় লাল হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। তারপর থেকে প্রায় মাস দেড়েক কেটে গিয়েছে। নতুন স্কুটিটি তাঁর বাড়ির নিচে পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে। লজ্জায় সাধের টু-হুইলার নিয়ে বাইরে বের হতে পরেননি তিনি। অবশ্য শুধু তিনিই নন, সম্প্রতি দিল্লি রিজিওনাল ট্রান্সপোর্ট অফিসে রেজিস্টার করা বহু দুচাকা বা চারচাকার মালিকই একই সমস্যায় পড়েছেন। এ এক অদ্ভূত সমস্যা। সমাধানেরও কোনও রাস্তা দেখা যাচ্ছে না।
জানা গিয়েছে, ওই তরুণী ফ্যাশন ডিজাইনিং কোর্সের ছাত্রী। দিল্লির জনকপুরী (Janakpuri) এলাকায় তাঁর বাড়ি। সেখান থেকে মেট্রোরেলে করে রোজ তিনি নয়ডায় (Noida) যান ক্লাস করতে। করোনাভাইরাস মহামারির (Coronavirus Pandemic) আসার পর, জনাকীর্ণ মেট্রোতে করে অত দূরে যেতে তাঁর অস্বস্তি হচ্ছিল। বাবার কাছে একটি স্কুটি কিনে দেওয়ার আবদার করেছিলেন। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বাবাকে বলার পর, অবশেষে, এই বছর দীপাবলিতে সেই সাধের স্কুটি উপহার পেয়েছিলেন তিনি। রিজিওনাল ট্রান্সপোর্ট অফিস থেকে রেজিস্ট্রেশন করিয়ে, স্কুটিটি তাদের বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছিলেন ডিলার।
আরও পড়ুন - প্রথম বিভাগে পাশ করলেই ছাত্রীরা পাবেন ৫০ হাজারের স্কুটি, চমক দিল দেশের এই রাজ্য
আরও পড়ুন - Yamaha Aerox 155 Maxi: বড় ধামাকা ইয়াহামার ভারতে এলো ব্যাটারি চালিত ম্যাক্সি স্কুটি
আরও পড়ুন - লকডাউনে ছেলেকে ঘরে ফেরাতে মরিয়া মা, সব উপেক্ষা করে ৩ দিনে অতিক্রম ১৪শ কিলোমিটার
বাড়ির আনার সঙ্গে সঙ্গে নাম্বার প্লেটে চোখ গিয়েছিল তাঁর পরিবারের। কী লেখা, 'সেক্স'? চরম অস্বস্তিতে পড়েছিলেন তরুণী। কারণ স্কটিটির আইডেন্টিফিকেশন নম্বর দেওয়া হয়েছে, 'ডিএল ৩ এসইএক্স ****' (DL 3 SEX ****)। এসইএক্স কোড নম্বর হলেও, সেটি সবাই সেটা 'সেক্স' হিসাবেই পড়ছে। এরপর স্কুটিটি নিয়ে পাড়ার বের হতেই আশপাশে বাড়ির মহিলারা তাঁকে 'বেশরম' (নির্লজ্জ) বলা শুরু করেন। চারপাশের সবাই এই নম্বর প্লেট নিয়ে তার সঙ্গে রসিকতা করেছে, বড়রা ধমক দিয়েছেন।
এই সমস্যার পর, তাঁর বাবা টু-হুইলার বিক্রেতাকে নম্বরটি পরিবর্তন করার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু, বিক্রেতা জানান, অনেক লোক এই কোডের নম্বর পেয়েছে। সাফ জানিয়ে দেন, 'আপনার মেয়ে কোনও রানী নয়, যে সে নতুন নম্বর পাবে'। আজতক পোর্টালের এক প্রতিবেদনে দিল্লির ট্রান্সপোর্ট কমিশনার কে কে দাহিয়াকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, একবার গাড়ির নম্বর বরাদ্দ হয়ে গেলে, তা পরিবর্তন করার কোনও উপায় নেই। কারণ পুরো প্রক্রিয়াটি একটি সেট প্যাটার্নে চলে।
জানা গিয়েছে গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নম্বর, স্বয়ংক্রিয়ভাবে তৈরি হয়। এসইএক্স কোডটিও স্বয়ংক্রিয়ভাবেই তৈরি হয়েছিল। ইতিমধ্যেই অনেক চার চাকা এবং দুই চাকা গাড়িতেই ওই কোডের নম্বর প্লেট লাগানো হয়েছে। এই নিয়ে বহু অভিযোগও এসেছে দিল্লি পরিবহন বিভাগে। এই অবস্থায় মানুষের অনুভূতির কথা মাথায় রেখে 'এসইএক্স' সিরিজটি বন্ধ করা দেওয়া হয়েছে। তার বদলে অন্য একটি সিরিজ চালু করা হয়েছে। এরপর থেকে নম্বর প্লেট তৈরির আগে মাথায় রাখা হবে, যাতে কারও অনুভূতিতে আঘাত না লাগে। তবে, দিল্লির মুখ্য সচিব, (পরিবহন) আশিস কুন্দ্রা বলেছেন, গাড়ির নম্বর প্লেট মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করে ঠিকই, তবে এই নম্বর প্লেটে যে সংখ্যা ও নম্বরের মিশ্রণ থাকে, তার কোনও বিশেষ অর্থ থাকে না।