আরইসিপি চুক্তি থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত ভারতের এর আগে এই চুক্তির পক্ষেই কথা বললেও শেষ মুহূর্তে পিছিয়ে এলেন মোদী ভারতের মূল উদ্বেগগুলির সমাধান না হওয়াই এর কারণ আগেই এই চুক্তি করা নিয়ে আপত্তি তুলেছিল কংগ্রেস 

প্রথম থেকেই আপত্তি তুলেছিল কংগ্রেস। তবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মতে আরিসিপি চুক্তি ছিল ভারত এবং তার মিত্র দেশগুলির স্বার্থরক্ষাকারী এবং সব পক্ষই এই চুক্তিতে সমানভাবে লাভবান হবে বলেও দাবি করেছিলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত কিন্তু সস্তার চিনা মালে বাজার ভরে যাওয়ার ভয়ে রাহুল গান্ধীর কথা মেনে আরিসিপি চুক্তি থেকে পিছিয়েই এলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সরকারি সূত্রের দাবি চুক্তিতে ভারতের মূল উদ্বেগের সমাধান করা হয়নি বলে প্রধানমন্ত্রীর এই চুক্তিতে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। জানিয়ে দিয়েছেন দেশের স্বার্থ নিয়ে কোনও আপস হবে না।

Scroll to load tweet…

আরইসিপি চুক্তি কী?

আরইসিপি-র পুরো কথাটা হল রিজিওনাল কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ বা আঞ্চলিক সর্বাঙ্গীণ অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব। এই চুক্তি সাক্ষরিত হওয়ার কথা ভারত ও আরও ১০টি আসিয়ান দেশ ও আসিয়ান দেশগুলির সঙ্গে মুক্ত বানিজ্যে থাকা পাঁচটি দেশ - চিন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া, ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যে। এই ১৬টি দেশের হাতে মিলিতভাবে বিশ্বের মোট জিডিপির ৩০ শতাংশ এবং বিশ্বের অর্ধেক জনসংখ্যা রয়েছে। কাজেই এই চুক্তি শেষ পর্যন্ত হলে এটি বিশ্বের সর্ববৃহৎ মুক্ত বানিজ্যাঞ্চল হত।

কোথায় ভারতের আপত্তি?

জানা গিয়েছে ভারতের মূল ভয় এই চুক্তির ফলে ভারতের বাজার ছেয়ে যাবে সস্তা চিনা সামগ্রীতে। যার ফলে দেশের ক্ষুদ্র ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলি ক্ষতিগ্রস্থ হবে। ভারতের আপত্তি রয়েছে, আমদানি বৃদ্ধির বিরুদ্ধে অপর্যাপ্ত সুরক্ষা, চিনের সঙ্গে অপর্যাপ্ত পার্থক্য, নিয়মের সম্ভাব্য লঙ্ঘন, ২০১৪ সালকে ভিত্তি বছর হিসেবে রাখা এবং মার্কেট অ্যাক্সেস এবং নন-ট্যারিফ বেরিয়ার নিয়ে কোনও নির্ভরযোগ্য নিশ্চয়তা না থাকা নিয়ে।

Scroll to load tweet…

রবিবার আসিয়ান দেশের রাষ্ট্রনেতাদের সামনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভারতের উদ্বেগগুলি ফের একবার তুলে ধরেন। তিনি 'সব দেশের জন্য অর্থবহ বাজারের প্রয়োজনীয়তা' তুলে ধরেন। কিন্তু সেই আলোচনাতেো কোনও নির্ভরয়োগ্য সমাধান বের হয়নি। এরপরই চুক্তিতে স্বাক্ষর না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী।

আরইসিপি চুক্তির ইতিহাস

এই চুক্তির প্রস্তাবনা প্রথম করা হয়েছিল ২০১২ সালে কাম্বোডিয়ায় আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনে। সেই সময় এই চুক্তির পক্ষে সায় দিয়েছিল ভারতের মনমোহন সিং-এর নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকার। ২০১৩ সাল থেকে এই নিয়ে কথা শুরু হয়। ভারত প্রথম থেকেই সাবধানী অবস্থানে ছিল। গত সাত বছর ধরে দীর্ঘ আলাপ আলোচনার পর এই বছর সবকটি দেশ চুক্তি করতে রাজি হয়েছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ভারপত সরে এল।

কংগ্রেসের আপত্তি

প্রধানমন্ত্রী ব্যাঙ্কক রওনা হওয়ার আগে থেকে এই চুক্তির বিরোধিতা করেছিল কংগ্রেস। এই চুক্তি ভারতের অর্থনীতির ভিত নড়িয়ে দেবে বলে সরকারকে আক্রমণ করেছিলেন সনিয়া গান্ধী। সোমহবার সকালেই রাহুল গান্ধী চিনা সত্তা মালে ভারতের বাজার ভরে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

এরপর কি?

ভারত এই চুক্তি থেকে সরে আসার পরও বাকি দেশগুলি এই চুক্তি নিয়ে এগোবে না ভারতের আপত্তিগুলি সমাধানের পথে যাবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে ভারতকে বাদ দিয়েই বাকি ১৫টি দেশ এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করবে।