সংক্ষিপ্ত
মন্দিরে পড়ে মালির কাটা মুন্ডু
পুলিশের কাছে আত্মসমর্পন করল পুরোহিত
দেবীর নির্দেশেই নাকি এইকাজ করেছেন তিনি
পুলিশ অবশ্য বলছে এর পিছনে গাঁজাও থাকতে পারে
একুশ শতকের ভারতবর্ষ। ডিজিটাল ইন্ডিয়া, আত্মনির্ভর ভারত - গালভরা নাম যাই দেওয়া হোক না কেন, শিক্ষার অভাবে ভারতীয় মনন যে এখনও মধ্যযুগেই পড়ে আছে, তা আরও একবার প্রমাণ হয়ে গেল ওড়িশার কটকের এক চাঞ্চল্যকর ঘটনায়। বৃহস্পতিবার কটকের নরসিংপুরের বাঁধহুদা গ্রামের ব্রাহ্মণ্য দেবী মন্দিরে ৫২ বছরের এক ব্যক্তির শিরশ্ছেদ করলেন মন্দিরের ৭২ বছরের বৃদ্ধ পুরোহিত সংসারী ওঝা। পরে পুলিশের কাছে সে নিজেই আত্মসমর্পণ করে জানায় বিশ্বকে করোনামুক্ত করতেই নাকি এই নরবলি দিয়েছে সে।
জানা গিয়েছে নিহত ওই ব্যক্তির নাম সরোজ কুমার প্রধান। বাঁধহুদা গ্রামের ওই বাসিন্দা মন্দিরেরই বাগানে মালির কাজ করতেন। অভিযুক্ত পুরোহিতের সঙ্গেই মন্দির লাগোয়া একটি ঘরে থাকতেন। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত পুরোহিত হত্যার ঘটনা স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা নাগাদ সে এই কাণ্ড ঘটায়। তবে এর কারণ 'করোনাভাইরাস মহামারী থেকে বিশ্বকে মুক্তি দেওয়া' বলে দাবি করেছে সে।
তার আরও দাবি ওই দিন কোভিড-১৯ মহামারি নিয়ে সরোজ কুমার প্রধানের সঙ্গে তার জোর তর্ক বেধেছিল। সেই সময় ব্রাহ্মণ্য দেবী আবির্ভূত হয়ে তাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধান-এর শিরশ্ছেদ করার জন্য। তারপরই একটি দায়ের আঘাতে তার মাথা ধড় থেকে আলাদা করে দিয়েছিল সংসারী ওঝা।
পুলিশ এই হত্যার পিছনে নরবলিই কারণ হিসাবে ধরলেও আরও বেশ কিছু সম্ভাবনাও তারা খতিয়ে দেখছে। প্রাথমিক তদন্তে তারা জানতে পেরেছে ঘটনার আগের রাতে সরোজ কুমার প্রধান ও সংসারী ওঝা - দুজনেই গাাঁজা-চরস সেবন করেছিল। পুলিশ একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নেশার দ্রব্য পেয়েছে। নেশার ঘোরে এমনটা ঘটিয়েছে কিনা ওই বৃদ্ধ পুরোহিত, সেই দিকটিও তদন্ত করা হচ্ছে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ করেছে। সেইসঙ্গে নিহতের লাশ-ও পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য। অভিযুক্ত পুরোহিতকে আটক করে তারও বিভিন্ন মেডিকেল পরীক্ষা করা হয়েছে।
স্থানীয় এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসের বিস্কতার রোধে লকডাউন দারি করা হয়েছে। ফলে দীর্ঘদিন কেউই মন্দিরে যেতে পারেননি। ওই দুইজনই সারা দিন মন্দিরে কাটাতেন। কাজেই ভিতরে ঠিক কী ঘটেছে, কারোর পক্ষেই বলা সম্ভব নয়।