সংক্ষিপ্ত
- ৪ বছর পূর্তি হল নোটবন্দি ঘোষণার
- ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর দেশজুড়ে নোটবন্দির ঘোষণা হয়
- এরপর থেকেই এই নোটবন্দি নিয়ে প্রবল বিতর্ক হয়েছে
- আরও এক বর্ষপূর্তিতেও বিতর্কেই ঘেরা থাকল নোটবন্দি প্রসঙ্গ
৮ নভেম্বর পূর্ণ হয়েছে নোটবন্দি ঘোষণার ৪ বছর। আর এহেন দিনে ফের একবার বিজেপি-র উপরে আক্রমণ শানালেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। তিনি সাফ জানিয়েছেন যে, নোটবন্দি-র ঘোষণা দেশের কাছে একটা ট্র্যাজেডি ছিল। রাহুল গান্ধীর মন্তব্যের প্রেক্ষিতে অবশ্য পাল্টা দিতে কসুর করেনি বিজেপি। দলের জাতীয় মুখপাত্র তথা রাজ্যসভার সাংসদ রাজীব চন্দ্রশেখর পাল্টা আঘাত হেনেছেন। তিনি জানিয়েছেন, আসলে বিজেপি পরিচালিত সরকারের উন্নয়নের ভাবনাকে কুর্ণিশ জানানোর ক্ষমতা কংগ্রেসের নেই।
নোটবন্দি আসলে নরেন্দ্র মোদীর একটি ষড়যন্ত্র- এমনই বক্তব্য পেশ করলেন রাহুল গান্ধী
--------------------------------------------------------------------------------------
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী রবিবার টুইটারে অভিযোগ করেন যে নোটবন্দি আসলে একটা দুর্নিতিতে ভরা চাল ছিল। অনেক পরিকল্পনা করে এবং ভাবনার মাধ্যমে নোটবন্দিকে কার্যকর করা হয়েছিল শুধুমাত্র মোদীর বন্ধু ধনকুবের-রা সাধারণ মানুষের লক্ষ-লক্ষ কোটি টাকা যাতে হাতিয়ে নিতে পারে। রাহুলের আরও লিখেছেন যে, এই টা কোনও ভুল নয়, ইচ্ছাকৃতভাবে এটা করা হয়েছিল। এই জাতীয় বিপর্যয়ের বিরুদ্ধে তার বর্ষপূর্তিতে মুখ খোলারও আহ্বান জানান রাহুল।
বিজেপি সাংসদ তথা জাতীয় মুখপাত্র রাজীব চন্দ্রশেখরের উত্তর রাহুল-কে
----------------------------------------------------------------------------
তবে, রাহুলকে পাল্টা উত্তর দিতে ছাড়েনি বিজেপি। তাদের জাতীয় মুখপাত্র রাজীব চন্দ্রশেখর এক সাংবাদিক সম্মেলন করে জানান, বিরোধীরা এখনও এই নিয়ে মিথ্যাপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। বরং নোটবন্দির বর্ষপূর্তির জন্য তিনি সকলকে ধন্যবাদ জানান। সেইসঙ্গে অভিযোগ করেন, আসলে ২০১৪ সাল থেকে বিরোধীদের কাছে কোনও ইস্যুই নেই। তাই সুযোগ পেলেই কোনও না কোনওভাবে মোদী সরকারের ইমেজটাকে ম্লান করাটা একটা রুটিন ওয়ার্ক হয়ে গিয়েছে বিরোধীদের কাছে।
রাজীব জানিয়েছেন, নোটবন্দির পিছনে ছিল তিন লক্ষ্য
-----------------------------------------------------
রাজীব চন্দ্রশেখর জানিয়েছেন, নোটবন্দির পিছনে ছিল তিনটি লক্ষ্য। প্রথম লক্ষ্যটি ছিল দেশের আর্থিক হালকে সুদৃঢ় করা। দ্বিতীয় লক্ষ্য ছিল হাওলার মাধ্যমে যে অর্থ দেশে ঢুকছিল এবং সন্ত্রাসবাদের পিছনে বিনিয়োগ করা হচ্ছিল তাকে আটকানো। তৃতীয় লক্ষ্যের কথা বলতে গিয়ে রাজীব বলেন, প্রতিটি নাগরিকদের আয় যাতে বাড়ে এবং তারা যাতে প্রতিটি সরকারি স্কিম থেকে আর্থিক লাভ তুলতে পারে।
ডিজিট্যাল ট্র্যান্স্যাকশনে বৃদ্ধি
------------------------------
এদিকে, নোটবন্দির বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বিজেপি-র পক্ষ থেকেও এদিন টুইট করা হয়। এতে বলা হয়, নোটবন্দির পর দেশে ডিজিটাল লেনদেন বিশালরকমের উন্নতি এসেছে। ২০২০ সালের অক্টোবরে দেশে ২০৭.১৬ কোটি ডিজিটাল লেনদেন ভারতে হয়েছে বলেও দাবি করেছে বিজেপি। এমনকী, এনপিসিআই, ইউপিআই-এর মাধ্যমে এখন পর্যন্ত লেনদেনেরও মোট মূল্য ৩.৮৬ লাখ কোটি টাকা বলে এই টুইটে জানানো হয়েছে।
নোটবন্দির জেরে ক্ষুদ্র শিল্পে প্রভাব
-------------------------------------
চার বছর আগে গভীররাতে নোটবন্দির কথা ঘোষণা করেছিল সরকার। মূলত রাতারাতি ১০০০ হাজার টাকার এবং ৫০০ টাকার নোটকে বাতিল বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। তার বদলে নতুন ২০০০ টাকা, ৫০০ টাকা এবং ২০০ টাকার নোটকে বাজারে নিয়ে আসা হয়। পুরনো ১০০০ টাকা এবং ৫০০ টাকার নোট জমা করার জন্য একটা নির্দিষ্ট সময়সীমাও বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। নোটবন্দির জেরে হওয়া অসুবিধাকে আজও বুলতে পারেনি দেশের অধিকাংশ মানুষ। সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছিল ক্ষুদ্র শিল্পে। কারণ নগদ অর্থের অভাবে এই ক্ষেত্রে ব্যবসায়িক লেনদেন প্রায় স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। বহু মানুষ কাজ হারিয়েছিলেন।
কী কারণে নোটবন্দি
---------------------
নোটবন্দির জন্য অসংখ্য কারণকে দর্শিয়েছিল মোদী সরকার। তাদের যুক্তি ছিল কালো অর্থের লেনদেনকে আটকানো থেকে শুরু করে নকল নোট-কে কারবার যা সন্ত্রাসবাদে মদত দিচ্ছিল তাকে আঘাত করা, নগদহীন লেনদেনকে বাড়ানো এবং নকশালদের কার্যকলাপকে বাধা দেওয়া-র জন্যই এই নোটবন্দি-র ঘোষণা হয়েছিল। বিজেপি দাবি করেছে, নোটবন্দির জেরে কর আয় বেড়েছে এবং যে কালো অর্থ দেশের অর্থনীতিতে কোনও কাজে লাগছিল না তা এখন দেশের অর্থনীতিকে শক্তি জোগাচ্ছে,। তবে, এবারও কালো টাকা উদ্ধার এবং এখনও অর্থনীতির বাইরে পড়ে থাকা কালো টাকার পরিমাণ নিয়ে কোনও হিসাব প্রকাশ করেনি বিজেপি। আরবিআই জানিয়েছে, নোটবন্দির সময় যে ১০০০ টাকা এবং ৫০০ টাকার নোট বাতিল হয়েছিল তার ৯৯.৩০ শতাংশ ব্যাঙ্কে ফিরে এসেছে।