সংক্ষিপ্ত

সেনাবাহিনীর দাবি, গত কয়েক বছরে অনুপ্রবেশ কমেছে। তবে ২০২২ সালে আধিকারিকরা জানিয়েছেন যে এলওসি জুড়ে অনুপ্রবেশের জন্য বিভিন্ন 'লঞ্চ প্যাডে' প্রায় ২৫০ জঙ্গির উপস্থিতির বিষয়ে গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে।

পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে (পিওকে) সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে প্রায় ২৫০ জঙ্গির উপস্থিতি সম্পর্কে গোয়েন্দা তথ্য মিলেছে। সূত্র জানাচ্ছে নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বরাবর সীমান্তের ওপার থেকে যে কোনও হামলার ষড়যন্ত্র রুখতে সতর্ক রয়েছে সেনা। গত বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও নিয়ন্ত্রণরেখার কাশ্মীরের উত্তরের অংশ, কেরান সেক্টরের ফরোয়ার্ড পোস্টে অবস্থানরত সেনাবাহিনী হাই অ্যালার্টে রয়েছে। 

এই সীমান্তে দুই ফ্রন্টে সৈন্যরা লড়াই করে। একদিকে প্রতিবেশী শত্রুর ওপর নজর রাখে, অন্যদিকে প্রচণ্ড শীতের মুখেও পড়তে হয়। সেনাবাহিনীর দাবি, গত কয়েক বছরে অনুপ্রবেশ কমেছে। তবে ২০২২ সালে আধিকারিকরা জানিয়েছেন যে এলওসি জুড়ে অনুপ্রবেশের জন্য বিভিন্ন 'লঞ্চ প্যাডে' প্রায় ২৫০ জঙ্গির উপস্থিতির বিষয়ে গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে। "অতএব, আমরা পূর্ণ সতর্কতা অবলম্বন করছি," একজন সেনা কর্মকর্তা বলেছেন।

জঙ্গিদের অনুপ্রবেশ ছাড়াও সীমান্তের ওপার থেকে মাদক চোরাচালান নিয়েও উদ্বিগ্ন সেনাবাহিনী। সম্প্রতি, জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের ডিজিপি দিলবাগ সিং বলেছিলেন যে আন্তঃসীমান্ত মাদক চোরাচালান বাড়ছে এবং পাকিস্তান কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদে অর্থায়নের জন্য এটি ব্যবহার করছে।

উত্তর কাশ্মীর অঞ্চলে নিয়ন্ত্রণ রেখা রক্ষাকারী সেনা কেবল প্রতিবেশী শত্রুর দিকেই নজর রাখে না, তাদের প্রতিকূল আবহাওয়া সম্পর্কেও সচেতন থাকতে হয়। এই এলাকায় শীতকালে ১৫-২০ ফুট পর্যন্ত তুষার জমে থাকে এবং কমপক্ষে চার মাস ধরে এই অঞ্চলের দেশের বাকি অংশের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। শীত ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে সেনাদের লড়াইও কঠিন হতে চলেছে। জম্মু ও কাশ্মীরের কুপওয়ারা জেলার কেরান সেক্টরের একটি পোস্টে নিযুক্ত একজন সৈনিক পিটিআইকে বলেছেন, "এটি একটি চড়াই-উতরাই যুদ্ধ। এই এলাকায় জীবন খুবই কঠিন।"

এই সেনা পোস্টগুলি অনুপ্রবেশের রুটের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষার প্রথম লাইন। এর মধ্যে কয়েকটি ফাঁড়ি ১২ হাজার ফুট পর্যন্ত উচ্চতায় রয়েছে। একজন সেনা কর্মকর্তা বলেন, "টপোগ্রাফি ছাড়াও, এখানকার আবহাওয়াও খুব প্রতিকূল, যখন তুষারপাত হয়, তখন এখানে খুব ঠাণ্ডা হয়ে যায়। ২০ ফুট পর্যন্ত তুষার জমে থাকে এবং তিন-চার মাস পর্যন্ত বরফ জমে থাকে।"

ভারী তুষারপাতের কারণে রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শীতের মরসুমে সেনাদের এই ধরনের পোস্ট বা তাদের বেস ক্যাম্পে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সংরক্ষণ করতে হয়। এই দিনগুলিতে হেলিকপ্টারই একমাত্র পরিবহণ মাধ্যম। "যখন তুষার জমে যায়, তখন রাস্তা, অনেক বাঙ্কার এবং অন্যান্য পরিকাঠামোও দেখা যায় না। 

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে যুদ্ধবিরতি চুক্তির পর থেকে, এই বছর এ পর্যন্ত অনুপ্রবেশ অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। তবে পাকিস্তান তার পুরনো পথে ফিরে যাওয়ার শঙ্কা রয়ে গেছে। নিরাপত্তা সংস্থার কর্মকর্তারা বলেছেন, "সব সময় এই আশঙ্কা থাকে যে পাকিস্তান তুষারপাতের আগে অনুপ্রবেশ বাড়াতে পারে।" 

তিনি বলেন, এটা বছরের পর বছর ধরে হয়ে আসছে এবং এটা যে আর হবে না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। জম্মু ও কাশ্মীরের ৭৪৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এলওসি-র মধ্যে প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার কাশ্মীর উপত্যকায় এবং ৫৫বকিলোমিটার কেরান সেক্টরে রয়েছে।