সংক্ষিপ্ত
জাপানের (Japan) রেনকোজি মন্দির (Renkoji Temple) থেকে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর চিতাভস্ম (Ashes of Netaji Subhash Chandra Bose) ফিরিয়ে আনার দাবি জানালেন অভিনেতা তথা রাজনীতিবিদ পবন কল্যাণ (Pawan Kalyan)। টুইটারে ট্রেন্ড করছে 'রেনকোজি টু রেডফোর্ট' (#RenkojiToRedfort) এবং 'ব্রিং ব্যাক নেতাজি অ্যাসেজ' (#BringBackNetajiAshes), শুরু হয়েছে মহা-বিতর্ক।
টুইটার ছেয়ে গিয়েছে 'রেনকোজি টু রেডফোর্ট' হ্যাশট্যাগে (#RenkojiToRedfort)। বৃহস্পতিবার, জাপানের (Japan) রেনকোজি মন্দির (Renkoji Temple) থেকে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর চিতাভস্ম ভারতে ফিরিয়ে আনার দাবি জানালেন তেলুগু ফিল্মের (Telugu Film) নায়ক তথা জনসেনা পার্টির (Jansena Party) নেতা পবন কল্যাণ (Pawan Kalyan)। হায়দরাবাদের শিল্পকলাবেদিকায় (Shilpakalavedika in Hyderabad) এক বইপ্রকাশ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিতে গিয়ে নেতাজির চিতাভস্ম (Ashes of Netaji Subhash Chandra Bose) ফিরিয়ে আনার বিষয়ে বিভিন্ন সরকারের ব্যর্থতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। আর এই নিয়েই শুরু হয়েছে মহা-বিতর্ক।
এদিন, বিশিষ্ট সাংবাদিক এমভিআর শাস্ত্রীর (MVR Shastri) লেখা 'নেতাজি' নামে একটি বই প্রকাশ করেন তেলুগু ফিল্মস্টার তথা রাজনীতিবিদ। একইসঙ্গে, 'রেনকোজি টু রেডফোর্ট' এবং 'ব্রিং ব্যাক নেতাজি অ্যাসেজ' (#BringBackNetajiAshes) বলে দুটি হ্যাশট্যাগেরও উন্মোচন করে, নেতাজির চিতাভস্ম ভারতে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সরকারকে চাপ দিতে জন-সমর্থন আহ্বান করেন পবন কল্যান। তিনি বলেন, একমাত্র দেশের জনগণই সরকারকে চাপ দিয়ে এই কাজ করাতে পারে।
তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতার জন্য লড়াই করা শহিদদের ভুলে যাওয়াটা লজ্জার। নেতাজিকে সম্মান জানাতে, ১০০ টাকার নোটে তাঁর ছবি ছাপার দাবিও তুলেছেন জনসেনা নেতা। প্রধানমন্ত্রী হিসাবে জাপান সফরকালে অটলবিহারি বাজপেয়ী (Atal Bihari Vajpayee) যে নেতাজির ভস্ম ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এবং রেনকোজি মন্দিরের 'ভিসিটর্স বুকে' সেই কথা লিখেও এসেছিলেন - তাও মনে করিয়ে দেন তিনি। বক্তৃতায় শেষ অংশে প্রবল আবেগাপ্লুত হয়ে পবন কল্যান বলেন, 'আমাকে মুখ্যমন্ত্রী করার জন্য নয়, নেতাজির চিতাভস্ম ফিরিয়ে আনার জন্য আপনার সমর্থনের অনুরোধ জানাচ্ছি'।
এরপর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় 'রেনকোজি টু রেডফোর্ট' এবং 'ব্রিং ব্যাক নেতাজি অ্যাসেজ' হ্যাশট্যাগ দুটি ট্রেন্ড করতে শুরু করে। সেই সঙ্গে, নেতাজির ১২৫তম জন্মবর্ষে (Netaji's 125th Birth Year) নতুন করে শুরু হয়েছে এক পুরোনো বিতর্কও। নেতাজি পরিবারের একাংশ এবং একটি বড় অংশের নেতাজি গবেষক ও ঐতিহাসিকরা মনে করেন, জাপানের রেনকোজি মন্দিরে যে চিতাভস্ম রয়েছে তা আদৌ নেতাজির নয়। কারণ, তাইহোকুতে (Taihoku) কোনও বিমান দুর্ঘটনাও ঘটেনি এবং সেখানে নেতাজির মৃত্যুর কোনও প্রশ্নই নেই। ব্রিটিশ বাহিনীর চোখে ধুলো দেওয়ার জন্য, নেতাজি নিজেই ওই দুর্ঘটনার কাহিনি ফেঁদেছিলেন।
মুখার্জি কমিশনও (Mukherjee Commission) মৌখিক সাক্ষ্যের ভিত্তিতে বিমান দুর্ঘটনাকেই স্বীকৃতি দিলেও, তার সিদ্ধান্তে জানিয়েছিল, সেই সাক্ষ্যগুলি নির্ভরযোগ্য নয়। কারণ, সুভাষ বসু যাতে নিরাপদে সোভিয়েত রাশিয়ায় (Soviet Russia) পালিয়ে যেতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে একটি গোপন পরিকল্পনা করা হয়েছিল। যে বিষয়ে জানত জাপানি কর্তৃপক্ষ এবং হাবিবুর রহমান (Habibur Rahman)। নেতাজির বিশ্বস্ত সহচর এই কমান্ডার হাবিবুর রহমানই কলকাতায় শরৎ বসুর (Sarat Bose) সঙ্গে দেখা করে নেতাজির বিমান দুর্ঘটনার কথা জানিয়েছিলেন।
তবে, সুগত বসুর মতো নেতাজির পরিবারের আরেক অংশ মনে করেন রেনকোজি মন্দিরের চিতাভস্ম, নেতাজিরই। এই নিয়ে দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে বিতর্ক চলে আসছে।