অবশেষে ৭ বছরের প্রতিক্ষার অবসান ফাঁসি হল নির্ভয়ার ৪ অপরাধীর নির্ভয়ার মায়ের মত আবেগে ভাসল দিল্লিও জেলের বাইরে চলল মিষ্টি বিতরণ

শুধু নির্ভয়ার পরিবার নয়, কোটি কোটি ভারসবাসীও অপেক্ষা করছিল দিনটার। সাত বছর ধরে এক দীর্ঘ লড়াইয়ের অবসান হল শুক্রবার ভোরে। রাতভর নাটক চলার পর দিল্লির তিহাড় জেলে সূর্য ওঠার আগেই ফাঁসিকাঠে ঝুলিয়ে দেওয়া হয় নির্ভয়া চার অপরাধীকে। 

নিয়ম মেনেই এদিন ভোরে মুকেশ সিংহ, বিনয় শর্মা, পবন গুপ্তা ও অক্ষয় ঠাকুরের মেডিক্যাল চেক-আপ হয়। ফাঁসির আগে সকলেই সুস্থ ছিল বলে জেল কর্তৃপক্ষ সূত্র জানা যাচ্ছে। 

আরও পড়ুন: এতদিনে ন্যায়বিচার পেল মেয়ে, জেল কর্তৃপক্ষ এসে খবর জানাতেই হাসি ফুটল বাবার মুখে

এর আগে দুবার ফাঁসি পিছিয়েছিল নির্ভয়ার দোষীদের। এবারও ফাঁসি পিছোতে নানা কৌশল অবলম্বন করেছিল চার দোষী ও তাদের পরিবার। এমনকি ফাঁসির নির্দিষ্ট সময়ের ৪ ঘণ্টা আগেও সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল নির্ভয়ার ধর্ষকদের আইনজীবীরা। শীর্ষ আদালতে রাতভর চলে শুনানি। ফাঁস ফের পিছিয়ে যার কিনা তা নিয়ে তখন নির্ভয়ার মা-বাবার সঙ্গে উৎকন্ঠায় সময় গুনছিল দিল্লিবাসীও।

শুক্রবার ভোর সাড়ে পাঁচটায় ফাঁসি হয় চার ধর্ষকের। তার আগে থেকেই তিহাড় জেলের সামনে ভিড় জমিয়েছিলেন অসংখ্য মানুষ। ফাঁসির খবর আসতেই শুরু হয় মিষ্টি বিতরণ। 

Scroll to load tweet…

২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর রাতে রাজধানীর রাস্তায় চলন্ত বাসের মধ্যে গণধর্ষণের শিকার হতে হয়েছিল প্যারামেডিক্যালের ছাত্রী ২৩ বছরের এক তরুণীকে। নির্মম অত্যাচারের ১৩ দিন পর ২৯ ডিসেম্বর মৃত্যু হয়েছিল তাঁর। সেই সময় নির্ভয়ার ধর্ষণ ও খুন দেশবাসীকে আলোড়িত করেছিল। দ্রুত বিচারের জন্য প্রবল চাপ তৈরি হয়েছিল সরকারের উপর। যদিও এই দীর্ঘ লড়াইয়ের ৭ বছর পর ফাঁসির মঞ্চে উঠল নির্ভয়ার ৪ অপরাধী।

আরও পড়ুন: ৭ বছর পর শান্তি পেয়েছে মেয়ের আত্মা, বাঁধ মানল না বালিয়াও

নির্ভয়াকাণ্ডের বিচার চেয়ে সেই সময় বিক্ষোভে উত্তাল হয়েছিল রাজধানী। নির্যাতিতার বিচার চেয়ে রাস্তায় নেমেছিলেন দিল্লিবাসী। এদিন করোনা আতঙ্কের মধ্যেও তিহাড় জেলের সামনে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মত। তবে পরিস্থিতি সামলাতে লকডাউন করতে হয় জেল কর্তৃপক্ষকে। আর বহু প্রতিক্ষিত খবর এসে পৌঁছতেই আবেগে ভেসে যান সকলে। চলে একে অপরকে মিষ্টিমুখ।

Scroll to load tweet…

নির্ভয়ার মা আশাদেবীর সঙ্গে ন্যায়বিচারের এই দীর্ঘ লড়াইয়ে যে তারাও সামিল ছিলেন রাত জেগে সেটাই যেন বোঝালেন দিল্লিবাসী।

বৃহস্পতিবার রাত থেকেই তিহার জেলের সামনে ভিড় জমাতে শুরু করেন অনেকে। দূর-দূরান্ত থেকে আসা সেই শুভানুধ্যায়ীদের হাতে ভারতের পতাকা। রাতজাগা চোখগুলি অপেক্ষায় ছিল সেই মুহূর্তের যখন ফাঁসিকাঠে ঝোলানো হবে ৪ দোষীকে। ঠিক ভোর সাড়ে ৫টায় তিহার জেলের ডিরেক্টর জেনারেল সন্দীপ গোয়েল জানালেন, নির্ভয়া ধর্ষণ কাণ্ডে চার দোষী বিনয়, মুকেশ, পবন ও অক্ষয়কে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। ৩০ মিনিট তাদের ঝুলিয়ে রাখা হবে। সেই ঘোষণার পরই আনন্দে লাফিয়ে ওঠেন জেলের সামনে উপস্থিত জনতা। শুরু হয়ে যায় মিষ্টি বিতরণ। আর তাই তিহার জেলের বাইরে ভোরবেলা যেন উৎসবের মেজাজ।