বুধবার আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণীঝড় যশ সাইক্লোন মোকাবিলায় বৈঠক মোদীর  উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে হাজির অমিত শাহ  একগুচ্ছ নির্দেশ দিলেন প্রধানমন্ত্রী 

বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া র্ঘূর্ণীঝড় ধেয়ে আসছে উপকূলের দিকে। ক্রমশই শক্তি সঞ্চয় করছে 'যশ'। প্রাকৃতিক তাণ্ডব মোকাবিলা ও সমগ্র পরিস্থিতি মোকাবিলায় রবিবার উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই বৈঠকেই প্রধানমন্ত্রী দ্রুতার সঙ্গে উপকূলবর্তী নিচু এলাকার বাসিন্দাদের সরিয়ে নিরাপদ স্থানে নিয়ে আসার নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে ঝড়ের পর দ্রুততার সঙ্গে বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ নেটওয়ার্ক দ্রুততার সঙ্গে পুনরুদ্ধারের নির্দেশ দিয়েছেন। প্রবীণ সরকারি কর্মকর্তাদের পাশাপাশি এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জারীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কর্মকর্তা, টেলিকম. বিদ্যুৎ, বেসামরিক বিমান চলাচল, অর্থ বিজ্ঞান মন্ত্রকের সচিবরাও। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহও এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। অংশ নিয়েছিলেন অন্যান্যা মন্ত্রীরাও। 


ঘূর্ণীঝড় 'যশ' মোকাবিলায় অঞ্চলিক কর্মকর্তাদের কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে তারও নির্দেশ দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও পিআইবি থেকে জানান হয়েছে, প্রাকৃতি দুর্যোগ মোকাবিলায় কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তাও সবিস্তারে প্রধানমন্ত্রীকে জানান হয়েছে। আধিকারিকরা জানিয়েছে উপকূলরক্ষী বাহিনী, নৌবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। অনুসন্ধান আর উদ্ধারকাজের জন্য জাহাজ, হেলিকপ্টার মোতায়েন করা হয়েছে। নৌকা ও উদ্ধার সরঞ্জামসহ বিমান বাহিনী ও ইঞ্জিনিয়ার টাস্কফোর্স ইউনিটগুলি স্ট্যান্ডবাই রাখা হয়েছে। মানবিক সহায়তা ও দুর্যোগ ও ত্রাণ ইউনিটসহ সাতটি জাহাজ পশ্চিম উপকূলের স্ট্যান্ডবাই রয়েছে। 

Scroll to load tweet…

পেট্রোলিমায় ও প্রাকৃতিত গ্যাস মন্ত্রক জানিয়েছে সমুদ্রের সমস্ত তেল স্থাপন নিপরাপদ করতে তাদের শিপিং জাহাজগুলিকে নিরাপদ বন্দরে ফিরিয়ে আনার কাজও শুরু হয়েছে। বিদ্যুৎ মন্ত্রক জানিয়েছে, জরুরি প্রতিক্রিয়ার ব্যবস্থা করেছে। জরুরিভিত্তিতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার জন্য স্ট্রান্সফর্মার, ডিজি সেট রাকা হয়েচে। টেলিকম টাওয়ার ও এক্সচেঞ্জগুলিতে নজরদারী চালান হচ্ছে বলেও জানিয়েছে টেলিকম মন্ত্রক। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় দ্রুত ত্রাণ ও ওষুধ পাঠানোর জন্য প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার মন্ত্রক। 

প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে এনডিআরএফ। সংস্থার পক্ষ থেকে জানান হয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ৪৬টি দল কাজ ইতিমধ্যেই মোতায়েন করা হয়েছে। ১৩টি জল আজ থেকেই বিমানের মাধ্যমে উপকূলবর্তী নিচু এলাকার মানুষদের সরিয়ে নিরাপদ স্থানে নিয়ে আসার কাজ শুরু করেছে। এছাড়াও ঘুর্ণীঝড় মোকাবিলায় কী কী পজক্ষেপ গ্রহণ করা হবে তা নিয়ে প্রচার চালান হচ্ছে সংশ্লিষ্ট এলাকায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী উপকূলবর্তী মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজে রাজ্য ও কেন্দ্রের সমন্বয়ের ওপর জোর দিয়েছেন। 

করোনাকালে এই প্রকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় করোনা বিধি মানা থেকে শুরু করে টিকাকর্মসূচি- একাধিক বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেনেছেন কোভিড হাসপাতালগুলিতে যাতে চিকিৎসা ও টিকাকর্মসূচি যাতে বাধা না পায় তার জন্য রাজ্য সরকারের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে কাজ করতে হবে। কোভিড হাসপাতালগুলিতে যাতে আলো ও জলের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখা হয় সেদিকেও জোর দিয়েছেন তিনি। ঘূর্ণীঝড় চলাকালীন কী কী করতে হবে আর কী কী করা যাবে না - সেই নিয়মাবলী যাতে স্থানীয় ভাষায় প্রচার করা হয় সেদিকেও জোর দেন।তবে রাজ্য সরকারের সঙ্গে সমন্বয়য়ের ওপরেও বিশেষ জোর দিয়েছেন তিনি। 

ভারতের আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে খুব মারাত্মক ঘূর্ণীঝড়ের আকার ধারন করছে যশ। এটি আগামী ২৬ মে সন্ধ্যেবেলা বাংলা ও ওড়িশা উপকূলবর্তী এলাকায় আছড়ে পড়তে পারে। সেইসময় ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ১৫৫-১৬৫ কিলোমিটার থাকতে পারে। ঝড়ের কারণে জলস্ফীতি হওয়ার আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন আবহাওয়া দফতর। বলা হয়েছে ২-৪ মিটার পর্যন্ত জল বড়ে যেতে পারে উপকূলবর্তী এলাকায়।