সংক্ষিপ্ত
বিয়ের ২৮ বছর পররে বিশেষ বিবাহ আইনের অধীনে নিজের স্ত্রীকেই বিয়ে করলেন মালায়ালম অভিনেতা ও আইনজীবী। তবে বিয়ের পরই হুমকি পেয়েছেন।
মালায়ালম অভিনেতা ও আইনজীবী শুকুর ও কান্নুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের প্রধান বিয়ের ২৮ বছর পরে আরও এবার বিয়ের আসরে বসলেন। বুধবার সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে হোজদুর্গ সাব রেজিস্ট্রার অফিসে বিশেষ বিবাহ আইনের অধীনে তাঁদের দ্বিতীয় বিয়েটি সম্পন হয়। মহিলাদের বিশেষ সম্মান জানানোর উদ্দেশ্যেই আন্তর্জাতিক নারীদিবসকেই দ্বিতীয় বিয়ের জন্য বেশে নিয়েছিলেন কর্তা ও গিন্নি। বিশেষ এই বিয়ের অতিথির তালিকায় ছিলেন দম্পতির তিন সন্তান- খাদিজা, ফাতেমা জেবিন ও ফাতেমা জেসা। বিয়ের সাক্ষী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেরলের সিপিএম নেতা ভিভি রমেশ।
কিন্তু দ্বিতীয় বিয়ের কারণ কী? মুসলিম মহিলাদের ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী যাদের প্রথম বিয়ে হয়েছিল তাদের বিশেষ বিবাহ আইনের অধীনে বিয়ে করা হয়। আইনজীবী জানিয়েছেন, তিনি মুসলিম ব্যক্তিগত আইনের বিধানগুলি বাইপাস করার জন্য ও তাঁর কন্যাসন্তানদের সম্পূর্ণরূপে তাঁর সম্পত্তির অধিকার দেওয়ার জন্যই দ্বিতীয়বার বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন। কারণ মুসলিম রীতি অনুযায়ী বা মুসলিম উত্তরাধিকার আইন অনুসারে পুত্র থাকলে সেই তার বাবা ও মায়ের সম্পত্তির অধিকারী হবে। কিন্তু কন্যারা পাবে মাত্র দুই তৃতীয়াংশ। বাকি অংশ পাবে বাবার ভাই অর্থাৎ কাকার। কিন্তু শুকুর তাঁর সম্পত্তি তিন মেয়েকে দিয়ে যেতে চান বলেও দ্বিতীয়বার বিশেষ আইনে বিয়ে করেন।
আইনজীবীর ফেসবুক পোস্টঃ শুকুর জানিয়েছেন এই দ্বিতীয় বিয়ে নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে অনেক কথাই বলা হচ্ছে। তিনি বলেছেন এই বিয়ের নাটকটি তাঁর তিন কন্যার তাঁর সম্পত্তিতে আইনি অধিকার ছাড়া আর কিছুই নয়। তিনি চান তাঁর ও তাঁর স্ত্রীর সমস্ত উপার্জন যাতে তাঁর তিন কন্যা পান তাই নিশ্চিত করা।
বিয়ের ঝক্কিঃ এই বিয়ের জন্য তাঁকে অনেক ঝক্কি পোহাতে হয়েছে। তাঁকে হুমকির মুখেও পড়তে হয়েছে। কাউন্সিল ফর ফেটওয়া অ্যান্ড রাসির্চ দ্বারা প্রকাশিত নোট অনুসারে এটি খুবই বিদ্রুপজনক যে, যে ব্যক্তি জীবনে ইসলামিক আইন অনুসরণ করার দাবি করেন তিনি বিশেষ আইন অনুসারে দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন। সংস্থার পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, এই ধারনাগুলি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা সম্পর্কে ইসলামকে অসম্মান করা ছাড়া আর কিছুই নয়। ইসলামে উত্তরাধিকার আইনটি হল একজন ব্যক্তির মৃত্যুর পর তাঁর সম্পত্তি যথাযথ মালিকানায় চলে যাওয়ার বিধিনিয়ম। জীবনদশায় মেয়েদের পুরো সম্পত্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও বাধা নেই। ইসলামে।
শুকুরের জবাবঃ আইনজীবী বলেছেন কোনও ধর্মীয় নিয়ম লঙ্ঘন করেননি। কোনও ধর্মীয় বিশ্বাসেও আঘাত করেননি। তিনি শুধুমাত্র তাঁর মেয়েদের ভবিষ্যৎ নিরাপদ করতে চেয়েছিলেন।
নিরাত্তার ঘেরাটোপে শুকুর ও তাঁর পরিবারঃ এই চাপানউতোরের মধ্যেই শুকুরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে স্থানীয় প্রশাসন। তাঁর বাড়িতে নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করা হয়েছে। এটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, শুকুরের প্রাণনাশের সম্ভাবনা কয়েছে। তাই নিরাপত্তাও জোরদার করা হয়েছে।