সংক্ষিপ্ত
মঙ্গলবার, শপথ নেবেন গোয়ার (Goa) নব নির্বাচিত বিধায়করা। তবে, মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, প্রমোদ সাওয়ান্ত (Pramod Sawant) না বিশ্বজিৎ রানে (Vishwajit Rane) - এই নিয়ে প্রবল দ্বিধায় বিজেপি (BJP)।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ভোটগ্রহণ করা হয়েছিল গোয়ায় বিধানসভা নির্বাচনের (Goa Elections 2022)। ১০ মার্চ ফলাফল বেরিয়েছে, ভারতীয় জনতা পার্টি (BJP) রাজ্যের বৃহত্তম দল হিসাবে উঠে এসেছে। তবে, তাতেও নির্বাচনী নাটকের যবনকা পতন হয়নি। মঙ্গলবারই (১৫ মার্চ) শপথ গ্রহণ করবেন রাজ্যের বিধায়করা। তার আগে, মুখ্যমন্ত্রী কে হবে, এই বিষয় নিয়ে দুই ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছে গেরুয়া শিবির।
বিধানসভা নির্বাচনে, বিজেপি ২০টি আসনে জিতে বিপুল জয় পেয়েছে। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার থেকে মাত্র একটি কম আসন জিতেছে। তবে, তিনজন নির্দল বিধায়ক এবং মহারাষ্ট্রবাদী গোমন্তক পার্টির (MGP) দুই বিধায়কের বিজেপিকে নিঃশর্ত সমর্থন দিয়েছে। ফলে, ৪০-সদস্যের রাজ্য বিধানসভায় সরকার পক্ষের শক্তি দাঁড়াচ্ছে ২৫। তবে, সরকার যতটা সহজে গড়তে পেরেছে বিজেপি, মুখ্যমন্ত্রীর পদ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কাজটা ততটা সহজ হচ্ছে না।
মুখে বিজেপি নেতারা বলছেন, ১০ থেকে ১৭ তারিখের মধ্যে কোনও শুভদিন নেই। তাই, মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করা যাচ্ছে না। আবার কখনও বলছেন, উত্তরাখণ্ডের (Uttarakhand) মুখ্যমন্ত্রীর নাম বাছাই হয়নি। চার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের নাম একসঙ্গে ঘোষণা করা হবে। তাই অপেক্ষা করা হচ্ছে। কিন্তু, দলীয় সূত্রের খবর হল, বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ান্ত (Pramod Sawant) জয়ী হলেও, তাঁকেই সেই পদে রেখে দেওয়া হবে কিনা, তাই নিয়ে দলের মধ্যে দ্বিধা রয়েছে। এই শীর্ষপদ পাওয়ার দৌড়ে আছেন, ২০১৭ সালে কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে পাড়ি দেওয়া এবং এবার ভালপোই বিধানসভা আসন থেকে বিজেপির টিকিটে বিজয়ী হওয়া বিশ্বজিৎ রানেও (Vishwajit Rane)।
সূত্রের দাবি, গোয়া বিজেপি ইউনিটের সমর্থন রয়েছে, প্রমোদ সাওয়ান্তের দিকেই। কিন্তু, সিএনএন-নিউজ১৮-এর খবর অনুযায়ী, বিজেপির দিল্লির নেতাদের কারো কারোর সঙ্গে বিশ্বজিৎ রানের সম্পর্ক খুব ভাল। তাঁরা চাইছেন, উপকূলীয় রাজ্যটির পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে তাঁর নাম বিবেচনা করতে। রাণেকে মুখ্যমন্ত্রী করার জন্য, বিজেপি বিধায়ক নিজে এবং তাঁর সমর্থকরাও চাপ সৃষ্টি করছেন। তিনি গোয়ার প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রীও বটে। ২০১৭ সালে কংগ্রেস সরকার গড়তে ব্যর্থ হওয়ার পর, তিনি শিবির বদল করেছিলেন। গত কয়েকদিন ধরে তাঁর আচরণের ধারাবাহিকতা, দলের হাইকমান্ডের উপর চাপ সৃষ্টির চেষ্টা বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
ভোট গণনার দিন আগে, তিনি বলেছিলেন প্রমোদ সাওয়ান্ত উপকূলীয় রাজ্যের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হবেন কিনা তা তিনি বলতে পারবেন না। প্রশ্নটিকে তিনি 'সংবেদনশীল' বলেছিলেন। ৯ মার্চ, তিনি আবার হঠাৎ করে, পুরোনো দল কংগ্রেসের কর্ণাটক রাজ্যের প্রধান ডি কে শিবকুমার (DK Shivakumar) এবং আরও কয়েকজন নেতার ছবি টুইট করেছিলেন। পরে অবশ্য তা ডিলিট করে দেন।
আবার, ১২ মার্চ, তিনি গোয়ার রাজ্যপাল পিএস শ্রীধরন পিল্লাইয়ের (P.S. Sreedharan Pillai) সঙ্গে দেখা করেছিলেন। সেই বৈঠককে অবশ্য 'ব্যক্তিগত সৌজন্য সফর' বলেন তিনি। রাজ্যের মানুষ ও বিজেপি নেতাদের ধন্যবাদ দিয়ে কাগজে বিজ্ঞাপন দিয়েছেন, সবার ছবি আছে, নেই শুধু প্রমোদ সাওয়ান্তের। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে আছেন কিনা এই প্রশ্নে, তিনি শুধুই মুচকি হাসছেন।
অন্যদিকে সাওয়ান্ত শিবির মনে করছে, মুখ্যমন্ত্রীর হিসাবে প্রমোদ সাওয়ান্ত ছিলেন। তাঁকে সামনে রেখেই দল নির্বাচনে লড়েছে। তিনি ভাল শাসন করেছেন, তারই ফল পেয়েছে দল। দলের এই দুর্দান্ত জয়ে তিনিই নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাই, মুখ্যমন্ত্রী পদে, অন্য কারোর নাম ভাবার অবকাশই নেই।