সংক্ষিপ্ত
ডাক্তারি রিপোর্ট অনুসারে তাঁর স্ত্রী 'মহিলা নন' বলে সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court of India) বিচ্ছেদের (Divorce) মামলা করলেন স্বামী। এর আগে মধ্যপ্রদেশ উচ্চ আদালত (Madhya Pradesh High Court) তাঁকে ফিরিয়ে দিয়েছিল।
অদ্ভূত এক বিবাহ বিচ্ছেদের মামলার শুনানি শুরু হল সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court of India)। বিভিন্ন কারণেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদের (Divorce) মামলা হয়ে থাকে। কিন্তু, এই ক্ষেত্রে মধ্যপ্রদেশের (Madhya Pradesh) এক ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীর কাছ থেকে বিচ্ছেদ চেয়েছেন, কারণ ডাক্তারি রিপোর্ট অনুসারে তিনি 'মহিলাই নন'। আর বিয়ের পর এই কথা জানতে পেরে তাঁর স্বামী মনে করছেন তাঁর সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। এর আগে, মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট (Madhya Pradesh High Court) তাঁকে ফিরিয়ে দিলেও, গত শুক্রবার (১১ মার্চ), সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতি সঞ্জয় কিষাণ কওল (Justice Sanjay Kishan Kaul) এবং এমএম সুন্দরেশের (Justice MM Sundresh) বেঞ্চ তাঁর স্বামীর আবেদনের ভিত্তিতে, ওই মহিলাকে জবাব দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছেন।
এই ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল ২০১৬ সালে। ওই বছর বিয়ে হয়েছিল এই দম্পতির। স্বামীর অভিযোগ, বিয়ের পর বেশ কিছু দিন ধরে তাঁর স্ত্রী শারীরিকভাবে তাঁর কাছে আসেনি। ফুলশয্যা হয়নি তাঁদের। সেই সময় ওই মহিলা নাকি বলেছিলেন, তাঁর ঋতুস্রাব চলছে। এরপর তিনি বাপের বাড়ি চলে গিয়েছিলেন। দিন ছয়েক পর, আবার শ্বশুরবাড়ি ফিরে আসন। আবেদনকারীর বয়ান অনুযায়ী, এরপর তিনি তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করতেই বিরাট ধাক্কা খেয়েছিলেন। কারণ, তিনি দেখেছিলেন, তাঁর স্ত্রীর শরীরে কোনও যোনিপথ নেই। বরং, তার বদলে শিশুদের মতো একটি ছোট লিঙ্গ রয়েছে।
আবেদনকারী তাঁর স্ত্রীকে ডাক্তাররে কাছে নিয়ে যান। চিকিৎসকরা জানান, ওই মহিলা 'ইম্পারফোরেট হাইমেন' (Imperforate Hymen) নামে এক শারীরিক সমস্যা রয়েছে। এটা এমন একটা অবস্থা, যেখানে হাইমেন বা সতিচ্ছদ, যোনিপথকে ঢেকে রাখে। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তাঁর অবস্থা সারিয়ে তোলা সম্ভব, তবে চিকিৎসকরা জানান, তাঁর গর্ভাধারণের সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে। এরপরই, মন ভেঙে গিয়েছিল ওই ব্যক্তির। তাঁর মনে হয়েছিল, শ্বশুরবাড়ি থেকে তাঁর সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। শ্বশুরকে ফোন করে সটান তাঁর মেয়েকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে বলেছিলেন। শ্বশুর তা করেও ছিলেন।
তবে ঘটনা এখানে শেষ হয়নি। আবেদনকারী আদালতে জানিয়েছেন, এরপর তাঁর স্ত্রীর অস্ত্রোপচার করায় তাঁর বাপের বাড়ির লোকজন। তারপর ফের তাঁকে নিয়ে আবেদনকারীর বাড়িতে চড়াও হযেছিলেন তাঁর বাবা। রীতিমতো জামাইকে হুমকি দিয়ে মেয়েকে রেখে যান। পরে ওই ব্যক্তি পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন এবং বিবাহবিচ্ছেদের জন্য আদালতে আবেদন করেছিলেন। মধ্যপ্রদেশ উচ্চ আদালত অবশ্য তাঁর আবেদন খারিজ করে দিয়ে বলেছিল, 'শুধুমাত্র মৌখিক প্রমাণের ভিত্তিতে' প্রতারণার অভিযোগ প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। এরপরই, স্ত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষার রিপোর্ট দিয়ে শীর্ষ আদালতে আবেদন করেছিলেন তিনি। আদালতের সমন পেয়ে, ওই 'মহিলা নন' স্ত্রী কী জবাব দেন, এবার সেটাই দেখার। জবাব দেওয়ার জন্য চার সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে তাঁকে।