পুলওয়ামা হামলার চার বছর পার, ফিরে দেখা রক্তাক্ত উপত্যাকার রাজপথের নির্মম কাহিনি
- FB
- TW
- Linkdin
রক্তাক্ত রাজপথ
সালটা ছিল ২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি। জম্মু ও শ্রীনগর ন্যাশানাল হাইওয়েতে গাড়ি বোমা হামলায় ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছিল ৪০জন সিআরপিএফ জওয়ানের দেহ। রক্তে ভেসে গিয়েছিল কাশ্মীরের রাজপথ।
সিআরপিএফ কনভয়ে গাড়ি
তৎকালীন জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলার লেথাপোরাতে সিআরপিএফ জওয়ানের কনভয়ের মধ্যে ঢুকে পড়ে একটি গাড়ি। বিস্ফোরক ঠাসা সেই গাড়ি মধ্যেই ছিল হামলাকারী। গাড়ি হামলায় নিমেষেই স্তব্ধ হয়ে যায় রাজপথ। হামলার দায় স্বীকার করেছিল পাকিস্তানের জঙ্গ সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদ।
নিহত ৪০ জওয়ান
পুলওয়ামার গাড়ি বোমা হামলায় নিহত হয়েছিল সেন্ট্রাল রিজার্ভ ফোর্সের ৪০ জওয়ান। একই সঙ্গে নিহত হয়েছিল জইশ সদস্য আদিল আহমেদ দার।
৭০টি গাড়ির কনভয়
আড়াই হাজার সিআরপিএফ জওয়ানের কনভয় ছিল। ৭০টি গাড়ি করে তাদের ফিরিয়ে আনা হচ্ছিল। সেই সময়ই পাকিস্তানের জঙ্গিরা হামলা চালায়। ৭০টি গাড়ির কনভয়ের মধ্যে ঢুকে পড়ে জঙ্গিদের বিস্ফোরক ঠাসা একটি গাড়িতে। তাতে শহিদের রক্তে লাল হয় কাশ্মীর।
হামলার দিন
হামলার দিন কিন্তু জম্মু ও কাশ্মীরের আবহাওয়া খারাপ ছিল। সকাল থেকেই তুষারপাত হচ্ছিল। দীর্ঘ সময় ধরেই রাস্তা বন্ধ ছিল। বন্ধ ছিল জাতীয় সড়কও। বেলার দিকে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে রাস্তা খুলে দেওয়া হয়। সেই সয়মই হামলা হয়। তবে সেই সময় সিআরপিএফদের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল।
আদিল দার
পুলওয়ামার বাসিন্দা। একাদশ শ্রেণী থেকেই জইশের সদস্য। হামলার কেন্দ্র গুন্ডেবাগ থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরেই বাড়ি ছিল আদিল দারের। বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর থেকেই সক্রিয় আদিল। জন্মু ও কাশ্মীর পুলিশের ব়্যাডারে ছিল। একে৪৭ চালাতে পারত। হামলার কয়েক ঘণ্টা পরেই জইশ হামলার দায় করে আদিলকে বীরত্বের কথা স্বীকার করে নেয়।
আদিলের ভিডিও বার্তা
হমলার কয়েক ঘণ্টার পরই জইশ তার তার একটি ভিডিও বার্তা প্রকাশ করে। যেখানে আদিলকে রাইফেল হাতে নিয়ে বলতে শোনা গিয়েছে সে গর্বিত। এই দিনের জন্য নাকি সে অপেক্ষা করে ছিল। নিজেকে ঈশ্বরের প্রকৃত প্রচারক বলেও দাবি করেছিল।
পুলওয়ামার তদন্ত
হামলার ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব ছিল ন্যাশানাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি বা এনআরএ-র হাতে। জম্মু ও কাশ্মীর পুলিসের সঙ্গে হামলার তদন্ত করেছিল। ১২জন সদস্যের একটি দলই হামলাস্থল পরিদর্শন করেছিল।
বিস্ফোরণ ব্যবহার
প্রথমিক তদন্তে দেখা গিয়েছে, ৩০০ কিলোগ্রামের বেশি বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়েছিল। যারমধ্যে ৮০ কিলোগ্রাম আরডিএক্স ছিল। অ্যামমোনিয়াম নাইট্রেটও ব্যবহার করা হয়েছিল। বিস্ফোরক সীমান্তের ওপার থেকে এসেছিল না এই দেশ থেকে নেওয়া হয়েছিল তা নিয়ে ধ্বন্দ্ব রয়েছে। কারণ প্রথমে মনে করা হয়েছিল নির্মাণ সাইট থেকে চুরি করা হয়েছিল। কিন্ত পরে তদন্তকারীরা মনে করেছিল বিস্ফোরণের বেশিরভাগটাই পাকিস্তান থেকে আনা হয়েছিল।
পুলওয়ামার ক্ষত অব্যাহত
এখনও পুলওয়ামার ক্ষত অব্যাহত। এদিনও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সোশ্যাল মিডিয়ায় বর্তা দিয়ে শহিদদের স্মরণ করেছিলেন। আজও দেশ নিহত সিআইরপিএফ জওয়ানদের স্মরণ করে। সেনা বাহিনীরও কিছু অনুষ্ঠান থাকে।