সংক্ষিপ্ত
পঞ্জাব বিধানসভা নির্বাচনে (Punjab Elections 2022) বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা চরণজিৎ সিং চান্নিকে (Charanjit Singh Channi) পরাজিত করেছেন আপ (AAP) প্রার্থী লব সিং উগোকের (Labh Singh Ugoke)। তারপরও তাঁর মা সরকারি স্কুলের ঝাড়ু দিচ্ছেন।
পঞ্জাব বিধানসভা নির্বাচনে (Punjab Elections 2022) আম আদমি পার্টির (Aam Admi Party) বিশাল জয়ের পরই, আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়ালের (Arvind Kejriwal) মুখে শোনা গিয়েছিল তাঁর নাম। ভাদৌর বিধানসভা আসন থেকে, বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেসের প্রবল পরাক্রমী নেতা চরণজিৎ সিং চান্নিকে (Charanjit Singh Channi) পরাজিত করেছেন তিনি। সেই জয়ী আপ প্রার্থী লব সিং উগোকের (Labh Singh Ugoke) মা, পেশায় এক সরকারি স্কুলের ঝাড়ুদার। ছেলের বিশাল জয়ের পরও, লব সিং-এর মা তাঁর ঝাড়ু দেওয়ার কাজ চালিয়ে যাবেন বলেই জানিয়েছেন সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে।
পঞ্জাবের পূর্বতন মুখ্যমন্ত্রী, তথা কংগ্রেস নেতা চরণজিৎ সিং চান্নি বরাবরই নিজের 'সাধারণ মানুষ' ভাবমূর্তি তুলে ধরার চেষ্টা করে গিয়েছেন। তবে, তাঁর বিরুদ্ধে এবার ভাদৌর কেন্দ্রে একজন অতি সাধারণ ঘরের মানুষকেই প্রার্থী করে চমক দিয়েছিল আপ। সেই লব সিং, শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী লড়াইয়ে, চান্নিকে ৩৭,০০০ ভোটের ব্যবধানে হারিয়েছেন। অত্যন্ত সাধারণ ঘরের মানুষ এই লব সিং উগোকে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল জানিয়েছেন, তিনি একটি মোবাইল মেরামতের দোকানের কর্মী। নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামা অনুসারে, লব সিং উগোকের হাতে নগদ রয়েছে ৭৫,০০০ টাকার কিছু বেশি। তার স্ত্রীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে রয়েছে ৫৮,৫০০ টাকা। তিনি একজন হাই স্কুল পাস আউট।
এনএনআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে, লব সিং-এর মা বলদেব কওর (Baldev Kaur) জানিয়েছেন, বরাবর তাঁদের পরিবারকে অর্থ উপার্জনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে। ছেলে বিধায়ক হয়েছেন বলে তিনি সাফাই কর্মী হিসাবে তাঁর কাজ বন্ধ করে দেবেন এমনটা নয়। তাঁর ছেলে মোবাইলের দোকানের কর্মীই হোন বা বিধায়ক-মন্ত্রী - তিনি উগোকে গ্রামীন সরকারি বিদ্যালয়ে তাঁর ঝাড়ুদারের কাজ চালিয়ে যাবেন। তবে, আপ প্রার্থী হিসাবে তাঁর ছেলে জয়ী হওয়ায় তিনি বেশি আনন্দিত। কারণ আপ দলের নির্বাচনী প্রতীক হল ঝাড়ু। যা, তাঁর জীবনেরও একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ছেলের জয়ের বিষয়ে অবশ্য তিনি সবসময়ই আত্মবিশ্বাসী ছিলেন বলে দাবি করেছেন বলদেব।
তিনি যে স্কুলে কাজ করেন, সেখানকার প্রধান শিক্ষিকা অমৃত পাল কৌর জানিয়েছেন, লব সিংয়ের মা দীর্ঘদিন ধরে ওই স্কুলে ঝাড়ুদারের কাজ করেন। লব সিং নিজেও ওই স্কুলেই পড়াশোনা করেছেন। ভোট যুদ্ধে পরাজিত করে, তিনি তাঁর গ্রাম ও স্কুলকে বিখ্যাত করে দিয়েছেন। তবে, তাঁর মা স্কুলের কাজ চালিয়ে যেতে চান। লব সিংয়ের বাবা দর্শন সিং একসময় দিনমজুর হিসাবে কাজ করতেন। তিনিও জানিয়েছেন, ছেলের অবস্থা বদলে, তাঁর পরিবারের কোনও পরিবর্তন হবে না। আগে তাঁরা যেভাবে থাকতেন, এখনও সেই ভাবেই থাকতে চান। কারণ তাঁরা চান, তাঁদের ছেলে পরিবারের উন্নতি নয়, রাজ্যের মানুষের কল্যাণে মনোযোগী হোক।
২০১৩ সালে পঞ্জাবে আপ দলের শাখায় যোগ দিয়েছিলেন লব সিং উগোকে। দ্রুতই তিনি দলের প্রথম সারিতে উঠে এসেছিলেন। ২০১৭ সালেও তিনি ভাদৌর আসন থেকে, আপ দলের হয়ে নির্বাচনে লড়তে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেই সময় তাঁর দল রাজি হয়নি। তবে তারপরও তিনি দিনরাত এক করে দলের হয়ে কাজ করে যেতেন বলেই জানিয়েছেন তাঁর পাড়া প্রতিবেশীরা। গ্রামের মানুষ এখনও বিশ্বাসই করতে পারছেন না, তাঁদের চেনা পরিচিত লব সিং উগোকে এখন একজন নির্বাচিত বিধায়ক।