সংক্ষিপ্ত

ফৌজদারি অপরাধে ২ বছরের বেশি কারাদণ্ডের সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তি হিসেবে গণ্য করে রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজ করেছেন লোকসভার স্পিকার। সেই আইনের ধারাকেই এবার চ্যালেঞ্জ জানানো হল সুপ্রিম কোর্টে।

সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করা হল রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজের ধারাকে। জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ৮ (৩) ধারার সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে শীর্ষ আদালতে মামলা দায়ের করা হল। ‘মোদী’ পদবি নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে ২০১৯ সালের ফৌজদারী মানহানি মামলায় ২ বছরের কারাদণ্ডের সাজা পেয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, এই সাজা ঘোষণার পরেই খারিজ হয়েছে রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ। এই নিয়েই তোলপাড় হয়ে ওঠে গোটা দেশের রাজনীতি। মোদী সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ভারতীয় সংবিধানের ১০২(১)-ই অনুচ্ছেদ এবং জনপ্রতিনিধিত্ব আইন (১৯৫১)-র ৮(৩) নম্বর ধারা মেনেই শুক্রবার রাহুলের সাংসদ পদ খারিজ করেছেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। ৮(৩) ধারার স্পষ্ট বলা হয়েছে, দোষী কোনও সাংসদ-বিধায়কের ২ বছরের বেশি সাজা হলেই পদ খারিজ হয়ে যাবে।

জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ৮(৩) ধারায় বলা হয়েছে, ফৌজদারি অপরাধে ২ বছরের বেশি কারাদণ্ডের সাজাপ্রাপ্ত কোনও ব্যক্তি সাজা ঘোষণার দিন থেকেই জনপ্রতিনিধি হওয়ার অধিকার হারাবেন এবং মুক্তির পর অন্তত ছ’বছর পর্যন্ত ভোটে দাঁড়াতে পারবেন না। অর্থাৎ, ২ বছরের জেলে সাজা পাওয়া রাহুলের পরবর্তী ৮ বছর ভোটে দাঁড়ানো নিষেধ। যদিও উচ্চতর আদালত রায়ের উপর স্থগিতাদেশ দিলে পদ ফিরে পেতে বাধা নেই। ৮(৩) ধারার পাশাপাশি আগে জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ৮(৪) ধারা ছিল। তাতে বলা ছিল, সাংসদ-বিধায়ক দোষী সাব্যস্ত হলে তাতে স্থগিতাদেশ পাওয়ার জন্য তিন মাস সময় পাবেন। ২০১৩-য় সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রীয় সরকার বনাম লিলি টমাস মামলায় আইনের সেই ৮(৪) ধারাটি নাকচ করে রায় দিয়েছিল। জানিয়েছিল দু’বছরের কারাদণ্ডের সাজার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হলেই সাংসদ পদ চলে যাবে। পশুখাদ্য কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত লালু প্রসাদের সাংসদ পদ বাঁচাতে মনমোহন সরকার অধ্যাদেশ জারি করে সুপ্রিম কোর্টের রায় উল্টে দিয়ে পুরনো ব্যবস্থা বহাল রাখার চেষ্টা করেছিল। ঘটনাচক্রে, সে সময় রাহুলই তাতে আপত্তি তুলেছিলেন।

সুরত জেলা আদালতের বিচারক এইচএইচ বর্মা রাহুলের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করে সাজা কার্যকর ৩০ দিনের জন্য মুলতুবি ঘোষণা করেছেন। ওই সময়সীমার মধ্যে রাহুল উচ্চতর আদালতে আবেদন করতে পারবেন। কিন্তু সাজা স্থগিত রাখেননি তিনি। ফলে আইনের ৮(৩) ধারা মেনেই স্পিকার তাঁর সদস্যপদ খারিজ করেছেন। আভা মুরলীধরন নামক কেরলের এক সমাজকর্মী সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দায়ের করেছেন। জনস্বার্থ মামলায় বলা হয়েছে, কোনও সাংসদের পদ খারিজ করার আগে অভিযুক্তের ভূমিকা, মামলার প্রকৃতি, নৈতিকতা সহ একাধিক বিষয় পর্যালোচনা করা উচিত। এই পরিস্থিতিতে ওই ধারার সাংবিধানিক বৈধতা শীর্ষ আদালত খারিজ করলে ফৌজদারি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত একাধিক জনপ্রতিনিধিরা স্বস্তি পাবেন।

আরও পড়ুন-

আবার বেড়ে গেল কেন্দ্র সরকারি কর্মচারীদের ডিএ, মার্চ মাসেই অনুমোদন দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা
IGF Annual Summit 2023: বিশ্বমঞ্চে শান্তির দূত ভারত, নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে সম্মেলন
কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচনের জন্য সর্বোতভাবে প্রস্তুত কংগ্রেস, শুক্রবারই ঘোষিত হল ১২৪ জন প্রার্থীর নাম