সংক্ষিপ্ত
- ফের বিশ্বকে তাক লাগাতে চলেছে ভারতীয় রেল
- তৈরি করছে বিশ্বের উচ্চতম পায়ার রেল সেতু
- ইজাই নদীর উপত্যকায় চলছে সেতু নির্মাণের কাজ
- এই সেতু তৈরি করতে খরচ হচ্ছে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা
ইতিহাসের পাতায় ভারতীয় রেলের গৌরবজ্জ্বল বহু মুহুর্ত লিপিবদ্ধ রয়েছে। তবে এখানেই থেমে নেই ভারতীয় রেস। ফের বিশ্বকে তাক লাগানোর নতুন পরিকল্পনা নিয়েছে রেল। এবার বিশ্বের উচ্চতম রেল সেতু বানানোর কাজ ইতিমধ্যে শুরু করে দিয়েছে রেল।
উত্তর-পূর্ব ভারতে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করার লক্ষ্যে মণিপুরে বিশ্বের উচ্চতম পায়ার ব্রিজ নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে রেল মন্ত্রক। ইজাই নদীর উপরে নোনেতে এই পিয়ার সেতুটি তৈরি করা হচ্ছে।
দিল্লির বিখ্যাত কুতুব মিনারের উচ্চতা ৭৩ মিটার। আর নির্মীয়মান এই সেতুর উচ্চতা হবে ১৪১ মিটার। অর্থআৎ বলতে গেলে এই সেতু হবে কুতুব মিনারের প্রায় দ্বিগুণ। বর্তমানে বিশ্বের উচ্চতম রেলসেতু ইউরোপে মন্টেনিগ্রোর ১৩৯ মিটার উঁচু মালা-রিজেকা ভায়াডাক্ট। মণিপুরের ইজাই নদীর উপত্যকায়তৈরি হওয়া সেতুটি তাকেও ছাপিয়ে যাবে বলে জানিয়েছে রেল মন্ত্রক।
মণিপুরের সঙ্গে দেশের বাকি অংশের সংযোগে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে এই সেতু। জিরিবান-টুপুল-ইম্ফলের সংযোগকারী ব্রডগেজ লাইনের জন্য তৈকি করা হচ্ছে এই গার্ডার রেলসেতুটিকে। সম্পূর্ণ পরিকল্পনাটি ১১১ কিলোমিটারের। আর এই পিয়ার ব্রিজটি নিজেই ৭০০ মিটারের বেশি লম্বা হবে। বিশেষ নকশার স্তম্ভগুলি নির্মাণে ব্যবহার করা হচ্ছে হাইড্রলিক অগার। স্তম্ভ তৈরির কাজে লাগানো হচ্ছে ‘স্লিপ-ফর্ম টেকনিক,’ যা এই ব্রিজকে পাকাপোক্ত ভাবে কাজ করতে সাহায্য করবে।
সেতুতে ব্যবহৃত লোহার গার্ডারগুলি ওয়ার্কশপ থেকে তৈরি করিয়ে ভাগে ভাগে নির্মাণস্থলে আনা হয়েচে এবং ক্যান্টিলিভার প্রযুক্তির সাহায্যে বসানো হচ্ছে। নির্মাণ কর্মীদের স্বাচ্ছন্দ্য ও নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে প্রতিটি স্তম্ভের সঙ্গে বসানো হয়েছে স্বয়ংক্রিয় বিদ্যুৎচালিত লিফ্ট। ওই লিফ্টের সাহায্যেই নির্মাণের কাঁচামাল স্তম্ভের উপরে পৌঁছচ্ছে।
এই ব্রডগেজ প্রকল্পে মোট ৪৫টি টানেল থাকবে। তার মধ্যে ১২ নম্বর টানেলটি হবে প্রায় ১০ কিলোমিটার লম্বা। উত্তর-পূর্ব ভারতে এটিই দীর্ঘতম রেলওয়ে টানেল, জানিয়েছেন উত্তর-পূর্ব রেলের এক আধিকারিক। এই সেতু তৈরি করতে খরচ হচ্ছে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা। আর ব্রগগেজ রেল প্রকল্পটি তৈরিতে খরচ হচ্ছে ১৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। জাতীয় রেলপথ প্রকল্পের অন্তর্গত এই প্রকল্পটি ৩ বছরের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।