সংক্ষিপ্ত

অক্সফোর্ডের করোনা টিকার চলছে ক্লিনিকাল ট্রায়াল

তার আগেই সেই টিকার কয়েক মিলিন ডোজ তৈরি করে ফেলেছে সিরাম ইনস্টিটিউট

মিনিটে ৫০০টি করে ডোজ তৈরি হচ্ছে

সেই সঙ্গে সংস্থার প্রধান করলেন আরও এক বড় দাবি

 

বলা হচ্ছে বিশ্বের অন্য়তম 'বৃহৎ জুয়া'। এখনও পরীক্ষাধীন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের তৈরি করোনা টিকা। শেষ পর্যন্ত করোনা মোকাবিলায় এই টিকা কাজ করতেও পারে আবার নাও পারে। সেরাম ইনস্টিটিউট কিন্তু এখনই এই টিকার কয়েক মিলিয়ন ডোজ উত্পাদন করে ফেলেছে। অক্সফোর্ডের এই টিকা-সহ মোট পাঁচ-পাঁচটি করোনাভাইরাস ভ্যাক্সিন প্রার্থীর উপর বাজি ধরছে তারা। দুটি মার্কিন সংস্থার টিকা ছাড়াও রয়েছে সংস্থার নিজেদের তৈরি করোনা টিকাও। ২০২১ সালের মধ্যেই সেরাম ইন্সস্টিটিউটের নিজেদের তৈরি করোনা টিকাই বাজারে চলে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংস্থার মালিক আদর পুনাওয়ালা।

মে মাসের গোড়ার দিকে, বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক, সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার শীতল কক্ষে একটি সিল করা স্টিলের বাক্স এসেছিল। শুষ্ক বরফে মোড়া অবস্থায় সেই বাক্সে ছিল ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাটানো ছোট্ট 1 মিলিলিটারের একটি শিশি। এর মধ্য়েই ছিল বিশ্বের অন্যতম প্রতিশ্রুতিশীমান করোনভাইরাস টিকার কোষগত উপাদান। যার মধ্যে কিছু ভিটামিন এবং চিনি যুক্ত করে কোটি কোটি কোষের বিকাশ ঘটানো শুরু হয়েছিল। শুরু হয়েছিল করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন আবিষ্কারের সন্ধানে বৃহত্তম জুয়া খেলা।

গত এপ্রিলেই আদর পূনাওয়ালা জানিয়েছিলেন অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের ক্লিনিকাল ট্রায়ালগুলি শেষ হওয়ার আগেই সেরাম ইনস্টিটিউট এই ভ্যাকসিন গণহারে তৈরি করতে চলেছে। এখন, সেরামের অ্যাসেমব্লিং লাইনগুলি প্রতি মিনিটে ৫০০ টি করে ভ্যাক্সিন ডোজ তৈরি করার মতো জায়গায় চলে এসেছে। অথচ ভ্যাকসিনটি কাজ না করলে ২০ কোটি ডলারের ক্ষতির ধাক্কা সামলাতে হবে সেরাম ইনস্টিটিউটকে। কাঁচের শিশি, রাসায়নিক, কাঁচামাল, অন্যান্য সুবিধা, কর্মীদের বেতন - সমস্ত ব্যয় মাঠে মারা যাবে।

তবে অক্সফোর্ড ছাড়াও দুটি মার্কিন সংস্থার সঙ্গেও টিকা উৎপাদনের বিষয়ে চুক্তি করেছে সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া। সেই টিকাদুটির নাম নোভাভ্যাক্স ও কোডাজেনিক্স। আদর পুনাওয়ালা জানিয়েছেন নোভাভ্যাক্স-এর প্রি-ক্লিনিকাল ট্রায়াল চলছে, আর কোডাজেনিক্স রয়েছে অক্সফোর্ডের কোভিশিল্ডের উন্নয়নের থেকে মাত্র একমাস মতো পিছিয়ে। তবে সবচেয়ে বড় বিষয় হল, সিরাম ইনস্টিটিউট নিজেরাও করোনার দুটি টিকা নিয়ে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন আদর পুনাওয়ালা। ২০২১ সালের শেষের মধ্যেই তাদের সেই টিকা বাজারে এসে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংস্থার সিইও। 

তাও এই ঝুঁকি নিয়েছেন আদর পুনাওয়ালা। আর এখন তাঁর ফোন প্রায় বেজেই চলেছে বলে জানা গিয়েছে। তারমধ্যে বিভিন্ন দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতি থেকে শুরু করে বিভিন্ন জগতের কেউকেটা ব্যক্তিরা রয়েছন। তাঁদের সবারই সবার আগে টিকা চাই। তবে সিরাম ইনস্টিটিউট-এর সিইও সফ জানিয়ে দিয়েছেন, খুশি মতো টিকা বন্টন করা যাবে না। ভারত পাবে তাঁদের উৎপাদনের ৫০ শতাংশ এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশে দেওয়া হবে বাকি ৫০ শতাংশ। যা বেশিরভাগই গরীব দেশগুলি পাবে।