সংক্ষিপ্ত

পরিবারের সম্মতিতে দীর্ঘ ১১ বছর প্রেমের পরেও বিয়ের অনুষ্ঠান করতে পারল না এক হিন্দু-মুসলিম দম্পতি। শ্রদ্ধা-হত্যাকণ্ডের কালো ছায়া পড়ল তাদের বিবাহিত জীবনে।

শ্রদ্ধা ওয়াকার হত্যাকাণ্ডের প্রভাব পড়ল মুম্বইয়ের একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে। ভাসাই শহরে বন্ধ হয়ে গেল একটি বিয়ের অনুষ্ঠান। এক হিন্দু-মুসলিম দম্পতি দীর্ঘ দিন ধরেই নিজেদের বিয়ের প্রস্তুতি নিয়েছিল। শনিবার তেমনই জানিয়েছে পুলিশ।

শুক্রবার সকালে সুদর্শন নিউজ চ্যানেলের সম্পাদক হিন্দু-মুসলিম দম্পতির বিয়ের অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্রের একটি ছবি টুইট করেন। তারপর হ্যাসট্যাগ লাভজিহাদ , অ্য়াক্ট অব টেররিজম - এই শব্দ ব্যবহার করেন। তারপরেই বিয়ের অনুষ্ঠান নিয়ে রীতিমত উত্তাল হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। এরপরই ভাসাইয়ের হিন্দু ও মুসলিম দুই সম্প্রদায়ের সংগঠন ও স্থানীয় মানুষই পুলিশের দ্বারস্থ হয়। বিয়ের অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার আবেদন জানায়। তারপরই দম্পতি নিজেরাই বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে পিছিয়ে আসেন।

শনিবার ভাসাইয়ের এক পুলিশ কর্তা জানিয়েছেন, রবিবার বিয়ের অনুস্ছান হওয়া কথা ছিল। ভাসাই পশ্চিম এলাকায় হল বুক করা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু অনুষ্ঠান বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর স্থানীয় মানুষ এলাকায় শান্তি রক্ষার জন্য বিয়ের অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার পক্ষেই সওয়াল করেছিলেন। তাঁরাই হলের মালিককে ফোন করেছিলেন। শনিবার দম্পতির পরিবার মানিকপুর থানায় গিয়ে জানান, বিয়ের অনুষ্ঠান তাঁরা বাতিল করে দিচ্ছেন।

মহিলা হিন্দু পরিবারের সদস্য। ২৯ বছরের মহিলা। স্বামীর বয়স ৩২, তিনি মুসলিম। তাঁরা একে অপরকে গত ১১ বছর ধরে চেনেন। দুজনেই পরিবারে সম্মতিতে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ। তাঁরা বিয়ের অনুষ্ঠানে প্রায় ২০০ জনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। এই মামলার সঙ্গে লাভজিহাদের কোনও যোগ নেই বলেও এক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

দিল্লি পুলিশ আরও জানিয়েছে, আফতাব আর শ্রদ্ধা একসঙ্গে টানা তিন বছর লিভ-ইন করেছেন। তবে শ্রদ্ধাকে হত্যার মাত্র দিন ১৫ আগে একটি ডেটিং অ্যাপের মধ্যমে আফতাব আরও একটি তরুণীর সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করেছি। সেই তরুণীর সঙ্গে বেশ কয়েকবার দেখাও করেছিল। সেই মহিলাকেই নিজের ফ্ল্যাটে নিয়ে এসেছিল তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। মহিলা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্তকিনা তাও দেখা হচ্ছে। পুলিশ আরও জানিয়েছে, শ্রদ্ধা-হত্যাকাণ্ড লুকিয়ে রাখার জন্য আফতাব শ্রদ্ধার ইনস্টাগ্রাম-সহ একাধিক সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করত। শ্রদ্ধার হয়ে তার বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করত।

অন্যদিকে মঙ্গলবার শ্রদ্ধার হত্যাকারী আফতাবকে সঙ্গে নিয়ে দিল্লি পুলিশ মেহরাউল্লির জঙ্গলে হানা দেয়। এখনও পর্যন্ত ১২টি দেহাংশ উদ্ধার হয়েছে। সেগুলি শ্রদ্ধার কিনা তা জানতে ফরেন্সিক তদন্তের জন্য পাঠান হয়েছে। দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, অবশেষে ১২টি দেহাংশ উদ্ধার হয়েছে। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের কাছে দেহের অংশগুলি পাঠান হয়েছে। শ্রদ্ধার বাবার ডিএনএ সংগ্রহ করা হয়েছে। সবদিক খতিয়ে দেখা হবেয তবে এখনও পর্যন্ত শ্রদ্ধার মুণ্ড উদ্ধার হয়নি।