ঘটনার সূত্রপাত ষষ্ঠ দফা নির্বাচনের ঠিক আগে। সেই সময়েই এক বেসরকারি গণমাধ্যমে নরেন্দ্র মোদী মুখ খোলেন। বালাকোট এয়ার স্ট্রাইক সংক্রান্ত তাঁর তত্ত্ব নিয়ে মশগুল সোশ্যাল মিডিয়া।
কথায় বলে ভোটরঙ্গ। রঙ্গই বটে। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীই যখন তামাশার খোরাক জুগিয়ে চলেছেন তখন তাকে আর অন্য কিছু বলার উপায় নেই। শুধু হাসতে হাসতে পেটে খিল ধরার যোগাড় নেটিজেনদের। কেউ আবার রাস্তায় নেমে পড়েছে তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহে।
ঘটনার সূত্রপাত ষষ্ঠ দফা নির্বাচনের ঠিক আগে। সেই সময়েই এক বেসরকারি গণমাধ্যমে নরেন্দ্র মোদী বলেন, বালাকোট এয়ার স্ট্রাইক সংক্রান্ত তাঁর তত্ত্ব।
ঠিক কী বললেন প্রধানমন্ত্রী
মোদী সাক্ষাৎকারে বালাকোট বদলা প্রসঙ্গে বলেন, ওই দিন হঠাৎই আবহাওয়া খারাপ হয়ে যায়।ভারী বৃষ্টি হয়েছিল। সন্দেহ ছিল আমরা মেঘের মধ্যে দিতে যেতে পারব কিনা।
তারপর যোগ করেন, ‘‘আমি বললাম, আকাশে প্রচুর মেঘ এবং বৃষ্টি। এটার সুবিধাও আছে। আমি খালি চোখে যা বুঝি, মেঘ আমাদের সুবিধাও দিতে পারে। আমরা রেডারকে ফাঁকি দিতে পারি। সবাই দ্বিধাগ্রস্ত ছিলেন। শেষ পর্যন্ত আমি বলি, মেঘ আছে, চলুই এগিয়ে যাই।’’
বলাই বাহুল্য, এই বক্তব্য ভাইরাল হতে সময় নেয়নি। তবে নরেন্দ্র মোদীর ফ্যন লিস্টে যে সব বিদ্বজনেরা আছেন তাদের বিমর্ষই করেছে প্রিয় নেতার এই বক্তব্য।
বিজ্ঞানীদের ব্যখ্যা
বিজ্ঞানীরা সাফ বলছেন, আকাশে মেঘ থাকা বা না থাকার উপর রেডারে বিমানের সিগন্যাল পাওয়ার কোনও সম্পর্ক নেই। কারণ রেডার রেডিয়ো ওয়েভ-এর মাধ্যমে সক্রিয় হয়।
মোদীর নতুন তত্ত্ব, এবার ইমেল ও ডিএসএলআর
ওই চ্যানেলেই মোদী ১১ মে-এর ইন্টারভিউতে বলেন, তিনি নাকি ১৯৮৮ সালেই ডিজিটাল ক্যামেরা ব্যবহার করেতেন। সেই ক্যামেরায় নাকি লালকৃষ্ণ আডবানীর রঙিন ছবিও তুলে দিয়েছিলেন মোদী। এখানেই শেষ নয়, ১৯৮৮ সালেই নাকি ইন্টারনেট ব্যবহার করে ই-মেল করতেন বলে দাবি করেন নরেন্দ্র মোদী।
নেটিজেনদের খোরাক
এই ঘটনাকেও উড়িয়ে দিচ্ছেন নেটিজেনর। পেশাদাররা সাফ বলছেন সে সময় কলকাতায় ওই ক্যামেরা ছিল না। ক্যামেরা প্রস্তুতকারী সংস্থা নিকন প্রথম বাণিজ্যিক ভাবে বিক্রির জন্য ডিজিটাল ক্যামেরা বাজারে আনে ১৯৮৬ সালে। কিন্তু এক বছরের মধ্যে ভারতে তা চালু হয়েছে, এ কথা মোদী ভক্তেপ পক্ষেও মেনে নেওয়া কঠিন। আর ই-মেল প্রথম চালু হয় ১৯৯৫ সালে। অথচ মোদীর দাবি, বীরমগামে আডবাণীর সভার ছবি তিনি ডিএসএলআরে তুলে মেল করেন আদবানীকে।
সোশাল মিডিয়া ছেড়ে কথা বলেনি বিজেপি সুপ্রিমোকে। ইন্টারনেটে ইতিহাস ঘেঁটে তোপ দেগেছে তাঁর ওপর। এক হাত নিয়েছেন বিরোধীরাও।
তথ্য বলছে ১১৯৫ সালে আমজনতার জন্যে মেল চালু হয়। ১৯৮৬ তেও মেল চালাচালির অবকাশ ছিল। এডুকেশানাল রিসার্চ নেটওয়ার্কে এই সুবিধে পাওয়া যেত কেবল আটটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।
হাতে বাকি মাত্র এক দফা ভোট। মোদী ভক্তরা আশঙ্কায়, 'ব্যাকফায়ার' হয়ে গেল না তো!
