সংক্ষিপ্ত

প্রবল শৈত্যপ্রবাহের মধ্যেই অনশনে বলেছিলেন লাদাখের সমাজকর্মী। লাদাখের গণতন্ত্র ও পরিবেশের দাবিতেই ছিল প্রতিবাদ আন্দোলন। তাঁকে গৃহবন্দি করা হয়েছে বলে অভিযোগ।

 

সোনম ওয়াংচুককে গৃহবন্দি করা হয়েছে। ফেসবুক পোস্টে তেমনই দাবি করেছেন লাদাখের সমাজকর্মী। লাদাখের পরিবেশের জন্যই তিনি অনশন শুরু করেছিলেন। কিন্তু সেই অনশনের মাঝেই তাঁকে আটক করা হয়েছে। যদিও সোনম ওয়াংচুকের কথায় গৃহবন্দির থেকেও খারাপ অবস্থায় পরিস্থিতি তাঁর। তাঁর আরও অভিযোগ, লাদাখের পরিবেশের পাশাপাশি স্থানীয়দের সমস্যা ও পূর্ণ রাজ্য বিসেবে স্বয়ত্বশাসনের দাবি জানিয়েছিলেন তিনি। তাতেই তাঁকে গৃহবন্দি করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী মোদীর দৃষ্টি আকর্ষণ

গত ২৩ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে একটি এসওএস পাঠান সোনম ওয়াংচুক। সেই সময় তিনি লিখেছেলিন 'লাদাখের সবকিছু ঠিকঠাক নেই'। তাই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবদেন জানিয়েছিলেন।

সোমন ওয়াংচুক ভিডিওতে লাদাখকে 'পৃথিবীর তৃতীয় মেরু' হিসেবে বর্ণনা করেছেন। সেখানে তিনি ষষ্ঠ তফসিলের দাবির পাশাপাশি লাদাখের জলবায়ু নিয়েও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। ১৩ মিনিটের ভিডিও ক্লিপে তিনি বলেছেন, লাদাখের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৯৫ শতাংশই উপজাতী। আর সেই কারণে এই কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলকে ষষ্ঠ তফসিলে উন্নিত করাতে কোনও সমস্যা নেই। তিনি আরও বলেছেন এই বিষেয় আদিবাসী বিষয়ক মন্ত্রী অর্জুন মুণ্ডাও আশ্বাস দিয়েছিলেন। জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য তিনি বিশ্ববাসীর কাছে জীবনধারা বদলের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী মোদীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলকে কার্যকর করে লাদাখের প্রকৃতিকে রক্ষা করতে হবে। সেখানেয়ই তিনি বলেছিলেন লাদাখের জন্যই তিনি অনশনে বসছেন।

সোমনের নতুন ভিডিও

গৃহবন্দি হওয়ার পরে সোনম ওয়াংচুক আরও একটি ভিডিও পোস্ট করেন। ১৮ মিনিটের সেই ভিডিও বার্তায় তিনি লাদাখের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, লাদাখের সমস্ত মানুষই কষ্টে রয়েছে। যেমন যুব সম্প্রদায়। প্রথমে ১২ হাজার চাকরির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু চাকরি পেয়েছে মাত্র ৮০০। অধিকাংশই পুলিশে। যা নিয়ে কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলের সর্বত্র প্রতিবাদ হচ্ছে। মানুষ ভয় রয়েছে। তিনি এদিনের ভিডিওতে তোপ দাগেন লেফটেন্যান্ট গভর্নরের দিকে। তিনি বলেন, লাদাখের জন্য ৬ হাজার টাকা বরাদ্দ হলেও সেই টাকা সঠিকভাবে খরচ করা হচ্ছে না। লাদাখের উন্নতিতে প্রশাসনের গাফিলতি রয়েছে। তাঁর কথা প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত যাতে না পৌঁছায় সেই জন্যই তাঁকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন ওয়াংচুক।

সামরিক দৃষ্টিকোন থেকে লাদাখ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু কেন্দ্রশাসিত এই অঞ্চলে কর্পোরেট সম্প্রসারণ দ্রুত গতিতে বাড়ছে। তাতেই আগামী দিনে সীমান্তবর্তী এই এলাকায় যেমন জলের ঘাটতি বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে তেমনই পরিবেশের ভারসাম্য বজায় থাকবে না বলেও মনে করছেন তিনি। পাশাপাশি সোমন ওয়াংচুক মনে করছেন খনি ও অন্যান্য কার্যকলাপের জন্য হিমবাহ গলে যেতে পারে।