সংক্ষিপ্ত

  • পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য কমিশন গঠন উত্তরপ্রদেশে
  • ইতিমধ্যে শ্রমিকদের স্কিল ম্যাপিং শুরু হয়েছে
  • শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষা ও বিমার অন্তর্ভুক্ত করছে যোগী সরকার
  • সরকারি অনুমতি ছাড়া নেওয়া যাবে না রাজ্যের শ্রমিকদের

দু'মাস হয়ে গেল দেশে চলছে লকডাউন। এরমধ্যে ভিনরাজ্যে কর্মরত প্রায় ২৩ লক্ষ শ্রমিক উত্তরপ্রদেশে নিজেদের বাড়ি ফিরে গিয়েছে। এবার এই শ্রমিকদের জন্য নতুন নিয়ম চালু করতে চলেছে যোগী আদিত্যনাথের সরকার। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, এখন থেকে তাঁর  রাজ্যের শ্রমিককে অন্য রাজ্যে কাজের জন্য নিতে হলে উত্তরপ্রদেশ সরকারের অনুমতি নিতে হবে। 

গোটা দেশে যত পরিযায়ী শ্রমিক রয়েছেন তারমধ্যে উত্তরপ্রদেশের শ্রমিকদের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি। রবিবার পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য মাইগ্রেশন কমিশনের ঘোষণা করেন আদিত্যনাথ। এই কমিশন পরিযায়ী শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষা দেবে বলে দাবি করেছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। পরিযায়ী শ্রমিকদের বিমার  আওতায় আনাও এই কমিশনের কাজ হবে। নিজের বাসভবনে রিভিউ মিটিং করার সময় এই সিদ্ধান্ত নেন যোগী আদিত্যনাথ। 

যোগী সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই রাজ্যের শ্রমিকদের স্কিল ম্যাপিং শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, “শ্রমিকরা রাজ্যের বড় সম্পদ। এবার রাজ্যেই তাঁদের কাজের সুযোগ করে দেওয়া হবে। শীঘ্রই রাজ্যে এমপ্লয়মেন্ট কমিশন তৈরি হবে।” তাঁর অভিযোগ, লকডাউনের সময়ে অনেক রাজ্যেই পরিযায়ী শ্রমিকদের দিকে যথাযথ নজর দেওয়া হয়নি। যোগীর বক্তব্য, “ওঁরা আমাদের লোক। কোনও রাজ্য যদি ফের শ্রমিকদের নিয়ে যেতে চায় তবে সরকারের অনুমতি নিতে হবে।”

যোগী বলেন, বিভিন্ন রকম কাজ অনুযায়ী শ্রমিকদের রেজিস্ট্রেশন করা হচ্ছে। সেই মতো তাঁদের কাজে লাগানো হবে। সবার আগে নজর রাখতে হবে তাঁদের অধিকার রক্ষা হচ্ছে কিনা। এর পরে কোনও রাজ্য বা সংস্থা উত্তরপ্রদেশ থেকে শ্রমিক নিতে চাইলে সরকার আগে দেখে নেবে ওই সংস্থায় সামাজিক, আর্থিক ও আইনি অধিকার রক্ষার বিষয়টি সুনিশ্চিত কিনা। শুধু তাই নয়, শ্রমিকদের বিমা থেকে কাজ না থাকার সময়ের মজুরি ইত্যাদির বিষয়েও রাজ্যে সরকারের কমিশন নজর রাখবে।

এদিকে রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে যোগীর বক্তব্য ঘিরে ইতিমধ্যে রাজনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হয়ে গিয়েছে। মহারাষ্ট্রের আসা উত্তরপ্রদেশের পরিযায়ী শ্রমিকদের এবার থেকে কাজ করার জন্য মহারাষ্ট্র সরকারের অনুমতি নিতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মহারাষ্ট্র নবনির্মান সেনার প্রধান রাজ ঠাকরে। এদিকে আগেই পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রতি আচরণের জন্য উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনায় সরব হয় শিবসেনা। মুখপত্র সামনায় শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত সরাসরি যোগী আদিত্যনাথকে জার্মান একনায়ক এডলফ হিটলারের সঙ্গে তুলনা করেন। 

 

 

সম্প্রতি এক নির্দেশিকায় যোগী আদিত্যনাথ পায়ে হেঁটে আসা শ্রমিকদের উত্তরপ্রদেশে ঢোকার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। এমনকি সাইকেল বা ট্রাকে করে এলেও পরিযায়ীদের রাজ্যে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে জানান হয়। এরফলে উত্তরপ্রদেশ সীমানায় আটকে পড়েন প্রচুর শ্রমিক। তবে যোগী নির্দেশ দেন, এই সব শ্রমিকদের ট্রেনে বা বাসে করে রাজ্যে ফেরাতে হবে। কোভিড পরীক্ষা ছাড়ায় যাতে কোনও শ্রমিক উত্তরপ্রদেশে প্রবেশ করতে না পারেন সেই জন্যই এই নির্দেশ দেওয়া হয়। তাকেই হিটালেরর শাসন বলে কটাক্ষ করে শিবসেনা।

উত্তরপ্রদেশে ইতিমধ্যেই ২৩ লাখ শ্রমিক বিভিন্ন রাজ্য থেকে ফিরেছেন বলে জানা যাচ্ছে । মুম্বই ও দিল্লি থেকে ফেরা অনেক শ্রমিকের শরীরেই করোনা পজিটিভ মিলেছে। তাঁদের কোয়ারেন্টাইনে রাখার ব্যবস্থা সরকার করেছে বলেও জানিয়েছেন যোগী আদিত্যনাথ। তবে এখনও অনেক শ্রমিকের ফেরা বাকি রয়েছে। চলতি সপ্তাহের মধ্যে তাঁরা চলে আসবেন বলে জানিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী।