সংক্ষিপ্ত

মাথার উপর রয়েছে চিনের হুমকি

তবুও দেশে রাজনীতির খেলা অব্যাহত

সরকারি বক্তব্যে অসঙ্গতি নিয়ে চলছে বিরোধীদের আক্রমণ

বিজেপি খেলছে বালাকোটের চেনা কৌশলে

 

প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার কোন একতরফা পরিবর্তন হতে দেবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে ভারত। চিনের যে কোনও আগ্রাসনের 'উপযুক্ত' প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য 'পূর্ণ স্বাধীনতা' দেওয়া হয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনীর স্থানীয় কমান্ডারদের। কিন্তু, এই নিয়ে দেশের অভ্যন্তরে রাজনৈতিক চাপানউতোর চলছেই। ৪৫ বছর পর চিন সীমান্তে প্রথমবার রক্তপাতের পরও এককাট্টা হতে পারল না দেশ। এদিন একেবারে সরাসরি দ্বন্দ্বে জড়ালেন বিজেপি ও কংগ্রেস দলের দুই শীর্ষ নেতৃত্ব।

সোমবার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা বিশিষ্ট কংগ্রেস নেতা মনমোহন সিং, একটি বিবৃতি পেশ করে সর্বদলীয় বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ভাষণের শব্দ চয়ন নিয়ে সমালোচনা করেন। অভিযোগ করেন মোদীর কথায় কুটনৈতিক সুবিধা পাবে চিন, এমনটা হওয়া উচিত নয়। তারপরই তাঁকে ও তাঁর দলকে সরাসরি আক্রমণ করলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগতপ্রকাশ নাড্ডা।
    
মনমোহন সিং-এর বিবৃতি প্রকাশের পরই নাড্ডা একটি টুইট করেন। সেখানে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর দল কংগ্রেসকে উদ্দেশ্য করে তিনি ভারতীয় সেনাবাহিনীকে অপমান করা বন্ধ করার আহ্বান জানান। তাদের শৌর্যকে প্রশ্ন করা বন্ধ করতে অনুরোধ করেন। এর আগে এয়ার স্ট্রাইক এবং সার্জিকাল স্ট্রাইকের পরও তারা এমনটাই করেছিলেন বলে অভিযোগ করেন বিজেপি সভাপতি। তিনি আরও বলেন, 'দয়া করে জাতীয় ঐক্যের প্রকৃত অর্থটা বুঝুন, বিশেষ করে এইরকম এক সময়ে।' সেই সঙ্গে খোঁচা মেরে বলেন, 'ইটস নেভার টু লেট টু ইমপ্রুভ', অর্থাৎ উন্নতি করার কোনও বয়স হয় না।

বস্তুত, গত ১৯ জুন ভারত-চিন সীমান্ত উত্তেজনা নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দাবি করেছিলেন, ভারতের কোনও অংশ চিন দখল করতে পারেনি। ভারতে ঢুকেও পড়েনি চিন সেনা। অথচ, তার আগের দিনই বিদেশ মন্ত্রক থেকে চিনা অনুপ্রবেশের অভিযোগ করা হয়েছিল। তারপরই বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছিল, যদি ভারতে চিন সেনারা না ঢুকে থাকে তাহলে ১৫ জুন রাতে গালওয়ান উপত্যকায় ভারতীয় ও চিনা সেনারা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়ালো কেন? কীভাবে এক কমান্ডিং অফিসার-সহ ২০ জন ভারতীয় সেনা শহীদ হলেন?  সরকারি বক্তব্যের এই অসঙ্গতি আখেরে চিনকেই কুটনৈতিক সুবিধা দেবে বলে দাবি করা হয়।

এদিন মনমোহন সিং-তাঁর বিবৃতিতে একই কথা তুলে ধরেন। সেই সঙ্গে তিনি দাবি করেন এপ্রিল মাসে গালওয়ান উপত্যকা ও প্যাংগং তসো এলাকায় বেশ কয়েকবার চিন সেনা অনুপ্রবেশ করেছে। তারপরই বিজেপির জে পি নাড্ডা সেনাকে অপমান করার অভিযোগ তুললেন। বালাকোটে এয়ারস্ট্রাইকের সময়ও বিরোধীরা সেই হামলায় বিপক্ষের কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তাই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। সেই সময়ও সরকারি বক্তব্যে অসঙ্গতি ছিল। যা নিয়ে এখনকার মতোই প্রশ্ন তুলেছিল। সেই সময়ও সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীদের আক্রমণকে, সেনাবাহিনীকে অপমান, সেনাকে অবিশ্বাস - সাফল্যের সঙ্গে এই বয়ানে ঘুরিয়ে দিয়েছিল বিজেপি। এবারেও কি তাই হবে?