সংক্ষিপ্ত
বাবা রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্থায় চাকরি করে
কর্মরত অবস্থায় মারা গেলে ছেলে পাবে সেই চাকরি
এই লোভেই বাবাকে খুন করল ছেলে
সায় দিল মা ও ছোট ভাইও
বর্তমান ভারতের সবচেয়ে বড় সমস্যা কর্মহীনতা। গত ৪৬ বছরের মধ্যে ভারতে বর্তমানে বেকারত্বের মাত্রা সবচেয়ে বেশি। আর এই সমস্যাকে আরও গভীরে টেনে নিয়ে গিয়েছে করোনাভাইরাস মহামারি এবং তার বিস্তার রোধে জারি করা দেশব্যপী লকডাউন। যার জেরে এমন অর্থনৈতিক চাপ তৈরি হয়েছে যে অত্ভূত অত্ভূত কাণ্ড করে বসছে মানুষ। এমনই এক ঘটনা ঘটল তেলেঙ্গানায়। বাবার রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্থার চাকরি হাতাতে বাবাকেই খুন করে বসল ছেলে। সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর হল, ছেলের এই হত্যাকাণ্ডে পূর্ণ সায় দিল তার মা ও ছোট ভাই-ও।
জানা গিয়েছে নিহত ব্যক্তির বয়স ৫৫। তাদের বাড়ি পেডাপল্লি জেলার কোথুর গ্রামে। ওই জেলারই গোদাবরীখানীতে রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্থা সিংগারেণি কলিয়েরিজ লিমিটেড-এ, পাম্প অপারেটর হিসাবে কাজ করতেন তিনি। তাঁর ছেলে পলিটেকনিক-এ ডিপ্লোমা করেছে। কিন্তু, পঁচিশ বছর বয়সেও সে কোনও চাকরি পায়নি। লকডাউনের ফলে সেই আশা একেবারেই ক্ষীণ হয়ে পড়েছিল। এই অবস্থায় সে তার বাবাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পরিকল্পনা করে। তেলঙ্গানা রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকারের যৌথ মালিকানাধীন এই কয়লা খননকারী সংস্থা, চাকরিরত অবস্থায় কেউ মারা গেলে তাঁর নির্ভরশীল কোনও নিকটাত্মীয়কে চাকরি দেয়।
সে তার মা ও ছোট ভাইকেও এই অকল্পনীয় পরিকল্পনার কথা বলে। পুলিশের দাবি পরিবারের ওই দুই সদস্যও তার কথায় সায় দিয়েছিলেন। সম্ভবত অল্পবয়সী ছেলে আরও দীর্ঘদিন ওই নিরাপদ চাকরি করে আয় করতে পারবে - এমন ভাবনা থেকেই তারা এই হত্য়ার চক্রান্ত করেন।
পরিকল্পনামাফিক গত ২৬ মে রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় একটি তোয়ালে দিয়ে গলা পেঁচিয়ে ধরে বাবাকে হত্যা করে বড় ছেলে। পরদিন সকালে পরিবারের সকলে আত্মীয়স্বজন ও পাড়া প্রতিবেশীদের বাড়ির কর্তার মৃত্যু সংবাদ দেয়। তারা জানায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে। শেষকৃত্যের প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছিলেন। কিন্তু, পাড়া-প্রতিবেশীরা তাঁর মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন। পরিবার পুলিশে খবর দিতে একরকম বাধ্যই হয়। পুলিশ এসে দেহটি ময়না তদন্তের জন্য পাঠায়, সেখানে খুনের বিষয় স্পষ্ট হয়ে যায়।
পুলিশ জানিয়েছে নিহতের স্ত্রী অর্থাৎ আততায়ী ছেলের মা এখনও পলাতক। তবে দুই ছেলেকেই আটক করা হয়েছে। সেইসঙ্গে অপরাধের জন্য ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোন এবং তোয়ালে়টিও তারা বাজেয়াপ্ত করেছে। অভিযুক্ত তিনজনের বিরুদ্ধেই ভারতীয় দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় হত্যা, হত্যার ষড়যন্ত্র, ভুয়ো তথ্য প্রদান, সাধারণ অভিপ্রায়কে সামনে রেখে বহু ব্যক্তির লোকের দ্বারা করা অপরাধ ইত্যাদি অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।