সংক্ষিপ্ত
কেন্দ্র দাবি করেছে যে পর্যাপ্ত শুনানি না করেই দোষীদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে, যা প্রকৃত ন্যায়বিচারের নীতির লঙ্ঘনের দিকেই যায় বলেও উল্লেখ করা হয়েছে কেন্দ্রের তরফে।
রাজীব গান্ধী হত্যাকাণ্ডে সাজাপ্রাপ্তদের মুক্তির এক সপ্তাহের মধ্যেই সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার আবেদন করল কেন্দ্রীয় সরকার। নলিণী-সহ ছয় জনের মুক্তির সিদ্ধান্তের আগেই বিরোধিতা করেছিল কংগ্রেস। এবার সেই পথেই হাটল কেন্দ্রীয় সরকারও। বৃহস্পতিবার এই মর্মে আদালতে একটি পিটিশন জমা দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্র দাবি করেছে যে পর্যাপ্ত শুনানি না করেই দোষীদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে, যা প্রকৃত ন্যায়বিচারের নীতির লঙ্ঘনের দিকেই যায় বলেও উল্লেখ করা হয়েছে কেন্দ্রের তরফে।
কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি,'এমন একটি সংবেদনশীল বিষয়ে, ভারতের ইউনিয়নের সহায়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কারণ বিষয়টি দেশের জনশৃঙ্খলা, শান্তি এবং অপরাধমূলক বিচার ব্যবস্থার উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে।' সরকারের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, মুক্তিপ্রাপ্ত ছয় আসামির মধ্যে চারজনই শ্রীলঙ্কার এবং প্রত্যেকেই সন্ত্রাসবাদী হিসেবে সাজা পেয়েছিল। দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার মত জঘন্য অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ছিল। এমন একটি বিষয় যার আন্তর্জাতিক প্রভাব রয়েছে এবং এটি ভারত ইউনিয়নের সার্বভৌম ক্ষমতার মধ্যে। ১৯৯১ সালে আত্মঘাতী বোমবিস্ফোরণে মৃত্যু হয় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর। মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনানো হয় মূল অভিযুক্ত নলিণী শ্রীহরণ ও জড়িত সাতজনের। গ্রেফতারির সময় গর্ভবতী ছিলেন মূল অভিযুক্ত নলিণী। কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি তথা রাজীব গান্ধীর স্ত্রী সোনিয়া গান্ধীর আবেদনে মৃত্যুদণ্ডের বদলে যাবজ্জিবন কারাদণ্ডের সাজা দেওয়া হয় নলিণীকে। পরে মৃত্যুদণ্ডের সাজা বদলে যাবজ্জীবনের সাজা দেওয়া হয় বাকি সাতজনকেও।
সোনিয়া গান্ধীর দৃষ্টিভঙ্গির বিরোধীতা করে কংগ্রেসের মুখপাত্র অভিষেক মানু সিংভি বলেন, 'আমরা আমাদের অবস্থানে অবিচল। এটি একটি প্রাতিষ্ঠানিক বিষয়। সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার সঙ্গে একটি জাতির সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা ও পরিচয় জড়িত।' তিনি আরও সংযোজন করেন, 'একটি জাতির সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতার বৃহত্তর ইস্যুটি কি বিবেচনায় করা হয়েছে?' অপর এক কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলেন, 'প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর খুনিদের মুক্তি দেওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। দল এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করছে।'
শীর্ষ আদালতের নির্দেশে মুক্তি পাচ্ছেন নলিনী-সহ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী হত্যাকাণ্ডে সাজাপ্রাপ্তরা। শুক্তবারই নলিনী শ্রীহরণ, রবিচন্দ্রন, শান্থন, মুরুগান, রবার্ট পায়াস এবং জয়কুমারের মুক্তির নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। এর আগেই গত মে মাসে আদালতের নির্দেশে মুক্তি পেয়েছেন এই মামলার আর এক সাজাপ্রাপ্ত পেরারিভালন। তার ছ'মাসের মাথায় বাকি সাতজনেরও মুক্তির নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ শোনার পর নলিনীর কন্ঠে উঠে আসে,'আমি জঙ্গি নই।'