সংক্ষিপ্ত

সমকামী বিবাহকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়ার আবেদন জানিয়ে চারজন সমকামী এবার দ্বারস্থ হলো শীর্ষ আদালতের। চলতি মাসেই এই আবেদনের শুনানি করার বার্তা দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

সমকামী বিবাহকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়ার আবেদন জানিয়ে চারজন সমকামী এবার দ্বারস্থ হলো শীর্ষ আদালতের। চলতি মাসেই এই আবেদনের শুনানি করার বার্তা দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। বর্তমানে প্রচলিত এমন অনেক আইনি অধিকারই আছে যা শুধুমাত্র প্রযোজ্য সাধারণ দম্পতিদের জন্য, এই অধিকারগুলি যাতে সমকামী দম্পতিরাও অ্যাক্সেস করতে পারেন সেই জন্যও এলজিবিটিকিউ ইউনিয়নের সদস্যরা দ্বারস্থ হয় সুপ্রিম কোর্টের। ভারতের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূদের নেতৃত্বে একটি বেঞ্চ শীঘ্রই শুনানি করবে এই মামলার। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য সমকামী বিবাহকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য গত মাসেই সুপ্রিম কোর্ট একটি নোটিশ দিয়েছিলো কেন্দ্রকে। কিন্তু এনিয়ে নির্দিষ্ট কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছতে অসমর্থ হয় কেন্দ্র। তবে শীঘ্রই পর্যালোচনার মাধ্যমে একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছনো যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে এবার।

কেন্দ্রীয় সরকার এখনও পর্যন্ত সমকামী বিবাহের বিরোধিতাই করে এসেছে। কারণ স্বরূপ তারা বলেন যে ভারতীয় সমাজ মূলত দুই ব্যক্তির সামাজিকভাবে স্বীকৃত ইউনিয়ন বা সংবিধিবদ্ধ আইন দ্বারাই পরিচালিত। কিন্তু ২০২১ সালে দিল্লি হাইকোর্ট একটি রায়ের মাধ্যমে বলে যে ভারতীয় সংবিধানের এই সংবিধিবদ্ধ আইন অনুযায়ী একই লিঙ্গের দুই ব্যক্তির মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্ক সমাজে গ্রহণযোগ্য নয়। কিন্তু দিল্লি হাইকোর্টের এই রায় মুলতুবি করে দেওয়া হয় রাতারাতি এবং মামলাটি কে স্থানান্তরিত করা হয় সুপ্রিম কোর্টে। সুপ্রিম কোর্ট এই মামলার শুনানিতে কি রায় দেয় তার দিকে তাকিয়ে এখন সবাই। ভারতের মতো রক্ষণশীল দেশে সমকামীবিবাহের মতো বিতর্কিত বিষয় নিয়ে শীর্ষ আদালত কি বলে তার দিকে এখন তাকিয়ে সবাই। তবে বিশেষজ্ঞমহলের মতে সরকারের সঙ্গে সম্মুখ সমরে নামার আগে বেশ ভালোভাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছে শীর্ষ আদালত।

সমকামী দম্পতিরা তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। এমনকি একসময় সমকামী সম্পর্ককে অপরাধ হিসেবেও গণ্য হতো সমাজে। ২০১৮ সালে এক যুগান্তকারী রায় দেয় সুপ্রিম কোর্ট। এই রায়ে তারা বলেন যে সমকামী সম্পর্ক কোনোভাবেই অপরাধমূলক নয়। কিন্তু সমকামী দম্পতিরা একে অপরের জন্য চিকিৎসায় সম্মতি দিতে, দম্পতি হিসাবে বীমা নিতে, জীবন বীমাতে একে অপরকে মনোনীত করতে, পেনশন দাবি করতে, একসাথে দত্তক নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে , এমনকি দম্পতি হিসেবে যেকোনো ক্লাবের সদস্য হতে পারতেন না এতদিন। এই অধিকারগুলি যাতে তাদের দেওয়া হয় এইরকম দাবিও তুলছেন তারা। তবে পরবর্তী কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আগে সবার চোখ এখন সুপ্রিম কোর্টের রায়ের অপেক্ষায়।