দিল্লিতে এ এক অন্যরকম প্রজাতন্ত্র দিবসউৎসবের দিন ঢাকল কাঁদানে গ্যাসের ধোঁয়ায়কৃষকদের ট্র্যাক্টর মিছিল ঘিরে উত্তাল রাজধানীপুলিশি বাধা ভেঙে এগিয়ে চলেছেন হাজার হাজার কৃষক

সাধারণত ২৬ জানুয়ারি প্রজতন্ত্র দিবসের দিনটায় দিল্লি পুলিশ-এর একাংশ ব্যস্ত থাকেন কুচকাওয়াজে, আরেক অংশকে সতর্ক থাকতে হয় নাশকতার প্রচেষ্টা ব্যর্থ করার বিষয়ে। কিন্তু, ৭২তম প্রজাতন্ত্র দিবসটা একটু অন্যরকম হল। কৃষকদের ট্র্যাক্টর মিছিল নিয়ে দিল্লিতে বাধল ধুন্ধুমার। রাজপথে যখন প্রধনমন্ত্রী-রাষ্ট্রপতির উপস্থিতিতে প্রজাতন্ত্র দিবস উদযাপন চলছে, সেই সময়ই দিল্লির অন্যপ্রান্তে পুলিশে তৈরি ব্যারিকেড ভেঙে দিলেন প্রতিবাদী কৃষকরা। লাঠি চালিয়ে, কাঁদানে গ্যআসের শেল ছুঁড়ে, জলকামান ব্যবহার করেও কৃষকদের আটকাতে ব্যর্থ পুলিশ।

বস্তুত, কেন্দ্রের প্রবর্তিত তিন কৃষি আইনের প্রতিবাদে এদিন ট্যাক্টর মিছিল করার কথা অনেক আগেই ঘোষণা করেছিলেন প্রতিবাদী কৃষকরা। পুলিশও তাদের একটি নির্দিষ্ট পথে মিছিল করার অনুমতি দিয়েছিল। সেইসঙ্গে রাজপথে প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরই মিছিলের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। তার সঙ্গে অবশ্য সম্মত হননি কৃষকরা। এদিন সকাল থেকে হাজার হাজার কৃষক ছয়টি সীমান্ত ব্যবহার করে দিল্লিতে প্রবেশ করেন।

Scroll to load tweet…

সিংঘু সীমান্তে এদিন সকালে মিছিল শুরুর সময়ে প্রায় পাঁচ হাজারেরও বেশি প্রতিবাদী কৃষক জড়ো হয়েছিলেন। সঞ্জয় গান্ধী ট্রান্সপোর্ট নগরের কাছে রিং রোড ধরতে গেলে, তাদের পথ আটকায় পুলিশ। কিষাণ মজদুর সংঘর্ষ কমিটির পক্ষে সতনাম সিং পান্নু জানান, তাঁরা শান্তিপূর্ণ মিছিল করছেন। সেখানে উপস্থিত পুলিশ কর্মীদের তাঁরা তাঁদের উপরওয়ালাদের সঙ্গে কথা বলার জন্য ৪৫ মিনিট সময় দিয়েছেন। এরমধ্য়েই পুলিশদের সঙ্গে বিচ্ছিন্নভাবে সংঘর্ষে জড়ায় কৃষকরা। এরপরি তাদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোঁড়া হয় পুলিশের পক্ষ থেকে। কৃষকরাও পুলিশের প্রতিরোধ ভেঙে এগোতে থাকেন। কয়েকজনকে পুলিশের জল কামানের উপরও উঠে পড়তে দেখা যায়।

Scroll to load tweet…
Scroll to load tweet…

তিকরি সীমান্ত দিয়ে পশ্চিম দিল্লিতে প্রবেশ করা মিছিলটিতেও প্রচুর জনসমাগম দেখা গিয়েছে। সকাল ৯ টায় এখান থেকে মিছিল শুরু করেন বিক্ষোভকারী কৃষকরা। নেতারা মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের শান্ত থাকার নির্দেশ দেন। তাঁরা নির্ধারিত পথ ধরেই মিছিল করবেন বলে জানান। এখানেও সীমান্তে ব্যারিকেড দিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু, মিছিল সেই ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যায়। মুকার্বা চকের কাছে মিছিলকারীদের একটি পুলিশের গাড়ির উপর উঠে পড়তেও দেখা গিয়েছে।

Scroll to load tweet…
Scroll to load tweet…
Scroll to load tweet…
Scroll to load tweet…

পাণ্ডবনগরের কাছে দিল্লি-মীরাট এক্সপ্রেসওয়ের উপরও প্রতিবাদীদের পুলিশের ব্যারাকেড ভেঙে দেওয়ার ছবি দেখা গিয়েছে। একি ছবি দেখা গিয়েছে কার্নাল বাইপাসেও। অন্যদিকে গাজিপুর সীমান্ত থেকে আসা মিছিলটি প্রগতি ময়দান এলাকা অতিক্রম করে মধ্য দিল্লির দিকে এগিয়ে চলেছে। সব মিলিয়ে এক ব্যাতিক্রমী প্রজাতন্ত্র দিবসে কৃষক বিক্ষোভ নিয়ে উত্তাল রাজধানী। রাজপথের কুচকাওয়াজের ট্যাঙ্ক-মিসাইল থেকে সব আলো টেনে নিয়েছে কৃষকদের ট্রাক্টরই।