সংক্ষিপ্ত
ত্রিপুরায় শনিবার মোদী পূর্বতন বাম সরকার নিয়ে একাধিক অভিযোগ করেছিলেন। তারই পাল্টা উত্তর দিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জনসভার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই আসরে নামলেন ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। ত্রিপুরার দুটি জনসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাষণের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন প্রধানমন্ত্রী ভাষণ ছিল মূলত মিথ্যার ওপর ভিত্তি করে। ভারতের নাগরিকদের যে খারাপ সময় চলছে তা তিনি আড়াল করার চেষ্টা করেছেন বলেও অভিযোগ করেন মানিক সরকার।
মানিস সরকার ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরোর সদস্য। তিনি বলেছেন, একজন প্রধানমন্ত্রী মিখ্যার ওপর ভিত্তি করে বিবৃতি দেওয়া ঠিক নয়। তিনি আরও বলেন, জনগণকে বিভ্রান্ত করাও ঠিক নয় বলে মন্তব্য করেন। শুধু বিবৃতি নয়, মানিক সরকার এদিন বেশ কিছু তথ্যপ্রমাণও তুলে ধরেন।
বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সরবরাহ
মানিক সরকার বলেন, তিনি ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন ১৯৯৮ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত। সেই সময় বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনোমোহন সিংয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। তাতে মনমোহন সিং সরকার সায় দেয়। লোকসভা নির্বাচনে ইউপিএ সরকারের পতন হয়। তারপর ২০১৩-১৪ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বেশ কয়েকটি বৈঠকের পর বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। কিন্তু জনসভায় মোদী দাবি করেছিলেন প্রতিবেশী বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু হয়েছে ২০১৮ সালের পর অর্থাৎ ত্রিপুরায় বিজেপির জমানায়। মানিক সরকারে অভিযোগ প্রধানমন্ত্রীর এই দাবি ভিত্তিহীন।
বাম সরকারের বিদ্রোহ দমন
মানিক সরকার আরও বলেন, বামফ্রন্ট সরকারের সময়ই ত্রিপুরার পুরনো কিছু সমস্যা বিদ্রোহ মিটিয়ে নেওয়া হয়েছিল আলোচনার ভিত্তিতে। দেশের মধ্যে প্রথম রাজ্য ত্রিপুরা যেখানে ২০১৫ সালে ২৭ মে প্রত্যাহার করা হয়েছিল সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন বা AFSPA। তিনি আরও বলেন, তিনি মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন একটি বৈঠকে স্বয়ং মোদী তাঁর কাছে জানতে চেয়েছিলেন কী করে ত্রিপুরায় বিদ্রোহ দমন করা হয়েছিল। মানিক সরকার বলেন ত্রিপুরার বামফ্রন্ট সরকারের উদ্যোগ সম্পর্কে একটি বিস্তারিত রিপোর্ট তিনি পাঠিয়েছিলেন মোদীর কাছে।
ত্রিপুরার গণতন্ত্র
জনসভা থেকে মোদী বলেছিলেন ত্রিপুরায় বাম আমলে কোনও গণতন্ত্র ছিল না। এদিন তারও উত্তর দিয়েছেন মানিক সরকার। তিনি বলেন, ত্রিপুরায় যদি গণতন্ত্র না থাকত তাহলে বিজেপি কী করে বাম সরকারকে হারিয়ে রাজ্য দখল করত। পাল্টা মানিকের অভিযোগ বিজেপি এই রাজ্য ক্ষমতা দখলের পরই জঙ্গলরাজ শুরু হয়েছে।
বাম-কংগ্রেস জোট
বাম-কংগ্রেস জোট নিয়ে মোদী একাধিকঅভিযোগ করেছিলেন। বলেছিলেন কেরলে কুস্তি আর ত্রিপুরায় দোস্তি। পাল্টা মানিক সরকার বলেন, জোটের কাছে ধরায়াসী হতে পারে বিজেপি। আর সেই কারণেই ভয় পাচ্ছেন মোদী। তাদের মধ্যে রাজনৈতিক জোট হয়েছে কোনও দলই আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়নি বলেও জানান তিনি। মানিক সরকার বলেন, ২০১৮ সালের পর থেকে এই রাজ্যে সমস্ত নির্বাচনে কারচুপি করেছে বিজেপি। কোথাও ভোট অবাধ আর শান্তিপূর্ণ হয়নি। তিনি আরও অভিযোগ করেন বিজেপি সরকার পুলিশ প্রশাসনকে কাঠের পুতুলে পরিণত করেছে।
আরও পড়ুনঃ
'সন্ত্রাস,মাফিয়া, দুর্নীতির সমার্থক তৃণমূল', জনসভা থেকে শাসকদলকে নিশানা বিজেপি নেতা জেপি নাড্ডার
'কেরলে কুস্তি ত্রিপুরায় দোস্তি', ত্রিপুরায় কংগ্রেস-সিপিএমকে একযোগে আক্রমণের নতুন স্লোগান মোদীর
৪ দিনের ব্যস্ত কর্মসূচি প্রধানমন্ত্রী মোদীর, ১০ হাজারের বেশি পথ অতিক্রম করছেন তিনি