সংক্ষিপ্ত
গত কয়েকদিন ধরে বিশ্ব জুড়ে ভাইরাল ঝাড়খণ্ডের একটি ভিডিও
সেই ভিডিওয় একটি রহস্যময় অবয়বকে দেখা গিয়েছিল
কেউ বলেছিল সেটি ভিনগ্রহী, কেউ বলেছে ভূত ডাইনি
এবার সামনে এল আসল সত্যি, তাও রহস্যময়
গত কয়েকদিন ধরে ঝাড়খণ্ডের একটি ৩০ সেকেন্ডের ভিডিও সোশ্য়াল মিডিয়ায় ঝড় তুলেছে। ভিডিওটিতে এক অদ্ভুত মনুষ্যের মতো অবয়বকে হাঁটতে দেখা যাচ্ছে। ভিডিওটি দেখে কেউ কেউ দাবি করেছেন, ওই অদ্ভুত অবয়বটি একটি এলিয়েন বা ভিনগ্রহী। অন্যগ্রহ থেকে এসেছে। আবার কেউ বলেছেন ভূত! বাকিরা ওই অবয়বটিকে রহস্যময় প্রাণী হিসাবে ব্যখ্যা করেছেন। ভিডিওটি বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমেও প্রকাশিত হয়, এমনকী, আন্তর্জাতিক প্রচারমাধ্যমেও ভিডিওটি জায়গা করে নিয়েছে। সকলেরই প্রশ্ন, ওই অবয়বটি আসলে কীসের?
গত কয়েক দিন ধরে, এই ভিডিও ক্লিপটি ফেসবুক, টুইটারের কিংবা হোয়াটসঅ্যাপের মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ব্যাপকভাবে ছড়িয়েছে। ভিডিওটি যারা শেয়ার করছেন, তারা দাবি করছেন ভিডিওটি তোলা হয়েছে ঝাড়খণ্ডের হাজারিবাগে। কয়েকজন নেটিজেন আবার ওই ভিডিও ক্লিপে একটি লাল আলো জ্বলতে থাকা 'ইউএফও' বা আনআইডেন্টিফায়েড ফ্লাইং অবজেক্ট, অর্থাৎ, ভিনগ্রহীদের মহাকাশযানকে উড়ে যেতেও দেখেছেন। তারা আবার ভিডিওটি সরাসরি মার্কিন মহাকাশ চর্চা কেন্দ্র 'নাসা'কে ট্যাগ করেছিল। তারপরেও যারা ভিডিওটি দেখেননি, তাদের জন্য এখানে ভিডিওটি দেওয়া হল -
এবার দেখা যাক, ওই অবয়বটি আসলে কী বা কীসের? দৃশ্যটি অত্য়ন্ত গা ছমছমে, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। তবে, ভিডিওটির সঙ্গে কোনও অতিপ্রাকৃত বা অতিজাগতিক কোনও কিছুর সম্পর্ক নেই বলে নিশ্চিতভাবে জানা গিয়েছে। তাই বলে, ভিডিওটির পিছনে কোনও রহস্য নেই তা নয়। তবে সেই রহস্য একেবারেই জাগতিক, যার তদন্ত শুরু করেছে ঝাড়খণ্ড পুলিশ। জানা গিযেছে ভিডিওটি তুলেছিলেন দুই যুবক। তাদের একজন, দীপক, সত্যি ঘটনাটা তুলে ধরেছেন স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের কাছে। তিনি সাফ জানিয়েছেন, ভাইরাল হওয়া পোস্টে অনেকেই ভিডিওটি হাজারিবাগে তোলা বলে দাবি করলেও ভিডিওটি আসলে তোলা হয়েছিল খারসওয়ান জেলার সেরাইকেলা এলাকায়। কী ঘটেছিল সেই রাত্রে?
দীপক জানিয়েছেন, ২৭ এপ্রিল, তাঁরা দুই বন্ধু, তাঁদের আরেক বন্ধুর মায়ের শেষকৃত্যে যোগ দিতে চক্রধরপুরে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে রাতে মোটরবাইকে করে সেরাইকেলায় ফিরছিলেন। পথে, ওই দৃশ্য চোখে পড়েছিল তাঁদের। দেখে ভয় পেয়ে ওই অবয়বকে এড়িয়ে জোরে বাইক চালিয়ে এগিয়ে গিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু কীসের অবয়ব সেটি? দীপক জানিয়েছে, যাকে দেখে কেউ ভাবছেন ভিনগ্রহী, কেউ ভাবছেন ভূত, সেই অবয়ব আসলে এক সম্পূর্ণ নগ্ন মহিলার।
ওই মহিলাকে একেবারে কোনও পোশাক ছাড়াই রাস্তায় হাঁটতে দেখে প্রথমে খুবই ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন দীপকরা। ভেবেছিলেন হয়তো কোনও ডাইনি। পরে ওই রাস্তা দিয়ে আসা অন্যান্যদের জিজ্ঞেস করে জানতে পেরেছিলেন তারাও ওই মহিলাকে নগ্ন অবস্থায় হাঁটতে দেখেছে। এরপর আবার বাইক ঘুরিয়ে তারা ওই স্থানে ফিরে আসেন। আর তারপরই ক্যামেরা বন্দি করেছিলেন ওই ভিডিও ক্লিপটি। দীপকের দাবি ভাইরাল হওয়া ভিডিও ক্লিপটি ৩০ সেকেন্ডের হলেও, তাঁর কাছে দেড় মিনিটের পুরো ভিডিওটি রয়েছে।
ভাইরাল ভিডিওয় দেখতে পাওয়া রহস্যময় অবয়বটি কোনও ভিনগ্রহী, ভূত বা ডাইনির নয়, এটা নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে। তাতে অবশ্য কাজ বেড়েছে পুলিশের। ওই মহিলা কেন কোনও কাপড় ছাড়া রাস্তা দিয়ে হাঁটছিলেন, তা এখনও পরিষ্কার নয়। সেরাইকেলা থানার সাব ইন্সপেক্টর মহম্মদ নওশাদ জানিয়েছেন বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।