সংক্ষিপ্ত
- দক্ষিণ ভারতে সক্রিয় রয়েছে আইএস জঙ্গিরা
- কেরল ও কর্ণাটকে তাদের কার্যকলাপ বাড়ছে
- এদেশে সক্রিয় হয়েছে আল কায়দা জঙ্গি গোষ্ঠীও
- রাষ্ট্রসংঘের সাম্প্রতিক রিপোর্টে এমনটাই উঠে এসেছে
দেশে লাগামছাড়া ভাবে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। এর মধ্যেই নতুন এক আশঙ্কার খবার জানাল রাষ্ট্রসংঘ। তাদের সাম্প্রতিক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ভারতে ঘামটি মেরে লুকিয়ে রয়েছে আইএস জঙ্গিরা। বিশেষ করে দক্ষিণ ভারতের ২ রাজ্য কর্ণাটক ও কেরলে ইসলামিট স্টেট জঙ্গিরা ঘাঁটি গেড়েছে বলে সতর্ক করল রাষ্ট্রসংঘ।
রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ভারতীয় উপমহাদেশে সক্রিয় রয়েছে প্রায় ১৫০ থেকে ২০০ আল কায়দা জঙ্গি। এরা ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও মায়ানমারে নাশকতামূলক কার্যকলাপের পরিকল্পনা করেছে বলেও উল্লেখ রয়েছে।
রাষ্ট্রপুঞ্জের অ্যানালিটিক্যাল সাপোর্ট অ্যান্ড স্যাংকশনস মনিটরিং টিমের ২৬ তম রিপোর্ট বলা হয়েছে, ভারতের কেরল ও কর্ণাটকে আইএসআই জঙ্গিরা লুকিয়ে রয়েছে। এই জঙ্গিগোষ্ঠীর বর্তমান পাখির চোখ ভারত ও তার আশপাশের এলাকা। তাই এই দেশ থেকেই নতুন জঙ্গি তৈরি করছে তারা। তবে এদেশে নাশকতার ছক কষতে পিছিয়ে নেই আল কায়দা জঙ্গি গোষ্ঠীও। রিপোর্টে বলছে, তালিবান জঙ্গিদের আড়ালে কাজ করছে আল কায়দা। তারা আফগানিন্তানে বসে ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও মায়ানমারের যুব সম্প্রদায়ের মগজ ধোলাই করছে। তাদেরও লক্ষ্য ভারতের বিভিন্ন অংশে হামলা চালানো।
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, আইএস চাইছে ভারতে নতুন শাখা খুলতে। আর তাই যুব সম্প্রদায়কে টার্গেট করছে তারা। তাদের মধ্যে অনেকেই কেরল ও কর্ণাটকে সক্রিয় রয়েছে। রাষ্ট্রসংঘের রিপোর্ট অনুযায়ী, কেরল ও কর্নাটকে ইসলামিক স্টেটে'র ১৮০-২০০ সদস্য লুকিয়ে রয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, কাশ্মীরে নিরাপত্তাবাহিনীর কড়াকড়ির জেরেই ধীরে ধীরে অন্যত্র আত্মগোপন করছে জঙ্গিরা। অস্তিত্ব প্রমাণে তাই দক্ষিণ ভারতেই হামলা চালাতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হয়েছে।
ইতিপূর্বে কেরল থেকে অনেক যবক-যুবতীর আইএসে যোগ দেওয়ার খবর সামনে এসেছিল। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, কেরল গত কয়েক বছরে প্রায় ১০০ জন আইএসে যোগ দিয়েছে। কাশ্মীরেও অনেক হামলার পিছনে তাদের হাত রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে রাষ্ট্রসংঘের রিপোর্টে। কাশ্মীরে জঙ্গি হানার দাবি করেছিল আইএস। তবে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ তা খারিজ করে দিয়েছিল।
সম্প্রতি একটি বৈঠকেও ভারতীয় সাইবার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সংগঠনগুলি জানিয়েছে, উপমহাদেশ থেকেও জঙ্গি নিয়োগের চেষ্টা চালাচ্ছে আইএস। জেহাদের নামে কমবয়সীদের মগজ ধোলাই করার চেষ্টা করছে তারা। অনলাইনে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালান হচ্ছে। অনলাইনে প্রশিক্ষণের সময় যুবক-যুবতীরা কীভাবে গোয়েন্দাদের চোখে ধুলো দেবে, তাও তাদের শিখিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আর এই বিষয়টাই সাইবার সিকিউরিটির দায়িত্বে থাকা সংগঠনগুলিকে ভাবাচ্ছে। প্রসঙ্গত, আইএস-এর সঙ্গে যুক্ত ‘দ্য সাপোর্টারস সিকিউরিটি’ নামে একটি সাইবার সিকিউরিটি ম্যাগাজিনের মে মাসের সংখ্যায় সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যবহারের সময় কেমন সাবধানতা অবলম্বন করলে গোয়েন্দা সংস্থারগুলির চোখে এড়ানো যাবে, তার বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছিল। ২৪ পৃষ্ঠার ওই ম্যাগাজিন স্মার্টফোন এবং কম্পিউটার ব্যবহারের সময় সতর্কতা অবলম্বনের দিকটিও ছিল।
এই প্রসঙ্গে নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা মনে করিয়ে দিয়েছেন, চলতি বছরেই শ্রীলঙ্কায় হামলা চালিয়েছে আইএস। এবার যে এদেশকে রক্তাক্ত করার দিকে তাদের নজর তা নিয়ে রাজ্য পুলিশগুলিকে সতর্ক করেছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।