সংক্ষিপ্ত

কোটায় বঙ্গসমাজ মকর সংক্রান্তিতে মাটির মগরের পূজা করে। মহিলারা গান গায়, পুরোহিত মন্ত্র পড়েন। সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধির কামনায় এই ঐতিহ্যের পেছনে রয়েছে এক প্রাচীন কাহিনী।

কোটা। ভারত বৈচিত্র্যের দেশ, যেখানে প্রতিটি উৎসব ও ঐতিহ্যের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য রয়েছে। মকর সংক্রান্তি দেশজুড়ে বিভিন্ন উপায়ে পালিত হয়। রাজস্থানের কোটা জেলার বঙ্গসমাজের মানুষের কাছে এই উৎসবের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। এখানে মকর সংক্রান্তির দিন মাটি দিয়ে মগরের আকৃতি তৈরি করে তার পূজা করা হয়। এই ঐতিহ্য প্রাচীনকাল থেকে চলে আসছে এবং সমাজে এর ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব রয়েছে।

মহিলারা গান গেয়ে নদীতে যান

বঙ্গসমাজের মানুষ এই দিন সকাল সকাল নদী বা পুকুরের ধারে জড়ো হয়। সেখানে মাটি দিয়ে মগরের আকৃতি তৈরি করা হয়, যা সাজিয়ে পূজাস্থলে রাখা হয়। ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতিতে মগরের পূজা করা হয়। পূজার সময় মহিলারা মঙ্গলগীত গায় এবং পুরোহিত বিশেষ মন্ত্র জপ করেন। এরপর প্রসাদ বিতরণ করা হয়, যাতে মিষ্টি এবং মৌসুমি ফল থাকে।

মগর পূজা বঙ্গসমাজের বিশেষ ঐতিহ্য

বঙ্গসমাজের মতে, মগর এমন একটি প্রাণী যা জল ও স্থল উভয় স্থানেই বসবাস করতে পারে। এই ক্ষমতা তাদের জীবনে ভারসাম্য এবং সমৃদ্ধির প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করতে অনুপ্রাণিত করে। বিশ্বাস করা হয় যে এই পূজা পরিবার এবং সমাজে সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি নিয়ে আসে।

তন্ত্র-মন্ত্রের সঙ্গে জড়িত সমগ্র বিষয়টি

এই ঐতিহ্যের সাথে জড়িত একটি প্রাচীন কাহিনীও রয়েছে। বলা হয় যে একজন তান্ত্রিক তার স্ত্রীকে তার বিদ্যার প্রদর্শন করতে গিয়ে মগরের রূপ ধারণ করেছিলেন। তান্ত্রিক তার স্ত্রীকে বলেছিলেন যে তার দেওয়া জল ছিটিয়ে দিলে তিনি আবার মানুষ হয়ে যাবেন, কিন্তু ভয়ের কারণে তার স্ত্রী সেই জল ফেলে দেয়। তখন থেকে বঙ্গসমাজে মগর পূজার ঐতিহ্য শুরু হয়। এই পূজা কেবল ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রকাশই নয়, সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করার মাধ্যমও বটে।