সংক্ষিপ্ত
নিরাপত্তাজনিত গুরুতর ত্রুটির কারণে, পঞ্জাব (Punjab) সফর বাতিল করতে হওয়ায় দারুণ ক্ষুব্ধ নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi)। ভাতিন্ডা বিমানবন্দরের (Bhatinda Airport) আধিকারিকদের কী বললেন তিনি দেখুন।
এমনিতে খুবই ঠান্ডা মাথার মানুষ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। দিন কয়েক আগে মেঘালয়ের রাজ্যপাল তাঁকে 'উদ্ধত ও বদরাগী' বলেছেন ঠিকই, তবে প্রকাশ্যে তাঁকে খুব একটা রাগতে দেখা যায়নি। লোকসভায় বিরোধীদের তীব্র আক্রমণ তিনি রসিকতা ভরা বক্তৃতায় উড়িয়ে দেন, মাথা গরম করে চেচামেচি করেন না। কিন্তু, বুধবার নরেন্দ্র মোদীর ক্রোধের সাক্ষী থাকল পঞ্জাবের (Punjab) ভাতিন্ডা বিমানবন্দর (Bhatinda Airport)। বিমানবন্দরের আধিকারিকদের দাবি, নিরাপত্তাজনিত গুরুতর ত্রুটির কারণে, পঞ্জাব সফর বাতিল করতে হওয়ায় দারুণ ক্ষুব্ধ ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সংবাদ সংস্থা এএনআই, সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, পঞ্জাবের মাটি ছাড়ার আগে মোদী তাঁদের বলেন, 'আপনাদের মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দেবেন যে, আমি ভাতিন্ডা বিমানবন্দর পর্যন্ত জীবিত অবস্থায় ফিরতে পেরেছি।'
এদিন, সড়ক পথে তাঁর কনভয় নিয়ে ভাতিন্ডা বিমানবন্দর থেকে ফিরোজপুর (Firozpur) যাচ্ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। একটি ফ্লাইওভারের উপর, কিছু বিক্ষোভকারী তার কনভয়ের পথ আটকায়। ওই ফ্লাইওভারের উপর, প্রায় ২০ মিনিট আটকে থাকে তাঁর কনভয়। এমনকী, মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সং চান্নিকে (CM Charanjit Singh Channi) ফোন করা হলে, তিনি ধরেননি বলে অভিযোগ। এরপর, তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এসপিজি-র (SPG) কমান্ডোরা দ্রুত সফর বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় এবং প্রধানমন্ত্রীকে ফিরিয়ে আনা হয় ভাতিন্ডা বিমানবন্দরে। এই বিষয়ে পঞ্জাব সরকারের (Punjab Govt) কাছে একটি বিশদ প্রতিবেদন তলব করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক (Union Home Ministry)।
উত্তরপ্রদেশ, ত্রিপুরা, গোয়ার সঙ্গে সঙ্গে পঞ্জাবেও ভোট (Punjab Elections 2022) আসছে। ভোটমুখী এই রাজ্যের ফিরোজপুরে, এদিন ৪২,৭৫০ কোটি টাকার প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করার কথা ছিল প্রধানমন্ত্রী মোদীর। সেইসঙ্গে হুসাইনিওয়ালায় জাতীয় শহিদ স্মৃতিসৌধ (National Martyrs Memorial, Hussainiwala) পরিদর্শনের কথাও ছিল। প্রধানমন্ত্রীর সফর বাতিল হওয়ায় খোদ নরেন্দ্র মোদীর পাশাপাশি, বিজেপিও (BJP) দারুণ ক্ষুব্ধ। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয়ের আশঙ্কায়, পঞ্জাবের কংগ্রেস সরকার, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার সঙ্গে আপোসের মতো 'নোংরা কৌশল' প্রয়োগ করছে, এমনটাই অভিযোগ গেরুয়া শিবিরের। বিজেপির জাতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা (JP Nadda), সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চান্নির দিকে আঙুল তুলেছেন।
এদিন, ঘটনার পরপরই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছিল, ভাতিন্ডা থেকে হেলিকপ্টারে হুসাইনিওয়ালায় যাওয়ার কথা ছিল প্রধানমন্ত্রীর। কিন্তু বৃষ্টি এবং দৃশ্যমানতা কম থাকায় তাঁকে অপেক্ষা করতে হয়েছিল। প্রায় ২০ মিনিট পরেও আবহাওয়ার উন্নতি না হওয়ায়, সড়কপথে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পঞ্জাব পুলিশের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার পরই প্রধানমন্ত্রীর কনভয় সড়কপথে রওনা হয়েছিল। কিন্তু, গন্তব্যস্থল থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে, প্রধানমন্ত্রীর কনভয় একটি ফ্লাইওভারে পৌঁছতেই দেখা গিয়েছিল, কয়েকজন বিক্ষোভকারী রাস্তা অবরোধ করেছে। প্রধানমন্ত্রীর সময়সূচী এবং ভ্রমণের পরিকল্পনাগুলি পঞ্জাব সরকারকে আগেই জানিয়েছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। একটি আকস্মিক পরিকল্পনাও প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছিল। তার পরিপ্রেক্ষিতে, সড়কপথে অতিরিক্ত নিরাপত্তা মোতায়েন করা হয়নি। এই অবস্থায়, রাজ্য সরকারের কাছ থেকে শুধু একটি বিশদ প্রতিবেদনই তলব করা হয়নি, এই ত্রুটির জন্য কে বা কারা দায়ী, তা তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বলেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।