সংক্ষিপ্ত
মাউন্ট এভারেস্টের মাপের বজ্রগর্ভ মেঘ জমেছিল, সর্বোচ্চ উচ্চতা ১৮ কিলোমিটার। কীকরে মুম্বইয়ের মতো উপকুলীয় শহরে এতটা আবহাওয়ার অস্থীতিশীলতা দেখা দিল তাই নিয়ে বভ্রান্ত আবহাওয়াবিদরা।
গত কয়েকদিনের অবিরাম মুষলধারে বৃষ্টিপাতে বিপর্যস্ত মহারাষ্ট্র। রাজ্যের প্রায় ৫টি জেলা বন্যা কবলিত। ভূমিধসে, বন্যায় সরকারী পরিসংখ্যান অনুসারে অন্তত ৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। উপকূলীয় জেলা রায়গড়েই ভূমিধসে বহু মানুষ নিহত হয়েছেন, বহু মানুষ এখনও নিখোঁজ। তবে বৃষ্টিপাত এখনও বন্ধ হয়নি। কিন্তু কেন হঠাৎ সেখানে আচমকা এমন ভারী বৃষ্টিপাত হল - কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে চমকে গিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। জানা গিয়েছে ১৮ কিলোমিটার লম্বা মেঘ জমেছিল রায়গড় জেলার উপরে!
যুক্তরাজ্যের রিডিং বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া বিভাগের আবহাওয়াবিদ তথা পিএইচডি শিক্ষার্থী অক্ষয় দেওরস জানিয়েছেন, এই নিম্নচাপের ফলে প্রায় মাউন্ট এভারেস্টের মাপের একটি বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি হয়েছিল রায়গড় জেলার উপরে। তারপর সেটি ধীরে ধীরে পশ্চিম উপকূল ধরে উত্তরে ধাবিত হয়ে মুম্বই এবং তারপরে দক্ষিণ গুজরাতের দিকে চলে যায়। গোটা পথে মেঘটির শক্তি বিশেষ কমেনি বলে দাবি করেছেন তিনি। টুইট করে ওই আবহাওয়াবিদ জানিয়েছেন ওই বিশালাকার মেঘটির সর্বোচ্চ উচ্চতা ছিল প্রায় ১৮ কিমি বা প্রায় ৬০,০০০ ফুট।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এর এক প্রতিবেদন অনুযায়ী আইআইটিএম-পুনের বিশিষ্ট বিজ্ঞানী সুনীল পওয়ার জানিয়েছেন 'এই ধরনের বজ্রগর্ভ মেঘ অবশ্যই অত্যন্ত অস্বাভাবিক। মুম্বইয়ের মতো উপকূলীয় শহরে, এমনকী বর্ষার ঠিক আগে, মে-জুন মাসেও খুব একটা বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি হয় না। আর খুব তীব্র বজ্রগর্ভ মেঘ সহ বৃষ্টিপাতের ক্ষেত্রেও মেঘের উচ্চতা ১৬-১৭ কিমি পর্যন্ত পৌঁছচ্ছে এমনটা সচরাচর দেখা যায় না। এই ক্ষেত্রে মেঘের উচ্চতা অন্থন্ত বেশি ছিল এবং আবহাওয়ায় তীব্র অস্থিরতার জন্যই এটা হয়েছে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানী সুনীল পওয়ার। কীভাবে এই ধরনের অস্থিতিশীলতা তৈরি হল, তা নিয়ে বিজ্ঞানীরা বিভ্রান্ত বলে জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন - ৪০ বছরে রেকর্ড বৃষ্টি, রায়গড়ে মৃত বেড়ে ৪৪ - ভয়াবহ বন্যায় বেহাল মহারাষ্ট্র, দেখুন
আরও পড়ুন - প্রবল বৃষ্টিতে ভাসছে তেলেঙ্গানা, হায়দরাবাদে জারি কমলা সতর্কতা
গত ১৫ জুলাই তারিখেই ভারতের আবহাওয়া দফতর থেকে উত্তর-মধ্য অন্ধ্রপ্রদেশ এবং দক্ষিণ ওড়িশা উপকূলের পশ্চিমে বঙ্গোপসাগরের উপর একটি নিম্নচাপ ঘনিয়ে ওঠার বিষয়ে সতর্ক করেছিল। এর ফলে বর্ষার বেগ বাড়বে বলে জানানো হয়েছিল। তবে, এই ধরণের বিপর্যয়ের কোনও পূর্বাভাস দেওয়া হয়নি। আবহাওয়া বিদদরা বলছেন, এই ধরনের আবহাওয়াগত উন্নয়ন এত 'দ্রুত, জটিল ও স্থানীয়' স্তরে তৈরি হয় যে ভবিষ্যদ্বাণী করাও কঠিন।