সংক্ষিপ্ত

একশো বছর আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে

এখনও সেই বৌদ্ধ সন্ন্যাসী অবিকৃত দেহে হাসছেন

এমন দাবি করা একটি ছবিই ভাইরাল হয়েছে

সত্যিই কি এমনটা ঘটেছে

একশো বছর আগে মৃত এক ব্যক্তি না কি এখনও হাসছেন। এমনই একটি ছবি সম্প্রতি সোশ্য়াল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। দাবি করা হচ্ছে ছবিটি এক বৌদ্ধ সন্ন্যাসীর। প্রায় ১০০ বছর আগে ওই সন্ন্যাসীর মৃত্যুর পর তাঁর দেহ মমি হিসাবে সংরক্ষণ করা হয়েছিল। ১০০ বছর পরও তাঁর দেহটি একেবারে অবিকৃত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের একাংশের মতে তিনি এখনও বেঁচে আছেন এবং গভীর ধ্যানে মগ্ন রয়েছেন। দেহটি মঙ্গোলিয়ার উপকূলে উলানবাটার এলাকায় পাওয়া গিয়েছে।

ছবিটি ইন্টারনেটে আলোড়ন তৈরি করেছে। অনেকেই কৌতূহলী হয়ে জানতে চেয়েছেন , ছবিটি এবং তার সঙ্গে করা দাবিটি কি আদৌ সত্যি? এশিয়ানেট নিউজ বাংলার পক্ষ থেকে ছবিটি নিয়ে তথ্য অনুসন্ধান করে জানা গিয়েছে, ছবিটি এবং তার সঙ্গে করা দাবিটি বেশ বিভ্রান্তিকর। ভাইরাল ছবিটি নিয়ে গুগল সার্চ ইঞ্জিনে বিপরীত তথ্যানুসন্ধান করে জানা গিয়েছে ছবিটি শ্রদ্ধেয় বৌদ্ধ সন্ন্যাসী লুয়াং ফোর পিয়ান-এর। ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে ৯২ বছর বয়সে ব্যাংককের এক হাসপাতালে তিনি দেহত্যাগ করেন। কম্বোডিয়ায় জন্মগ্রহণ করা ওই সন্ন্যাসী তাঁর জীবনের বেশিরভাগ সময় তাইল্যান্ডের লোপবুরি প্রদেশে আধ্যাত্মিক বৌদ্ধ গুরু হিসাবে কাটিয়েছিলেন।

একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনেই সন্ন্যাসী লুয়াং ফোর পিয়ান-এর এই ছবিটি ব্যবহার করা হয়েছিল। প্রতিবেদন অনুসারে, তাঁর মৃত্যুর দুই মাস পরে তাঁর ভক্তরা বৌদ্ধ ঐতিহ্য মেনে তাঁর দেহটি কফিন থেকে বের করে এনে নতুন পোশাক পরিয়েছিলেন। সেই সময়ই ছবিটি তোলা হয়েছিল। ব্রিটিশ নিউজ সাইট মেট্রোর প্রতিবেদনে অনুসারে দুই মাসেও তাঁর দেহের বিন্দুমাত্র ক্ষয় হয়নি। দেহটি দেখে মনে হয়েছিল, মাত্র দিন দেড়েক আগে তাঁর মৃত্যু হয়েছিল।

কাজেই ছবিটি কোনও শতাব্দী প্রাচীন সন্ন্যাসীর দেহের মমির নয়। তাহলে এই সন্ন্যাসীর মমির কাহিনি কোথা থেকে এল? গুগল সার্চ ইঞ্জিনে খোঁজ করে দেখা গিয়েছে ২০১৫ সালে মঙ্গোলিয়ায় এক দুই শতাব্দী পুরানো মমিকৃত বৌদ্ধ সন্ন্যাসীর দেহ আবিষ্কৃত হয়েছিল। ওই সন্ন্যাসীর দেহ মিলেছিল পদ্মাসনে বসা অবস্থায়। ফরেনসিক পরীক্ষায় জানা যায় দেহটি কোনও লামা বা তিব্বতি বৌদ্ধ ধর্মগুরুর। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা দাবি করেছিলেন তিনি সম্ভবত গভীর ধ্যানে আছেন। তবে সেই লামার ছবি এবং ভাইরাল ছবিটি এক নয়।

কাজেই সম্পূর্ণ অন্য এক ছবির সঙ্গে বিভ্রান্তিকর দাবি জুড়ে দেওয়া হয়েছে। কাজেই ছবিটি এবং সঙ্গে দাবিটি ঠিক নয়।