সংক্ষিপ্ত
৩০ বছরের জার্মান তরুণী।
গত ৬ বছর ধরে প্রেম করছেন একটি বিমানের সঙ্গে।
সামনের মার্চ মাসে বিয়ে করতে চান।
ঠিক কীরকম তাঁদের সম্পর্ক?
প্রেমাস্পদকে বিয়ে অর্থাৎ সারা জীবনের সঙ্গী করা সব মানুষেরই স্বপ্ন থাকে। কিন্তু সেই প্রেমিক যদি হয় একটি আস্ত বোয়িং বিমান? ঠিক এরকমটাই করতে চলেছেন এক ৩০ বছর বয়সী জার্মান যুবতী। তাঁর দাবি গত ছয় বছর ধরে তিনি একটি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ বিমান-এর সঙ্গে প্রেম করছেন। আদর করে বিমানটিকে তিনি 'শাটজ' বলে ডাকেন। বাংলা ভাষায় যার অর্থ দাঁড়ায় প্রিয়তম। এবার তিনি সেই সম্পর্ককে বিয়েতে পরিণতি দিতে চাইছেন।
এই বিস্ময়কর জার্মান যুবতীর নাম মিশেল কোবকে। তিনি জার্মানির বার্লিনের বাসিন্দা। পেশায় সেলসগার্ল মিশেল-এর বরাবরই বিমানের যন্ত্রাংশ সংগ্রহ করার শখ ছিল। তাঁর স্বপ্ন একদিন এয়ারক্র্যাফ্ট মেকানিক হওয়া। এভাবেই বছর ছয়েক আগে তাঁর সঙ্গে দেখা হয় 'শাটজ'-এর। মিশেল জানিয়েছেন, এই বিমানটির আগে বা পরে আর কারোর প্রতি তিনি প্রেমের টান অনুভব করেননি। এয়ারোপ্লেনটির বড় ডানা, ছোট ডানা এবং থ্রাস্টার সবই তাঁর খুব ভালো লাগার। অদ্ভূত মনে হলেও তিনি এই ব্যতিক্রমী সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে তাঁকে অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে।
গত পাঁচ বছর ধরে প্রেমিকের সঙ্গে সম্পর্ক বলতে শুধুমাত্র বিমানবন্দরের কাচের জানলা দিয়ে প্রেমাস্পদের দিকে ব্যাকুল নয়নে তাকিয়ে থাকা। গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে তিনি প্রথমবার বিমানটির ডানার উপর দাঁড়িয়ে তাকে চুম্বন করার সুযোগ পেয়েছিলেন। তবে, এখন তিনি এই ৪০ টন ওজনের জেট-এর সঙ্গে সম্পর্ককে অন্য স্তরে নিয়ে যেতে চাইছেন। বহুদিন দূর থেকে দেখা, প্রেম চলেছে। এবার তিনি বোয়িং বিমানটির সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে চাইছেন। তাঁর ইচ্ছে চলতি বছরের মার্চ মাসেই, আমস্টারডামে 'শাটজ'-এর সঙ্গে বিয়েটা সেরে ফেলা।
বোয়িং ৭৩৭-৮০০ বিমানটির সঙ্গে প্রথম চুম্বন ও তাকে প্রথম ছুঁয়ে দেখার মুহূর্তটিই এখনও পর্যন্ত তাঁর জীবনের সবচেয়ে সুন্দর মুহূর্ত বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে আর পাঁচটা খ্রিস্টান বিয়েতে যেমন পাত্রী সাদা গাউন পরেন, মিশেল তাঁদের বিয়েতে সেরকমতা পরতে চান না বলে জানিয়েছেন। তাঁর ইচ্ছে, বিয়েতে কালো প্যান্ট এবং কালো ব্লেজারের 'স্মার্ট' পোশাক পরা।
ঠিক কেমন তাঁদের এই বিমান-মানবী সম্পর্ক? মিশেলের মতে আর পাঁচটা সাধারণ সম্পর্কের মতোই। তিনি জানিয়েছেন প্রেমিকের সঙ্গে এখনও পর্যন্ত তাঁর মাত্র দু'বার সাক্ষাত হলেও, তাঁর বাড়িতে বিমানটির বিভিন্ন যন্ত্রাংশ এবং বোয়িং ৭৩৭-৮০০ বিমানের তার ছোট আকারের মডেলে ভর্তি। সেগুলির সঙ্গে তিনি অত্যন্ত হাল্কা মেজাজে সন্ধেগুলো কাটান। তারপর একসঙ্গে বিছানায় গিয়ে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়েন।
তবে মিশেলের এই বিয়েতে একটা সমস্যা রয়েছে। এই জার্মান যুবতীর বন্ধুবান্ধব তাঁদের এই 'সম্পর্ক' ভালোভাবে নিলেও, মিশেলের পরিবার 'শাটজ'-এর সঙ্গে দেখা করতেও আগ্রহী নন।
মিশেলের এই প্রেম অর্থাৎ বিমানের সঙ্গে সম্পর্ক ব্যতিক্রমী হলেও, জড় বস্তুর মানুষের প্রেম বা যৌন আকর্ষণের ঘটনা এর আগেও বহু দেখা গিয়েছে। এইধরণের সম্পর্ককে 'অবজেক্ট সেক্সুয়ালিটি' বা 'অবজেক্টফিলিয়া' বলা হয়। এর আগে বাড়ির বেড়ার সঙ্গে, বিনোদন পার্কের বিভিন্ন রাইডের সঙ্গে, টেডি বিয়ার-এর সঙ্গে সম্পর্ক হয়েছে কোনও মানুষের, এমনটা দেখা গিয়েছে।