সংক্ষিপ্ত

চলতি সপ্তাহে আরও দুটি নতুন মামলা দায়ের হয়েছে ড্যানির বিরুদ্ধে। রাষ্ট্রদ্রোহিতা ও সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ আনা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। যার সর্বোচ্চ শাস্তি হল যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। এই দুটি মামলার শুনানি হবে ১৬ নভেম্বর।  

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে সেনা অভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মায়ানমার (Myanmar)। নিহত হন বহু মানুষ। অনেককে আবার গ্রেফতারও করা হয়। তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগই এখনও পর্যন্ত জেল খাটছেন। একইভাবে মে মাসে ইয়াঙ্গুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে (Yangon international airport) আটক করা হয়েছিল আমেরিকার সাংবাদিক ড্যানি ফেন্সটারকে (US journalist Danny Fenster)। অভিবাসন আইন লঙ্ঘন, বেআইনি মেলামেশা ও সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে ভিন্ন মত পোষণ করার দোষে শুক্রবার তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে মায়ানমারের সামরিক আদালত। তাঁকে ১১ বছরের কারাদণ্ড (11 years in jail) দেওয়া হয়েছে। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে একথা জানিয়েছেন ড্যানির আইনজীবী থান জাও অং। 

তবে এখানেই শেষ নয় চলতি সপ্তাহে আরও দুটি নতুন মামলা দায়ের হয়েছে ড্যানির বিরুদ্ধে। রাষ্ট্রদ্রোহিতা ও সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ আনা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। যার সর্বোচ্চ শাস্তি হল যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। এই দুটি মামলার শুনানি হবে ১৬ নভেম্বর।  

কে এই ড্যানি ফেন্সটার? 

৩৭ বছর বয়সি সাংবাদিক ড্যানি ফেন্সটার ‘ফ্রন্টিয়ার মায়ানমার’ অনলাইন ভিত্তিক সংবাদমাধ্যমের সম্পাদক ছিলেন। গত মে মাসে দেশ ছাড়ার সময় ইয়াঙ্গুন বিমানবন্দর তাঁকে আটক করে জান্তা সরকার। তখন থেকেই জেলে ছিলেন তিনি। তবে ‘ফ্রন্টিয়ার মায়ানমার’-এর আগে 'মায়ানমার নাও'-এ কাজ করতেন ড্যানি। এটি একটি স্বাধীন সংবাদমাধ্যম। মায়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের সমালোচনা করেছিল এই সংবাদমাধ্যম।

আরও পড়ুন- অচেনা পাকিস্তান,মন্দিরের উদ্বোধন সুপ্রিমকোর্টের প্রধান বিচারপতির

ফ্রন্টিয়ার মায়ানমারের (Frontier Myanmar) প্রধান সম্পাদক টমাস কিন বলেন, "নিষিদ্ধ মিডিয়া আউটলেট মায়ানমার নাও-এর জন্য কাজ করার ফলেই মূলত ড্যানির উপর অভিযোগ আনা হয়। ২০২০ সালের জুলাই মাসে মায়ানমার নাও (Myanmar Now) থেকে পদত্যাগ করেন তিনি। এরপর অগাস্টে তিনি ফ্রন্টিয়ারে যোগ দেন। অর্থাৎ, গ্রেফতারের আগে পর্যন্ত নয় মাসেরও বেশি সময় ধরে ফ্রন্টিয়ারের সঙ্গে কাজ করছিলেন তিনি। তাই এই অভিযোগগুলোর জন্য ড্যানিকে দোষী সাব্যস্ত করার কোনও ভিত্তি নেই।" 

আরও পড়ুন- সাতসকালে বড় সাফল্য ভারতীয় সেনার, খতম হিজবুলের শীর্ষ কম্যান্ডার

এদিকে ড্যানির মুক্তির দাবিতে মায়ানমারের উপর চাপ সৃষ্টি করেছে আমেরিকা। কিন্তু, সেই দাবিকে গুরুত্ব না দিয়ে ড্যানিকে হেফাজতে রাখার প্রয়োজন রয়েছে বলে পাল্টা দাবি করেছে মায়ানমারের সামরিক মুখপাত্র। তবে এই রায় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এখনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। এদিকে ক্রাইসিস গ্রুপ মায়ানমারের উপদেষ্টা রিচার্ড হরসি এই শাস্তিকে ‘আপত্তিকর’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, "এই ঘটনা শুধুমাত্র আন্তর্জাতিক সাংবাদিকদেরই নয়... বরং মায়ানমারের সাংবাদিকদের কাছেও একটি বার্তা পাঠায় যে বাস্তব পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিবেদন করলে তাদের অনেক বছর জেলে বন্দি থাকতে হতে পারে। যে কোনও সময় মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়ে তাদের জেলে পাঠানো হতে পারে।"

আরও পড়ুন- টানা ৮দিন অপরিবর্তিত জ্বালানির দাম, কোথায় কত দামে মিলছে পেট্রোল-ডিজেল

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে মায়ানমারের সাবেক ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লিগ অফ ডেমোক্রেসির কাছ থেকে ক্ষমতা দখল করে নেয় ওই দেশের সামরিক নেতারা। রাজনৈতিক বন্দীদের সহায়তা সংস্থার (AAPP) মতে, সেই তখন থেকে সেনার গুলিতে প্রায় ১ হাজার ১৭৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। ৭ হাজার ৩৫৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়। পাশাপাশি এই ঘটনার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন করার জন্য প্রায় ৮০ জন স্থানীয় সাংবাদিককে গ্রেফতার করা হয়। তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগই এখনও বন্দি রয়েছেন। আর সেই তালিকায় রয়েছেন মার্কিন সাংবাদিক ড্যানি ফেন্সটারও।  

YouTube video player