সংক্ষিপ্ত
ইতিহাসে পাওয়া সেরা ডাইনোসরের ভ্রূণগুলির মধ্যে একটি এটি বলেও দাবি করেছেন বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ফিওন ওয়াইসুম মা। তিনি আইসায়েন্স জার্নামের একটি গবেষণাপত্রের লেখক।
ইতিহাসের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার মত আবিষ্কার হল হল চিনে (China)। সেখানে উদ্ধার হয়েছে ৬৬ মিলিয়ন বা ৬ কোটি বছর আগের একটি ডাউনোসেরের ভ্রূন (Dinosaur Embryo)। আর সেটি নিখুঁতভাবে সংরক্ষিত করা ছিল। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ভ্রূণটি থেকে বাচ্চা বার ওয়ার প্রস্তুতিও শুরু হয়েছিল। এই নিখুঁতভাবে সংরক্ষিত জীবাশ্মটি পাওয়া গেছে দক্ষিণ চিনের গাঞ্জোতে। সেখানে একটি দাঁতবিহীন থেরোপড ডাইনোসর বা ওভিরাপ্টোরোসরের নিয়ে গবেষণার সময়ই এটি উদ্ধার হয়েছে। বিজ্ঞানীরা এটিকে ইংলিয়াং নামে অভিহিত করেছেন।
ইতিহাসে পাওয়া সেরা ডাইনোসরের ভ্রূণগুলির মধ্যে একটি এটি বলেও দাবি করেছেন বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ফিওন ওয়াইসুম মা। তিনি আইসায়েন্স জার্নামের একটি গবেষণাপত্রের লেখক। গবেষক ও সহকর্মীরা ছোট্ট এই ভ্রূণটিকে দেখতে পেয়েছেন। ভ্রূণটির একদম কোঁচকানো অবস্থায় ছিল। পেটের কাছে ছিল ভ্রূণের মাথার অংশ। আর পিঠ ছিল পুরো কোঁকড়ানো অবস্থায়। বিজ্ঞানীদের কথা আগে কোনও ডাইনোসরের এমন ভ্রূণ দেখা যায়নি। এটির ভ্রূণ অনেকটাই ছিল আধুনিক পাখির মত।
পাখিদের আচরণ কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। এটিকে টাকিং বলে। শাবক অবস্থায় তারা ডান পাখার নিচে মাথা ঠেকানোর প্রস্তুতি নেয়। যাতে ঠোঁট গিয়ে ডিমের খোসা ফাঠানোর নয় মাথা স্থির রাখতে পারে। যে ভ্রূণগুলিকে টেনে আনতে ব্যার্থ হয় তাদের মৃত্যুর সম্ভাবনা বেশি থাকে। ডাইসোনের এই ভ্রূণটি নির্দেশ করে যে আধুনিক পাখিদের মধ্যে যে ধরনের আচরণ দেখা যায় তা ডাইনোসরদের পূর্বপুরুষদের মধ্যে ছিল। তেমনই দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। টাকিংয়ের বিকল্পটি আধুনিক কুমিরের মধ্যেও দেখা যায়। এরাও বুকের ওপর মাথা দিয়ে ডিম ফাটানোর চেষ্টা করে।
অভিরাপ্টোরোসরস, এএটি ছিল এক প্রকার পালক যুক্ত ডাইনোসর, যেগুলি ক্রিটোসিয়াস যুগের শেষ দিকে এসিয়া ও উত্তর আমেরিকায় দেখা যেত। এগুলির ঠোঁটের আকৃতি ও খাদ্য পরিবর্তনশীল ছিল। বিজ্ঞানীদের মতে এগুলিকে দেখতে অনেকটা আধুনিক টার্কি পাখির মত। এগুলি আট মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। শিশু ইংলিয়াং মাথা থেকে লেজ পর্যন্ত দৈর্ঘ্য প্রায় ২৭ সেন্টিমিটার। এটি স্টোন নেচার হিস্ট্রি মিউজিয়ামে ১৭ সেন্টিমিটার সম্বা একটি ডিমের মধ্যে রয়েছে।
গবেষকরা বিশ্বাস করেন যে প্রাণীটি ৭২-৬৬ মিলিয়ন বছর পুরনো। মনে করা হচ্ছে এটি আকস্মিক কাদা ধসের মধ্যে পড়ে তলিয়ে গিয়েছিল। তারপর সেখানেই সংরক্ষিত অবস্থায় ছিল। বিজ্ঞানীরা মনে করেন এগুলি সচারচর তৃণভোজী প্রাণী।
সূত্রের খবর এই জীবাশ্মটি আবিষ্কার হয়েছে ২০০০ সালে। কিন্তু তারপর থেকে এটি নিয়ে সেইভাবে কোনও গবেষণা হয়নি। এটি রাখা ছিল একটি গুদামঘরে। সম্প্রতী মিউজিয়ামের নতুন ভবন নির্মাণের আগে পুরনো জীবাশ্মগুলিকে বার করা হয়েছিল। তারপর এই জীবাশ্মটি চোখে পড়ে যায় বিজ্ঞানীদের। শুরু হয় গবেষণা। বিজ্ঞানীদের কথায় ভ্রূণ অবস্থায় পাওয়া ডাইনোসরদের জীবাণুগুলির মধ্য এটি সবথেকে ভালো অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে।