সংক্ষিপ্ত

শ্রীলঙ্কা ১৯৪৮ সালে ব্রিটেন থেকে তার স্বাধীনতার পর থেকে তার সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক মন্দার সাক্ষী হচ্ছে। ঘাটতি রয়েছে বিদ্যুৎ, খাদ্য, জ্বালানী এবং ওষুধে বাজারে।

দেশ জুড়ে তীব্র অর্থনৈতিক সংকট। গলি থেকে রাজপথে বিক্ষোভ প্রতিবাদ। এরই মাঝে বড় ঘোষণা দেশের প্রধানমন্ত্রীর। দেশের এই পরিস্থিতির নৈতিক দায় কাঁধে নিয়ে পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাক্ষে। একথা সত্যি যে স্বাধীনতার পর থেকে এতবড় বিপর্যয় আগে দেখেনি দ্বীপরাষ্ট্র। 

শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি এবং তাঁর ছোট ভাই গোটবায়া রাজাপাকসে একটি বিশেষ বৈঠকে তাকে দেশে চলমান রাজনৈতিক সংকটের সমাধান হিসাবে ক্ষমতা থেকে সরে যেতে অনুরোধ করেন। এর কয়েকদিন পরই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন মাহিন্দা। দ্বীপরাষ্ট্রটি অর্থনৈতিক অস্থিরতা কাটিয়ে উঠতে একটি অন্তর্বর্তী প্রশাসন গঠনের কথা ভাবনা চিন্তা করা হচ্ছে। সেই পদক্ষেপে গতি দিতেই সরে দাঁড়ালেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বলে খবর। অবশ্য রাজাপাক্ষে সরকারের ওপর পদত্যাগ করার প্রভূত চাপ তৈরি হয়েছিল। 

এপ্রিল মাসের শুরুতেই শ্রীলঙ্কার পুরো মন্ত্রিসভা একসঙ্গে পদত্যাগ করে। তেসরা মে রবিবার রাষ্ট্রপতি গোটাবায়া রাজাপক্ষে ও তাঁর বড় ভাই প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে ছাড়া মন্ত্রিসভার ২৬ জন মন্ত্রী একযোগে পদত্যাগ করে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সোমবারই আসরে নামেন রাষ্ট্রপতি গোটাবায়া রাজাপক্ষে। দ্বীপরাষ্ট্রের পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য তিনি বিরোধী দলগুলির কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন। 

উল্লেখ্য, শ্রীলঙ্কা ১৯৪৮ সালে ব্রিটেন থেকে তার স্বাধীনতার পর থেকে তার সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক মন্দার সাক্ষী হচ্ছে। ঘাটতি রয়েছে বিদ্যুৎ, খাদ্য, জ্বালানী এবং ওষুধে বাজারে। এদিকে, শ্রীলঙ্কা সরকার দেশব্যাপী কারফিউ জারি করেছে। সোমবার রাজাপাক্ষে পদত্যাগ করার পর শ্রীলঙ্কার স্বাস্থ্যমন্ত্রী চান্না জয়াসুমানাও পদত্যাগ করেন। তাঁর পদত্যাগ পত্র রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে শ্রীলঙ্কার প্রবল আর্থিক সংকট চলছে। দেশে ওষুধ ও দুধের মত প্রয়োজনীয় জিনিসগুলির তীব্র অভাব দেখা দিয়েছে। চাল-ডালের মত নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস  নেই কেন্দ্রীয় ভাঁড়াড়ে। গ্যাসের বদলে মানুষ কেরোসিন দিয়ে রান্না করেছে। অনেকের বাড়িতে খাবার জিনিস নেই। পরীক্ষা বন্ধ হয়ে গেছে কাগজের অভাবে। যদিও পাশে দাঁড়িয়ে ভারত জ্বালানিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস পাঠিয়েছে। কিন্তু তা পর্যাপ্ত নয়। শ্রীলঙ্কায় জারি করা হয়েছে কার্ফু। মানুষদের বাড়ির বাইরে বার হতে নিষেধ করা হয়েছে। 

আর্থিক সংকটে ভুগছে দ্বীপরাষ্ট্রটি। খাবার, ওষুধ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির তীব্র হাহাকার দেখা দিয়েছে। দেশটির ঋণের পরিমাণ ১ বিলিয়ন ডলার। কলম্বোতে প্রবল বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে দোকানপাট, হোটেল, রেস্তোরা। অন্যদিকে অর্থনৈতিক সংকটের পাশাপাশি দেশটিতে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক সংকটও। সরকার পক্ষের মন্ত্রী ও সাংসদরা পদত্যাগ করায় সংখ্যালঘু হয়ে গেছে রাষ্ট্রপতি বিরোধীরা রাষ্ট্রপতি গোটাবায়া রাজাপক্ষের পদত্যাগের দাবিতে সরব হয়েছে।  

আরও পড়ুন- একের পর এক জঙ্গি নিকেশ কাশ্মীরে, অনন্তনাগের পর কুলগামে খতম দুই লস্কর সদস্য

আরও পড়ুন- মাদার টেরেসাকে নিয়ে নয়া বিতর্ক? এক অন্ধকার পথের সন্ধান দিচ্ছে নতুন ডকুমেন্টারি

আরও পড়ুন- অশনি থেকে আমফান-এক এক নামের ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত ওডিশা-বাংলা, কীভাবে নাম রাখা হয় ঝড়ের?