সংক্ষিপ্ত

আসলে বিশ্বে এমন এক শহর রয়েছে যেখানকার বাসিন্দা হল সময়। মানুষ, পশু-পাখির মতো সময়কেও এই শহরের এক বাসিন্দা হিসেবেই ধরা হয়। আর সেই কারণ জানলে আপনিও অবাক হয়ে যাবেন। 
 

সময়ের (Value of Time) গুরুত্ব অনেক বেশি। কথায় বলে, একবার সময় গেলে আর তা কখনও ফিরে আসে না। আর সেই সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়েই চলতে হয় প্রতিটি মানুষকে (Human Being)। কখনও সময় আমাদের নিয়ম মেনে চলে না। কিন্তু, ভাবুন তো যদি কখনও আপনার মতোই সময়ও আপনার শহরের (Town) এক বাসিন্দা হয়ে ওঠে! তাহলে মন্দ হয় না বলুন! আসলে বিশ্বে এমন এক শহর রয়েছে যেখানকার বাসিন্দা হল সময়। মানুষ, পশু-পাখির মতো সময়কেও এই শহরের এক বাসিন্দা হিসেবেই ধরা হয়। আর সেই কারণ জানলে আপনিও অবাক হয়ে যাবেন। 

এই শহর অবস্থিত জার্মানিতে (Germany)। শহরটির নাম গ্লাসহ্যুটে (GLASHUTTE)। ড্রেসডেন থেকে এই শহর ২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এখানকার স্লোগান হল ‘এই শহর সময়ের ঘরবাড়ি!’ কারণ সেখানে জার্মানির সবচেয়ে বেশি ঘড়ি কারখানা রয়েছে। ১৮৪৫ সালে এই শহরে প্রথম মেকানিক্যাল ঘড়ি তৈরির কারখানা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ১৮৪৫ সালে স্যাক্সোনি সরকারের কাছ থেকে পাওয়া ঋণ দিয়ে গ্লাসহ্যুটেতে প্রথম ঘড়ির কারখানা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ফার্দিনান্দ আডল্ফ (Mr. Ahrendt) লাঙ্গে। বর্তমানে এই শহরে ৯টি ঘড়ি কারখানা রয়েছে। ঘড়ি নির্মাণে ১৭৫ বছর আগের প্রযুক্তি ধরে রেখেছে তারা। বর্তমানে সেই ঘড়ি কারখানাগুলিতে কাজ করে প্রায় ১ হাজার ৭০০ জন। 

আরও পড়ুন- এবার 'কাঁচা বাদাম' জ্বরে কাবু ইউরোপও, ভুবনের গানের তালে নাচ ফ্রান্সের রাস্তায়

আরও পড়ুন- সুরাটের রাস্তায় ভ্রাম্যমান কিচেনে মিলছে গ্রিলড স্মোকি স্যান্ডউইচ, আদর করে ডাকল স্যান্ডউইচ ওয়ালে বুলেট রাজা

গ্লাসহ্যুটে স্টেশনের সঙ্গে 'নমোস' (Nomos) ঘড়ি কারখানার (Watch Factory) একটি ভবন আছে। ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত এই কোম্পানি এখন জার্মানির সবচেয়ে বড় ঘড়ি নির্মাণকারী সংস্থা। এত বছরের পুরনো কোম্পানি হওয়া সত্ত্বেও এখনও পর্যন্ত এই কোম্পানির জনপ্রিয়তা এক চুলও কমেনি। তার ইউএসপি রয়েছে ঘড়ি তৈরির মধ্যেই। আসলে আধুনিকতা ও ঐতিহ্যের মেলবন্ধনে কাজ হয় এই কোম্পানিতে। কোম্পানির ডিজাইন ও ব্র্যান্ড প্রধান ইয়োডিথ বরোভস্কির কথায়, ‘১৭৫ বছর আগে ঘড়ি নির্মাতারা যেভাবে কাজ করতেন ,এখনও আমরা তার অনেক কিছু ব্যবহার করি। এখনও অনেক কাজ যন্ত্রের সাহায্য ছাড়া হাতে করা হয়। কিন্তু যে জায়গায় হাতের চেয়ে উচ্চপ্রযুক্তি ব্যবহার করলে মান ভালো হবে বলে মনে হয়, সেখানে আমরা তাই করি। যেমন এমন কিছু যন্ত্রাংশ আছে, যেগুলি চুলের চেয়েও পাতলা। অর্থাৎ মাইক্রোমিলিমিটার পর্যায়ের যন্ত্রাংশ। সেগুলি নিয়ে কাজের জন্য আমরা আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করি। এভাবে আধুনিকতা আর ঐতিহ্যের মিলে এখানে কাজ হয়।" ঘড়ির মানের সঙ্গে কোনও অংশেই আপোস করেন না তাঁরা। সেই কারণে আজও একইভাবে জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে পেরেছে এই কোম্পানি। 

আরও পড়ুন- কাশ্মীরকে প্যালেস্টাইনের সঙ্গে তুলনা রাশিয়ান তথ্যচিত্রে, প্রতিবেদন খারিজ করল রাশিয়ান দূতাবাস

নমোসের ক্রনোমেট্রি বিভাগে খুব মনোযোগ দিয়ে কাজ করতে হয় কর্মীদের। বাউহাউস ম্যুভমেন্ট থেকে ঘড়ির নক্সার অনুপ্রেরণা পেয়েছেন এই কোম্পানির ডিজাইনাররা। দেশের বাইরেও নমোসের কয়েকটি অফিস আছে। ৫২ দেশে ঘড়ি রপ্তানি করে এই সংস্থা। আর সেই ভাবেই এই শহরের মানুষ ও পশু-পাখির মতোই একজন বাসিন্দা হয়ে উঠেছে 'সময়'!