সংক্ষিপ্ত
হেনরি কিসিঞ্জার মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিস্কনের পররাষ্ট্র মন্ত্রী হিসেবে কাজ করেছিলেন। সেই সময়ই বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল ভারত।
প্রায়ত আমেরিকার প্রাক্তন বিদেশ সচিব হেনরি কিসিঞ্জার। সম্প্রতি ১০০ বছরে পা দিয়েছিলেন তিনি। প্রবীণ কূটনীতিবিদ হেনরি কিসিঞ্জার প্রবল খ্যাতি পেয়েছিলেন বিদেশ সচিব হিসেবে। কিন্তু খ্যাতির সঙ্গে বিতর্ক ছিল তাঁর সঙ্গী। ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে তার প্রত্যক্ষ না হলেও পরোক্ষ ভূমিকা ছিল। সমালোচকদের কথায় যুদ্ধের জন্য পাকিস্তানকে রীতিমত উস্কে দিয়েছিলেন। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গেও বৈঠক করেছিলেন।
হেনরি কিসিঞ্জার মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিস্কনের পররাষ্ট্র মন্ত্রী হিসেবে কাজ করেছিলেন। সেই সময়ই বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল ভারত। প্রতিপক্ষ পাকিস্তান। সেই সময়ই ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে কিসিঞ্জার বৈঠক করেছিলেন। তারপর তিনি টেলিফোনে কথা বলেন নিক্সনের সঙ্গে। সেই পুরনো টোপ ফাঁস হয়েছিল। তাতে কিসিঞ্জার ইন্দিরা গান্ধী সম্পর্কে বিরুপ মনোভাব প্রকাশ করেন। তিনি ইন্দারাকে 'ডাইনি বুড়ি' বলে কটাক্ষ করে সম্বোধন করেছিলেন। পাশাপাশি ভারতীয়দেরকেও জারজ বলে কটাক্ষ করেছিল। এই টেপগুলিতে ভারতীয় মহিলাদের রীতিমত অসম্মান করা হয়েছিল। লিঙ্গবিদ্ধেশী মন্তব্যও করা হয়েছে। যদিও পরবর্তীকালে কিসিঞ্জার তাঁর মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়েছিলেন। জানিয়েছিলেন ইতিন ইন্দিরা গান্ধীকে সম্মান করেন।
নিক্সন ও জেরাল্ড ফোর্ডের আমলেই তিনি কূটনীতির শীর্ষে ছিলেন। বিদেশ সচিব হিসেবে তিনি ১৯৭৯ সালে ইজরায়েল ও প্যালেস্টাইনের মধ্যে হওয়া ইয়ম কংপুরেরযুদ্ধ থামাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন। ভিয়েতনাম যুদ্ধের পর প্যারিসের শান্তি চুক্তিতে তাঁর ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। সোভিয়েত ইউনিয়নে দ্বন্দ্বের পরিবেশ বজায় রাখা, চিলিতে স্বৈরাচারি শাসকদের মদত দেওয়ার মত ঘটনায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে।
তবে সবকিছু ছাপিয়ে গিয়েছিল ১৯৭১ সালের ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধে তাঁর হস্তক্ষেপ। সেইসময় ভারতের সঙ্গে ওয়াশিংটনের দূরত্ব বহুগুণ বেড়ে গিয়েছিল। সেই সময় পাকিস্তানের পাশে খোলাখুলি ভাবে দাঁড়িয়েছিল আমেরিকা। এতে কিসিঞ্জারের ভূমিকা ছিল সবথেকে বেশি। সেই সময় তাঁর উগ্র ভারত বিরোধিতা নিয়েও চর্চা শুরু হয়েছিল।
১৯২৩ সালে জার্মানিতে জন্ম কিসিঞ্জারের। ১৯৩৮ সালে নাৎসি শাসনের কারণে তাঁর পরিবারে আমেরিকা চলে আসে। সেখানেয়ই পড়াশুনা আর বড়ো হওয়া। ১৯৪৩ সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন কিসিঞ্জার। পরবর্তীকালে গোয়েন্দা হিসেবেও কাজ করেছিলেন। হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্কে ডক্টরেট রয়েছে তাঁর। ১৯৬৯ আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে প্রথম খ্যাতি পান। তারপরই তিনি বিদেশ সচিবের দায়িত্বও পালন করেন। ১৯৭৩ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার পান কিসিঞ্জার।